দেবাশিস দত্ত, বার্সেলোনা (সচিব, মোহনবাগান): এ-বছর আইএসএল ফাইনালের আগে আমাদের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে বলেছিলেন, জিতে ট্রফিটা আমাকে দেখিও। স্বাভাবিকভাবেই আইএলএস ফাইনাল জিতে আমি দিদিকে ফোন করে বলি, আমরা জিতেছি। কাল ট্রফি নিয়ে আপনার কাছে যাচ্ছি। তখন উনি বলেন, আমি তোমাদের ক্লাবে যাচ্ছি। পরদিন দুপুর ১২টায় উনি এলেন। ট্রফি দেখলেন। সেদিন একটা কথা দিদি বলেছিলেন, দেবাশিস বাংলার ফুটবলকে আমি বিশ্বমঞ্চে দেখতে চাই। বিশ্বমানের করে তুলতে চাই। সেদিনই বুঝেছিলাম দিদির ভিশন কত বড়! উনি আমাদের স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছেন, ফুটবল শুধু ভালবাসা, আনন্দ নয়, তার থেকে বাণিজ্যও হতে পারে। এখানে এসে বুঝলাম ফুটবলকে কেন্দ্র করে বিরাট বাণিজ্য করা যায়। আমরা প্রথমে রিয়েল মাদ্রিদ ক্লাব (Bercelona- Real madrid), স্টেডিয়াম ঘুরে দেখেছি। সোমবার ঘুরে দেখলাম বার্সেলোনা (Bercelona- Real madrid) স্টেডিয়াম-সহ সব কিছু। দেখলাম ওদের ফুটবল পণ্যের বাজারজাত করার কী দুর্ধর্ষ ভাবনা ও পদ্ধতি। মুখ্যমন্ত্রী লা-লিগার সঙ্গে বৈঠকেও আমাদের রেখেছিলেন। আজ সব দেখেশুনে বুঝতে পারছি কেন দিদি ফুটবলের দেশে আমাদের নিয়ে এসেছেন। একথা অস্বীকার করার উপায় নেই, আমরা এদের থেকে অনেক পিছিয়ে আছি। কিন্তু এখনও যদি শুরু করতে পারি তবে আমরা ফুটবলকে কেন্দ্র করে বিশ্বমঞ্চে জায়গা করে নিতে পারব। বিশেষ করে ফুটবলকে ঘিরে যে বাণিজ্য করা সম্ভব সেটা এখানে না এলে বুঝতে পারতাম না। কতরকমভাবে বাণিজ্য হচ্ছে। ক্লাবের নানা প্রোডাক্ট কেনার সুযোগ পাচ্ছেন মানুষ। আমরাও কিনলাম দু’একটা। একটা উদাহরণ দিই, আপনারা দেখেছেন রিয়েল মাদ্রিদ স্টেডিয়ামে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে আমাকে ও মহামেডান স্পোর্টিং কর্তা ইশতিয়াক আহমেদকে পাশে রেখে ছবি তুলেছেন। আসলে মাদ্রিদ স্টেডিয়ামের ওই নির্দিষ্ট জায়গাটিতে ছবি তুলতে হলে ক্লাবকে একটি চার্জ দিতে হয়। এটাও আয়ের একটা উপায়। নানা জায়গায় কত ছবি। কত কিছু। সেগুলো থেকেও বাণিজ্য হচ্ছে। তবে আমাদের রাজ্যে, কলকাতায় আমাদের মতো করে ভাবতে হবে ও বাস্তবায়িত করতে হবে। আমরা ঘুরে এসে দিদিকে সব জানিয়েছি। উনি মন দিয়ে শুনেছেন। কলকাতায় ফিরে দিদি যা সাজেশন দেবেন আমরা সেই অনুযায়ী দ্রুত মোহনবাগান ক্লাবকেও এই বিশ্বমানের পরিকাঠামো দিতে চাই। আমরাও বাণিজ্যকরণের দিকে যাব। ফুটবলকে কেন্দ্র করে যে ধরনের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন, বাণিজ্যকরণ ও আবেগের মিশেল চাক্ষুষ করলাম তা জীবনে ভুলব না। আমাদের দেশ, আমাদের রাজ্যের মানুষ ফুটবলকে পাগলের মতো ভালবাসেন। তাঁদের মুখের দিকে তাকিয়ে আর দিদির ভিশনকে সামনে রেখে বাংলার ফুটবলকে বিশ্বমানের গড়ে তোলার অঙ্গীকার নিয়েই ফিরব।
আরও পড়ুন- আদানি মামলার তদন্তে নয়া কমিটি গঠনের আর্জি সুপ্রিম কোর্টে