দেবর্ষি মজুমদার, শান্তিনিকেতন: সোমবার বিশ্বকর্মা পুজো। কিন্তু বিশ্বকর্মা কেন, কোনও মূর্তিপুজোই হয় না বিশ্বভারতীতে। তবে শ্রীনিকেতনের শিল্পোৎসবের বেদিতে রেখে নতুন চামড়ার জুতোপুজো হয়। শান্তিনিকেতন থেকে দূরে হওয়ায় আগে শ্রীনিকেতনের গ্রামবাসীরা বিশ্বকর্মা পুজোর দিনে ঘটপুজো করতেন।
আরও পড়ুন-সময় বাঁচাতে ভার্চুয়াল মাধ্যম
কিন্তু শিল্পাচার্য নন্দলাল বসুর আমলে ছাত্রদের হাতে তৈরি শিল্পকর্ম হিসেবে পুজোর দেবতা হয় চর্মজাত দ্রব্য। রাবীন্দ্রিক চেতনায় রবীন্দ্রসঙ্গীত গাওয়া এবং শিল্প প্রদর্শনীর মাধ্যমে শিল্পোৎসবে পরিণত হয় সেখানকার বিশ্বকর্মা পুজো। রবীন্দ্রনাথের প্রয়াণের পর ১৯৪২ সালে ঘটে পুজো হত আর বেদিতে থাকত শিল্পকর্ম। জয়পাল মেহেতা নামে কলাভবনের এক ছাত্র চামড়ার জুতো তৈরি করে বেদিতে রাখেন। সুরুলের এক পুরোহিত বলেন, জুতো না সরালে পুজো করব না। নন্দলাল বলেন, চামড়ার জুতো হল শিল্পকর্ম এবং তা বেদিতে থাকবে। পুরোহিত চলে যান। তখন জয়পাল মেহেতাকে সবাই বলেন, তুমিই পুজো করো। জয়পাল পুজো করেন আর ছাত্রছাত্রীরা রবীন্দ্রসঙ্গীত গান।
আরও পড়ুন-কলকাতা-কোচবিহার রুটে আরও ১ বিমান
এভাবেই নতুন প্রথার প্রবর্তন হয়। ৪৪ সালে শুরু হয় শিল্পোৎসব। ক্ষিতিমোহন সেন ব্রাহ্মসঙ্গীতের মন্ত্র চয়ন করে উৎসবের একটা রূপ দেন। রবীন্দ্রনাথের বৈশিষ্টই ছিল ধর্মীয় অনুষঙ্গকে অন্য রূপ দেওয়া। হোলিকা বধের মধ্য দিয়ে দোল উৎসব এখানে মিলনোৎসব হয়ে যায়। দুর্গাপুজো হয়ে যায় শারদোৎসব। রবি ঠাকুর প্রকৃতির বন্দনা করে লিখেছেন, ‘এসো গো শারদলক্ষ্মী’। তবে তিনি কখনও গ্রামের লোকের ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত করতেন না। সেজন্য শিলাইদহে পতিসরে কাত্যায়নী পুজো বন্ধ করেননি।