প্রতিবেদন : যাদবপুরের (Jadavpur) মেন হস্টেলে ছাত্র-মৃত্যুর ঘটনার পুনর্নির্মাণ করল পুলিশ। শুক্রবার দুপুরে ধৃত সপ্তক কামিল্যাকে সঙ্গে নিয়ে তদন্তকারী অফিসাররা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলে যান। সেখানে সেই রাতের ঘটনার পুনর্নির্মাণ করেন তদন্তকারীরা। বাকি ধৃতদের নিয়েও আলাদা আলাদা ভাবে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হবে। এই ঘটনায় এদিন আরও তিনজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। তাঁরা হলেন, রসায়ন বিভাগের প্রাক্তনী শেখ নাসিম আখতার, গণিত বিভাগের প্রাক্তনী হিমাংশু কর্মকার ও কমপিউটার সায়েন্সের চতুর্থ বর্ষের পড়ুয়া সত্যব্রত রায়। এঁদের নিয়ে ছাত্র-মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতারের সংখ্যা দাঁড়াল ১২। আরও কয়েকজনকে চলছে জিজ্ঞাসাবাদ। উঠে আসছে বিস্ফোরক তথ্য। এই ১২ জনই নয়, আরও অনেকেই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত বলেই মনে করা হচ্ছে। শুক্রবারও অচলাবস্থা জারি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। এরই মধ্যে শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলে গিয়ে যাদবপুর-কাণ্ডের পুনর্নির্মাণ করলেন তদন্তকারীরা। এদিন দুপুরে ধৃত সপ্তক কামিল্যাকে সঙ্গে নিয়ে হস্টেলে পৌঁছে যান তদন্তকারীরা। হস্টেলের যে ব্লকে ঘটনা ঘটেছিল সেখানে যান তাঁরা। সপ্তককে প্রথমে ৬৮ নম্বর ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর তাঁরা যান ১০৪ নম্বর ঘরে। দুটো ঘরেই ঠিক কী কী ঘটনা ঘটেছিল তা সপ্তকের কাছে জানতে চান তদন্তকারীরা। এরপর তাঁরা আসেন তিনতলার করিডরে। পড়ে যাওয়ার আগে যেখানে ছুটোছুটি করছিলেন মৃত ছাত্র। সপ্তক বিস্তারিত ভাবে তাঁদের সেই রাতের ঘটনার বর্ণনা দেন। এবার ধাপে ধাপে বাকি ধৃতদেরও নিয়ে এসে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হবে। তারপর সকলের বয়ান মিলিয়ে দেখবেন তদন্তকারীরা।পুলিশি তদন্তের কেন্দ্রে এখন হস্টেলের ১০৪ নম্বর ঘর৷ সেদিন রাত ১১টা থেকে ১১টা ৪৫ মিনিটের মধ্যে ওই ঘরে এমন কিছু ঘটেছিল যার জেরেই ভয়ঙ্কর পরিণতি হয়েছিল ওই ছাত্রের। এ-ছাড়াও পুলিশের স্ক্যানারে রয়েছে ৬৮ নম্বর ঘরও৷ ওই দুটি ঘর থেকেই এমন কিছু তথ্য পুলিশের হাতে এসেছে যাতে ঘটনাক্রম বুঝতে এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করতে অনেকটাই সুবিধা হয়েছে তদন্তকারীদের৷জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন রাত ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে ওই ছাত্রকে ৬৮ নম্বর রুম থেকে চারতলার ১০৪ নম্বর রুমে ‘ইন্ট্রো’ দেওয়ার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ধৃত সৌরভ চৌধুরীই ওই ছাত্রকে চা খাওয়ানোর পর ওই ঘরে নিয়ে যান। ওই ঘরে তখন ধৃত আর এক ছাত্র মনোতোষ ঘোষ ও প্রাক্তন এবং বর্তমান ছাত্র মিলে অন্তত আরও ২০ জন উপস্থিত ছিলেন৷ তাঁদের মধ্যেই ছিলেন ধৃত সপ্তক কামিল্যা, সুমন নস্কর, অসিত সর্দার, দীপশেখর দত্ত, মহম্মদ আসিফ আনসারি, অঙ্কন সর্দার এবং মহম্মদ আরিফরা। ধৃত ৯ জন ছাড়াও সেখানে থাকা আরও ৭-৮ জনের নাম সামনে এসেছে। কিন্তু, তাঁরা এখনও ধরা না পড়ায় সেই সব নাম আপাতত সামনে আনতে চাইছে না পুলিশ। এঁদের অনেকে ভিনরাজ্যে গা ঢাকা দিয়েছে বলেই অনুমান পুলিশের। যাদবপুরের ঘটনা অত্যন্ত লজ্জাজনক বলে মন্তব্য করেছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। এদিন এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, এই জাতীয় কাজকর্ম বন্ধ করতে কড়া আইন আনা দরকার। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উচিত, কড়া আইন চালু করা। বিশ্ববিদ্যালয় (Jadavpur) পড়াশোনা করার জায়গা। এ-সব অবশ্যই কড়া হাতে বন্ধ করতে হবে।
আরও পড়ুন- প্রধানমন্ত্রী আপনিই দায়ী, মেয়াদ শেষের চিঠিতে বরাক উপত্যকা নিয়ে তোপ সুস্মিতার