দুবাই (Dubai) শিল্প সম্মেলনের মঞ্চে দাঁড়িয়ে গোয়েঙ্কা গোষ্ঠীর কর্ণধার সঞ্জীব গোয়েঙ্কা বললেন, দীর্ঘ ৩৪ বছরের অনুন্নয়নের খরা কাটিয়ে বাংলায় সোনা ফলাচ্ছেন দিদি। তাঁর কথায়, একটা সময়ে বাংলা ব্রাত্য ছিল, শ্রমিক সমস্যা, ধর্মঘট- বনধের সমস্যা ছিল। শেষ ১২ বছরে সেই পরিস্থিতি বদলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলা এখন দেশের সবচেয়ে সুরক্ষিত রাজ্য। প্রশাসন এখানে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয় এবং তা দ্রুত কার্যকর করে। বাংলার পরিকাঠামো দেশের সেরা। আমরা এশিয়ার বৃহত্তম কোল ব্লক পেয়েছি। গত কয়েক বছরে আমার সংস্থা ৩.২ বিলিয়ন লগ্নি করেছে বাংলায়। এবং বাংলায় কাজের ক্ষেত্রে আমার অভিজ্ঞতা দারুণ। দিদির সৌজন্যে বাংলা এখন দেশের সেরা হওয়ার লড়াইতে সামনের সারিতে। শুক্রবার দুবাই শিল্প সম্মেলনের মঞ্চে এভাবেই বাংলার শিল্প-পরিবেশের ছবি তুলে ধরেন সঞ্জীব গোয়েঙ্কা। তাঁর বক্তব্যে তুমুল হাততালিতে ফেটে পড়েন সম্মেলনে আসা প্রতিনিধিরা।
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সফল বৈঠক লুলু শিল্পগোষ্ঠীর, রাজ্যে গড়বে আন্তর্জাতিকমানের শপিংমল
গোয়েঙ্কার পাশাপাশি শিল্পপতি কেকে বাঙ্গুর যখন বলছেন, কর্ণাটক থেকে তিনি তাঁর প্লান্ট সরিয়ে এনেছেন বাংলায়, তখন ফের হাততালিতে মুখর সম্মেলনস্থল। শিল্পপতি হর্ষ নেওটিয়ার বক্তব্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসলে শুধু মুখ্যমন্ত্রী বা প্রশাসনিক প্রধান নন, তিনি আমাদের দিদি। দিদির কাছে যখন ইচ্ছে যাওয়া যায় এবং তিনি দ্রুত সমস্যার সমাধান করেন। আইটিসি কর্তা সঞ্জীব পুরি বাংলার এগিয়ে থাকার বহুমুখী ছবি দুবাইয়ের লগ্নিকারীদের সামনে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমরা কৃষিতে সবচেয়ে এগিয়ে, এখানে বিপুল খাদ্যভাণ্ডার আছে, শিল্পের জন্য ল্যান্ডব্যাঙ্ক আছে, পর্যটনে আমরা এগিয়ে এবং আরও বিরাট সম্ভাবনা উন্মুক্ত রয়েছে। আমরা গোটা ভারতের ‘গেটওয়ে অফ নর্থ-ইষ্ট’। ভৌগলিক দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান এরাজ্যের। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী আমাদের দিদি। তাঁর সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে এটুকুই বলতে পারি দুরন্ত অভিজ্ঞতা।
অন্যদিকে সিআইআই-এর (CII) ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট কাউন্সিলের চেয়ারপার্সন সুচরিতা বসু তুলে ধরেন বাংলার ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উজ্জ্বল সম্ভাবনা ও অগ্রগতির দিকটি। তিনি বলেন, এমএসএমই ছাড়া বাংলা অসম্পূর্ণ। মুখ্যমন্ত্রী এই ক্ষেত্রটিকে জোরদার করতে চাইছেন। ২১ নভেম্বর থেকে কলকাতায় যে শিল্প সম্মেলন হচ্ছে, সেখানেও মূল লক্ষ্য এমএসএমই। পাশাপাশি তিনি জানান, বাংলায় মেয়েরা শুধু সুরক্ষিত নন, তাঁদের প্রগতিও নজরকাড়া। কন্যাশ্রী থেকে রূপশ্রী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মতো একাধিক উন্নয়নমূলক সামাজিক প্রকল্প মহিলাদের সুরক্ষিত করেছে, আত্মবিশ্বাসী করেছে। এর কৃতিত্ব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সবমিলিয়ে প্রতিনিধিদের বক্তব্যে শিল্পক্ষেত্রে বাংলার অফুরান সম্ভাবনার চিত্র উঠে এল দুবাইয়ের শিল্প সম্মেলনে।