প্রতিবেদন: চালুনি ছুঁচের দোষ ধরে! নিজেরা দুর্নীতির শিরোমণি, অথচ বিরোধীদের সম্পর্কে কুৎসা করে নজর ঘোরানোর চেষ্টা। প্রথমে ক্যাগ রিপোর্ট এবং তারপর কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স রিপোর্টে বেআব্রু মোদি সরকারের চালিয়াতি। ঢালাও দুর্নীতির পাঁকে ডুবে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার, তা ফাঁস করল দুই কেন্দ্রীয় সংস্থাই। এর আগে কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল বলেছিল, একাধিক কেন্দ্রীয় প্রকল্পে দুর্নীতির পরিমাণ সাড়ে সাত লক্ষ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন-বেনজির কাণ্ড! পাঁজি দেখে অপরাধ মোকাবিলার নির্দেশ, যোগীরাজ্যে গেরুয়াকরণের কুৎসিত নজির
আর এবার কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স কমিশনের রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়েছে অমিত শাহের হাতে থাকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে। যারা কথায় কথায় রাজনৈতিক স্বার্থে ইডি-সিবিআইয়ের অপব্যবহার করে বিরোধীদের বদনাম করে, তারা নিজেরাই যে দুর্নীতির মহাসমুদ্রে ডুবে রয়েছে তা উঠে আসছে এই সরকারি রিপোর্টগুলিতেই। এবার কোথায় মুখ লুকোবেন নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহরা?
আরও পড়ুন-পোস্টিং মামলায় সুপ্রিম স্থগিতাদেশ
মোদি জমানাতেই সাড়ে ৭ লক্ষ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে ক্যাগ। এবার প্রকাশ্যে এল, কর্মীদের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযোগের নিরিখে একেবারে শীর্ষস্থানে অমিত শাহের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। আর এই বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ্যে এনেছে খোদ কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স কমিশনের বার্ষিক রিপোর্ট। সেখানে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের সব মন্ত্রক মিলিয়ে মোট ১,১৫,২০৩টি দুর্নীতির অভিযোগ জমা পড়েছে। আর এই অভিযোগ মন্ত্রকের কর্মী ও আধিকারিদের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে শীর্ষে শাহের হাতে থাকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স কমিশন স্বশাসিত সংস্থা, যারা মূলত কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ সংস্থাগুলির পরিকল্পনা, প্রয়োগ কিংবা সংস্কারের বিষয়গুলির উপর কড়া নজর রাখে।
আরও পড়ুন-কলেজ গেটে বাউল গানে র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে শপথ
সেই ভিজিল্যান্স কমিশনের পরিসংখ্যানেই দাবি করা হয়েছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পর সবচেয়ে বেশি দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে রেল এবং রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্মীদের বিরুদ্ধে। মাত্র এক বছরেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্মীদের দুর্নীতি সংক্রান্ত ৪৬,৬৪৩টি অভিযোগ এসেছে। সেখানে রেল এবং ব্যাঙ্ক পেয়েছে যথাক্রমে ১০,৫৮০ এবং ৮,১২৯টি অভিযোগ। ভিজিল্যান্স রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই মুখ পুড়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের। এরপর কেন্দ্রের এক শীর্ষ আধিকারিক জানান, কমিশনের তরফে মুখ্য ভিজিল্যান্স আধিকারিককে তিনমাসের মধ্যে অভিযোগগুলির সারবত্তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। সম্প্রতি সংসদের বাদল অধিবেশনে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সাড়ে ৭ লক্ষ কোটি টাকার দুর্নীতির রিপোর্ট জমা দিয়েছে ক্যাগ।
আরও পড়ুন-যাদবপুরের বাম-অতিবাম সমর্থকদের নৃশংসতার শিকার, মৃত পড়ুয়ার বাড়িতে টিএমসিপি নেতৃত্ব
বিরোধীদের তরফে সেই রিপোর্টের নথি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে দ্বারকা এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ, হাইওয়ে প্রকল্পের বরাত দেওয়া থেকে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের আওতায় টাকা মঞ্জুর, খরচ ও অন্যান্য গরমিলের একাধিক অভিযোগ তোলা হয়েছে। মোদি সরকারের ভারতমালা পরিযোজনা প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে দ্বারকা এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণে প্রয়োজনের চেয়ে ১৪ গুণ বেশি টাকা খরচ হয়েছে বলে উঠে এসেছে ক্যাগ রিপোর্টে। সব মিলিয়ে মোট দুর্নীতির পরিমাণ সাড়ে ৭ লক্ষ কোটি টাকা।