প্রতিবেদন : কেন্দ্রের নতুন দণ্ড সংহিতা বিল নিয়ে আলোচনার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া শুরু হয়েছে। বুধবার শেষ হয়েছে সংসদীয় কমিটির তিনদিনের আলোচনা। সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে ফের একদফা আলোচনা হবে। এই বিল নিয়ে একদিকে যেমন অসন্তুষ্ট সংসদীয় কমিটির বিরোধীপক্ষের সদস্যরা, অন্যদিকে তেমনই ঘুরপথে এই আইনকে আরও কঠোর করা হয়েছে বলে বিরোধী সাংসদদের অভিযোগ।
আরও পড়ুন-জোড়া এলিয়েনের মৃতদেহ-বিতর্ক ভিনগ্রহী নিয়ে কী বলল নাসা?
তবে তার মধ্যেই বিলে থাকা বিধিগুলি নিয়ে চর্চা চলছে। সেখানে পুলিশের ক্ষমতাবৃদ্ধি নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠেছে, তেমনই প্রশ্ন তোলা হয়েছে বিলে নানা ধারার ব্যাখ্যা নিয়ে। আইনজীবীরা জানিয়েছেন, ঔপনিবেশিকতা থেকে মুক্তি দিতেই এই আইন সংশোধন করা হচ্ছে বলে কেন্দ্র দাবি করলেও আদতে ঔপনিবেশিক আমলের থেকেও কঠোর আইন আনা হচ্ছে বলে মত আইনজীবী মহলের।
আরও পড়ুন-শনিবার সকালে লাইনচ্যুত কল্যাণী সীমান্ত-মাঝেরহাট লোকাল
রাষ্ট্রদ্রোহ আইন তুলে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। যদিও তা করা হয়নি। বরং আগের আইনের থেকে আরও কঠোর করার প্রস্তাব রয়েছে এবং সীমাও বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে দাবি আইনজীবী মহলের। নাগরিক সুরক্ষা সংহিতায় যদিও খুবই সাধারণ মানের পরিবর্তন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। সাক্ষ্য বিলটিতেও কোনও পরিবর্তন করা হয়নি বলে মত আইনজ্ঞ মহলের। তবে যে বিধি নিয়ে সবচেয়ে বেশি উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, সেটি হল পুলিশের ক্ষমতা বৃদ্ধি। নাগরিকদের দিক থেকে পুলিশের ক্ষমতা অনেক বেশি বৃদ্ধি করা হয়েছে। নতুন আইনে বলা হয়েছে, কোনও ব্যক্তিকে গ্রেফতার করতে প্রয়োজনে যে কোনও পদক্ষেপ করতে পারে পুলিশ। অর্থাৎ, আইনজীবী মহলের দাবি, এক্ষেত্রে আফস্পা আইনের সমকক্ষ করে তোলা হয়েছে পুলিশের ক্ষমতাকে। এই বিধি সাধারণ নাগরিকের জন্য অত্যন্ত মারাত্মক বলে দাবি ওয়াকিবহাল মহলের। একইসঙ্গে সরকারের বিরোধী হলেই এই আইনের অপব্যবহার হতে পারে বলে আশঙ্কা। সম্পত্তি নষ্টের ক্ষেত্রেও কঠোর আইন প্রয়োগের বিরোধিতা করা হয়েছে আইনজীবী মহলের তরফে।
আরও পড়ুন-ইডির ভারপ্রাপ্ত অধিকর্তা হিসেবে রাহুল নবীনকে নিয়োগ করল কেন্দ্র
আইনজীবী এবং অপরাধ আইন নিয়ে গবেষণা ও সওয়াল করা প্রবীণ আইনজীবীরা জানিয়েছেন, বর্তমানে কার্যকর থাকা ভারতীয় দণ্ডবিধির সঙ্গে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৮৩ শতাংশ মিল রয়েছে। আইনজীবীদের বক্তব্য, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার সঙ্গে অপরাধ বিচার আইনের মিল রয়েছে ৮২ শতাংশ। একইভাবে ভারতীয় সাক্ষ্য বিলের সঙ্গে সাক্ষ্য আইনের ৮২ শতাংশ মিল রয়েছে। বাকি যে বিষয়গুলিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে সেগুলি আরও কঠোর করে তোলা হয়েছে। এই বিষয়টি তুলে ধরে ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, শুধুমাত্র আইনের নামের পরিবর্তন এবং বেশ কিছু ক্ষেত্রে আরও কঠোর করা ছাড়া নতুন বিল গুণগতভাবে উন্নত নয়।