প্রতিবেদন : ফ্রি-কিক থেকে ক্লেটন সিলভার বিশ্বমানের গোলে হায়দরাবাদ এফসি-কে হারিয়ে চলতি আইএসএলে প্রথম জয় তুলে নিল ইস্টবেঙ্গল (East Bengal vs Hyderabad)। যুবভারতীতে মশাল জ্বালিয়ে সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটালেন সেই ক্লেটন। ম্যাচের সংযুক্ত সময়ে ক্লেটন ম্যাজিকেই হায়দরাবাদকে ২-১ গোলে হারাল ইস্টবেঙ্গল। ম্যাচে জোড়া গোল লাল-হলুদের ব্রাজিলীয় স্ট্রাইকারের। পিছিয়ে পড়েও ম্যাচ জিতল কার্লেস কুয়াদ্রাতের দল।
গত মরশুমে আইএসএলে যুগ্ম সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিলেন লাল-হলুদের (East Bengal vs Hyderabad) ব্রাজিলীয় স্ট্রাইকার। গতবারের মতো চেনা ছন্দে দেখা যাচ্ছিল না ক্লেটনকে। কিন্তু এদিন মোক্ষম সময়ে দলের কান্ডারির ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন।
জামশেদপুরের বিরুদ্ধে একাধিক সহজ গোলের সুযোগ নষ্ট করেছিলেন জেভিয়ার সিভেরিও। হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে স্প্যানিশ স্ট্রাইকারকে বেঞ্চে রেখে দল নামান ইস্টবেঙ্গল কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত। ক্লেটন সিলভাকে এক স্ট্রাইকারে রেখে ৪-৫-১ ফর্মেশনে দল সাজান লাল-হলুদ কোচ। রক্ষণে দুই সেন্টার ব্যাক পারদো, হরমনজ্যোত খাবরাকে রেখে দুই সাইড ব্যাকে নিশু কুমার ও মন্দার রাও দেশাইকে খেলান ইস্টবেঙ্গল কোচ। দুই উইংয়ে নন্দকুমার, মহেশ সিংকে ব্যবহার করা হয়। সেন্ট্রাল মিডফিল্ডে এদিন শুরু থেকে ক্রেসপো, বোরহা হেরেরার সঙ্গে কুয়াদ্রাত জুড়ে দিয়েছিলেন সৌভিক চক্রবর্তীকে। কিন্তু শুরু থেকে ইস্টবেঙ্গলের খেলায় সেই পরিকল্পনার ছাপ ছিল না।
মিনিট দশেকের মধ্যে দু’দল দু’টি গোল করে রক্ষণের ভুলে। এর বাইরে খেলার প্রধমার্ধে বলার মতো কিছু ছিল না। দু’দলই খুব সাদামাটা ফুটবল খেলে। ৮ মিনিটের মাথায় হিতেশ শর্মা গোল করে হায়দরাবাদকে এগিয়ে দিয়েছিলেন। মিনিট দুয়েকের মধ্যে ম্যাচে সমতা ফেরায় ইস্টবেঙ্গল। হায়দরাবাদ রক্ষণের ভুলে কার্যত ফাঁকায় গোল করে যান ক্লেটন।
আরও পড়ুন- বৃষ্টিতে পণ্ড রোহিতদের ম্যাচ
প্রথমার্ধের ৩৮ মিনিটে ধাক্কা খায় হায়দরাবাদ। তাদের এক নম্বর গোলরক্ষক লক্ষ্মীকান্ত কাট্টিমনি ইস্টবেঙ্গলের ক্লেটনের সঙ্গে সংঘর্ষে চোখের উপর গুরুতর চোট পান। কাট্টিমনিকে তুলে গোলরক্ষক অনুজ কুমারকে নামান কোচ থাংবোই সিংটো। দ্বিতীয়ার্ধে দু’দলই নতুন উদ্যোমে মাঠে নামে। সৌভিককে তুলে রাকিপকে নামায় ইস্টবেঙ্গল। আক্রমণ, প্রতিআক্রমণে খেলা হলেও গোলমুখ খুলতে পারেনি কোনও দল। ইস্টবেঙ্গলের মহেশ, নন্দকুমাররা এদিন নিজেদের ছন্দে ছিলেন না। তার মধ্যেই ইস্টবেঙ্গল একটি পেনাল্টি পেতে পারত। ৭৫ মিনিটে নন্দকুমারকে বক্সে ফেলে দেওয়া সত্ত্বেও রেফারি পেনাল্টির নির্দেশ দেননি।
পাল্টা প্রতিআক্রমণে ইস্টবেঙ্গলের গোলে বুলেটের গতিতে শট নেন হায়দরাবাদের নোলেস। কিন্তু ইস্টবেঙ্গল গোলরক্ষক প্রভসুখন সিং গিল ডান দিকে ঝাঁপিয়ে অসাধারণ সেভ করেন। গোল পাওয়ার লক্ষ্যে খেলার শেষ লগ্নে মহেশ ও বোরহাকে তুলে ভিপি সুহের, জেভিয়ার সিভেরিওকে নামিয়েও লাভ হয়নি ইস্টবেঙ্গলের। ফের এদিন সুযোগ নষ্ট করেন সিভেরিও। তবে ম্যাচ যখন ড্র হবে মনে হচ্ছিল, ঠিক তখনই ইস্টবেঙ্গলের পরিত্রাতার ভূমিকায় সেই ক্লেটন। ফ্রি-কিক থেকে অসামান্য গোলে দলের তিন পয়েন্ট নিশ্চিত করেন।