সংবাদদাতা, হুগলি : কিছুদিন পরেই বাঙালি শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। মণ্ডপে আসবেন দেবী দুর্গা। তবে হুগলি জেলার তারকেশ্বরের দত্তপুকুর গ্রামের দুর্গা এখন তনুশ্রী। অভাবে তাড়নায় স্বামীর মতোই টোটো চালান তিনি। তবে আর পাঁচটা টোটোর মতো স্টেশন থেকে বাসস্ট্যান্ড যান না। শুধুমাত্র গ্রামের মানুষ বিপদে পড়লে হাসপাতাল ডাক্তারখানা ও রাতে মহিলাদের আনা-নেওয়ার কাজ করেন। তারকেশ্বর বিধানসভার দত্তপুর গ্রামের দত্তপাড়ার বাসিন্দা তনুশ্রী দত্ত (Tanushree Dutta)। ১২ বছর আগে ট্রেকার ড্রাইভার মৃণাল দত্তের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। টোটো- অটোর দাপটে বছর পাঁচেক আগে কাজ হারান মৃনাল। মৃণালবাবুর মালিক বিক্রি করে দেন ট্রেকার। অগত্যা স্ত্রীর মাধ্যমে মাইক্রোফিন্যান্স কোম্পানি থেকে চড়া সুদে টাকা নিয়ে একটি টোটো কেনেন। তবে সেভাবে ভাড়া হত না তাঁর। যেটুকু রোজগার হত মাইক্রোফিন্যান্স কোম্পানির সুদ দিতেই চলে যেত। এমন অবস্থায় সংসারের হাল ফেরাতে ভাসুরের টোটোটি কিস্তিতে কিনে নেন তনুশ্রী। শুরু হয় নতুন পথচলা। স্বামীর থেকে টোটো চালানো শিখে নেন তনুশ্রী (Tanushree Dutta)। তবে অন্যান্য টোটোচালকদের মতো তনুশ্রী স্টেশন থেকে বাসস্ট্যান্ড বা এক গন্তব্য থেকে অন্য গন্তব্যে টোটো চালান না। গ্রামের মানুষরা ডাক্তার দেখাতে যাওয়া, হাসপাতালে যাওয়া অথবা পড়াশোনা করে গ্রামের কোনও মেয়ে রাতে বাইরে থেকে এলে তাঁদের একমাত্র ভরসা তনুশ্রী। স্থানীয় বাসিন্দা উত্তম লোহার জানান, পাশাপাশি গ্রাম চাকদহ, দত্তপুর, মোজপুর সহ চার-পাঁচটি গ্রামের মানুষের বিপদের সঙ্গী তনুশ্রী। গ্রামে অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা না পাওয়া গেলে বিপদে পড়লে তনুশ্রীকে ফোন করলেই অসুস্থ মানুষকে পৌঁছে দেন হাসপাতাল কিংবা ডাক্তারখানায়। রাতে মেয়েরা গ্রামে ফিরতে তনুশ্রীর উপরেই ভরসা করেন।
আরও পড়ুন- আদিবাসীদের উপর আক্রমণ বাড়ছে, নয়া দল ঘোষণা ছত্তিশগড়ে