মানস ভট্টাচার্য: মরশুমের শুরুতেই দু’সপ্তাহের ব্যবধানে কলকাতা ডার্বি হচ্ছে, অনেকদিন এই দৃশ্য আমরা দেখিনি। ডুরান্ড কাপের ফাইনালে (Durand Cup Final) ১৯ বছর পর বড় ম্যাচ। টিকিট নিয়ে দারুণ উন্মাদনা তৈরি হয়েছে। এটাই স্বাভাবিক। মরশুমের প্রথম ডার্বিতে আমরা এগিয়ে রেখেছিলাম মোহনবাগানকে। কিন্তু এবার তা করা যাবে না। বরং ইস্টবেঙ্গল রবিবারের ডুরান্ড ফাইনালের আগে মানসিকভাবে ভাল জায়গায় থাকবে। প্রথম ডার্বি জিতে থাকায় ফাইনালে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাস নিয়ে তারা নামবে। তার উপর ইস্টবেঙ্গল টুর্নামেন্টে এখনও অপরাজিত। সেমিফাইনালে দু’গোলে পিছিয়ে থেকেও দুরন্ত প্রত্যাবর্তন ঘটিয়ে ম্যাচ জিতে ফাইনাল খেলা নিশ্চিত করেছে। তাই ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে ফাইনাল সহজ হবে না মোহনবাগানের। তবে ডার্বি সবসময় পঞ্চাশ-পঞ্চাশ হয়। রবিবারের ডুরান্ড ফাইনালও তার ব্যতিক্রম নয়।
গত চার বছরের মধ্যে এই ইস্টবেঙ্গল সেরা টিম। বিশেষ করে ওদের বিদেশিদের মান এবার খুব ভাল। বোরহা, জেভিয়ার সিভেরিও, সাউল ক্রেসপো, রক্ষণে জর্ডন এলসে খুব ভাল ফুটবল খেলছে। মোহনবাগানও শক্তিশালী দল। ওরা অনেক খরচ করেছে জেসন কামিন্স, আর্মান্দো সাদিকুর মতো বিদেশিদের সই করিয়ে। সাদিকুরা গোলও করছে। প্রি-সিজন টুর্নামেন্ট। কোনও দলই এখনও পুরোপুরি তৈরি নয়। সাদুকু-কামিন্সরা পুরো ফিট না হলেও নিয়মিত গোল করছে। এটাই প্লাস পয়েন্ট মোহনবাগানের। তবু মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল দু’দলেই ভাল মানের বিদেশি থাকায় আমি মনে করি, ডার্বিতে তারাই পার্থক্য গড়ে দেবে।
আরও পড়ুন- ডার্বির টিকিটের চাহিদা তুঙ্গে, বণ্টনে অব্যবস্থাও
হ্যাঁ, স্বদেশি ফুটবলারও ভাল রয়েছে দু’দলে। তবু বিদেশি ফুটবলারই ডুরান্ড ফাইনালে (Durand Cup Final) নায়ক হতে পারে। এটা ঠিক প্রথম ডার্বিতে নন্দকুমার অসাধারণ একটি গোল করে ইস্টবেঙ্গলকে জিতিয়েছিল। নন্দ খুব ভাল ফুটবলার। পজিটিভ স্ট্রাইকার না হলেও গোলটা ভাল চেনে। মোহনবাগানেও মনবীর সিং, লিস্টন কোলাসো, সাহাল আব্দুল সামাদের মতো ফুটবলার রয়েছে। তারাও গোল করতে পারে। এমনকী আমরা দেখেছি, ডিফেন্স থেকে উঠে এসে গোল করেছেন আনোয়ার আলিও। তাই ভারতীয় ফুটবলাররাও তৈরি ডার্বিতে নায়ক হওয়ার জন্য।
ডার্বিতে দুই স্প্যানিশ কোচেরও দ্বৈরথ দেখবে যুবভারতী। মোহনবাগান কোচ জুয়ান ফেরান্দোর সঙ্গে ইস্টবেঙ্গল কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাতের মগজাস্ত্রের লড়াই। কুয়াদ্রাতের ম্যাচ রিডিং, পরিবর্তনগুলো খুব ভাল। অসাধারণ মোটিভেটর এই স্প্যানিশ কোচ। ওঁর জন্য ডার্বিতে লড়াইয়ে থাকবে ইস্টবেঙ্গল। তবে একটাই চিন্তা, রেফারিং ভাল হচ্ছে না। আশা করি, একটা উপভোগ্য ডুরান্ড ফাইনাল দেখব আমরা।