প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার স্পাই সিরিজ় ‘সিটাডেল’-এর কথা মনে আছে? গোটা বিশ্বকে সব রকমের বিপদের হাত থেকে বাঁচাতে যেখানে এসে জড়ো হয় বিভিন্ন দেশের সেরা গুপ্তচরেরা? আবার ‘মিশন : ইমপসিবল— ডেড রেকনিং পার্ট ওয়ান’ ছবিতে যেখানে এক ‘অদৃশ্য’ শত্রুর মোকাবিলা করে ইথান হান্ট (টম ক্রুজ়)। মাত্রাতিরিক্ত ক্ষমতার বশে কতটা ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, তার ঝলক এই ছবিতে দেখেছেন দর্শক। সেই ‘মিশন : ইমপসিবল’, এবং ‘সিটাডেল’— এই দুইয়ের সুন্দর মিক্সআপ হল ব্রিটিশ পরিচালক টম হার্পারের ছবি ‘হার্ট অফ স্টোন’। ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন গ্যাল গ্যাডোট, জেমি ডর্নান ও আলিয়া ভাট। ছবিটি ভারতীয় দর্শকদের খুবই কাছের, তাঁদের কাছে এর একটা অন্য গুরুত্ব রয়েছে। কারণ, বলিউডের অভিনেত্রী আলিয়া ভাট (Alia Bhatt) অভিনয় করেছেন এই ছবিতে। হার্ট অফ স্টোনের মাধ্যমেই হলিউডে হাতেখড়ি হয়েছে আলিয়ার যা গোটা ভারত তথা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির কাছে গর্বের বিষয়।
‘হার্ট অফ স্টোন’-এর গল্পে এমআই ৬-এর টেকনিক্যাল এজেন্ট হিসাবে কাজ করে র্যা চেল স্টোন (গ্যাল গ্যা়ডোট)। তার দলের অন্য তিন সহকর্মীদের মধ্যেই এক জন পার্কার (জেমি ডর্নান)। এক অস্ত্র ব্যবসায়ী মালভেনিকে ধরার উদ্দেশ্যে আল্পসের এক ক্যাসিনোয় গিয়ে হাজির হয় চার সদস্যের ওই এমআই ৬ দল। স্টোনের আসল পরিচয় হল আন্ডারকভার এজেন্ট। ঝকঝকে রেচেল স্পাই এজেন্সি ‘চার্টার’-এর এজেন্ট। চার্টারের চারটি ভাগ। ‘হার্ট’, ‘ক্লাব’, ‘স্পেড’ ও ‘ডায়মন্ড’। তাসের এই চারটি প্রতীকের নামেই বিভক্ত গোটা সংস্থা। র্যা চেল স্টোন ‘হার্ট’-এর অন্যতম সদস্য। চার্টারের সব কাজকর্ম পরিচালিত হয় একটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে, যার নাম ‘হার্ট’। ‘হার্ট অফ স্টোন’-এর ‘হার্ট’ বিশ্বের যে কোনও সিস্টেম হ্যাক করতে সমর্থ। এই প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়েই নিজেদের মিশন সম্পন্ন করে চার্টারের এজেন্টরা। ‘হার্ট’-এর এই প্রযুক্তির দখল নেয় সদ্য ২২-এর সুন্দরী কেয়া ধাওয়ান ও তার সহযোগীরা। আর শেষমেশ ভিলেনদের হাত থেকে সেই ‘হার্ট’ উদ্ধার করে ওয়ান্ডার ওম্যান র্যারচেল স্টোন। এই কেয়ার চরিত্রেই অভিনয় করেছেন আলিয়া ভাট। গোটা ছবিতে সব থেকে উজ্জ্বল তিনিই। তবে তাঁর ইংরেজি উচ্চারণের খামতিকে বাদ দিলে প্রথম হলিউডি ছবিতে তিনি যথেষ্ট সাবলীল। মিষ্টি হাসির পিছনে যে ভয়ঙ্করতা থাকতে পারে তা খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন আলিয়া (Alia Bhatt)। নেগেটিভ চরিত্রেও তিনি ফাটাফাটি সেটা বুঝিয়ে দিয়েছেন। বন্দুক হাতে তাঁর সংলাপে মুগ্ধ ভক্তকুল।
থ্রিলার ঘরানার ছবি হলেও ‘হার্ট অফ স্টোন’-এ থ্রিল সেই অর্থে নেই বললেই চলে। বরং গল্পটা অনেকটাই প্রেডিক্টেবল। রয়েছে ঘটনার ঘনঘটা, প্রতারণার কাহিনি। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এই ছবির খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশ। মুখ্যচরিত্রে গাল এককথায় অনবদ্য। লন্ডন, আইসল্যান্ড, ইতালি এবং পর্তুগালে হয়েছে ছবিটির শ্যুটিং।
আরও পড়ুন-বাংলায় নিশ্চিন্তে লগ্নি করুন: মুখ্যমন্ত্রী
উত্তর ভারতে শ্যুটিং করতে গিয়ে হঠাৎ খুন হয় নায়িকা নন্দিনী চট্টোপাধ্যায়। কে করল সেই খুন? তার মৃত্যুর তদন্ত করতেই এগোবে গল্পের কাহিনি, উঠে আসবে নানান চাঞ্চল্যকর তথ্য। খুনের চেনা ছকেই তৈরি ‘প্ল্যাটফর্ম এইট’-এর ওয়েব সিরিজ ‘দ্য নন্দিনী মার্ডার কেস’-এর গল্প। নামেই রয়েছে রহস্য, থ্রিলারের ঘনঘটা। মার্ডার মিস্ট্রি মানেই টানটান উত্তেজনা। সেই উত্তেজনার নিরসন করতে দেখতে হবে পরিচালক অভিনন্দন দত্তের এই ওয়েব সিরিজটি।
যাঁর খুনের গল্প সেই নন্দিনীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিনেত্রী ঈশানী সেনগুপ্ত। পরিচালক সমরের পরিচালনায় উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি গ্রামে চলছে ছবির আউটডোর শ্যুটিং। সেই ছবির নায়িকা নন্দিনী চট্টোপাধ্যায় এবং নায়ক রোহিত আর সহ-অভিনেতা আবির। শ্যুটিংয়ের সময় নন্দিনীর সঙ্গে গিয়েছিল তার স্বামী কাঞ্চন এবং সাংবাদিক বন্ধু পলি। এই সময় হঠাৎ ঘটে যায় অঘটন। শ্যুটিং চলাকালীনই নায়িকা নন্দিনী খুন হল। তৎক্ষণাৎ তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। শ্যুটিংয়ের মাঝে ঘটে যাওয়া ভয়ঙ্কর ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে ওয়েব সিরিজের চিত্রনাট্য। পরিচালক সমর থেকে শুরু করে আবির, নন্দিনীর স্বামী কাঞ্চন, পলি সকলকে আটক করা হয়। আকস্মিক খুনের ঘটনায় সন্দেহের তীর প্রত্যেকের দিকেই। পুলিশি তদন্তের পরতে পরতে রয়েছে থ্রিলারের স্বাদ। তদন্ত চলাকালীন উঠে আসে নন্দিনীর উত্থানের কাহিনি। কখনও সম্পর্কের টানাপোড়েন তো কখনও রুপোলি দুনিয়ার গ্ল্যামারের পিছনে লুকিয়ে থাকা অন্ধকার দিক যেখানে প্রবেশাধিকার ছিল না কারও। উঠে আসে একের পর এক হাড়-হিম-করা সত্য।
রহস্যের বেড়াজাল পেরিয়ে এই খুনের কিনারা করার দায়িত্বে এসপি রঞ্জন। গল্পের বুনোট বেশ মজবুত এবং জমাটি। যাঁরা থ্রিলার ভালবাসেন এই ওয়েব সিরিজটি তাঁদের নিঃসন্দেহেই খুব ভাল লাগবে।
ওয়েব সিরিজে অভিনয় করেছেন সত্যম ভট্টাচার্য, দেবরাজ ভট্টাচার্য। মুখ্য চরিত্রেই রয়েছেন সত্যম আর দেবরাজ। ‘বল্লভপুরের রূপকথা’ ছবিতে এই জুটির অভিনয় পছন্দ করেছিলেন দর্শক। এ ছাড়া রয়েছেন লোকনাথ দে, শ্রেয়া ভট্টাচার্য, ঈশানী সেনগুপ্ত ,আরিউন ঘোষ, অনিন্দ্য সরকার। এই সিরিজে সিনেমার পরিচালক সমরের চরিত্রে অভিনন্দন দত্তকে দেখা যাবে। এই ওয়েব সিরিজের গানের কথা লিখেছেন অভিনন্দন দত্ত, শুভদীপ। একটি গান আছে যার সুর দিয়েছেন এবং গান গেয়েছেন দেবরাজ ভট্টাচার্য। ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর এবং গানের অ্যারেঞ্জমেন্ট করেছেন আনিস আহমেদ।