সঞ্জিত গোস্বামী, পুরুলিয়া: প্রাচীন রাজ পরিবারে মেয়ের বিয়ে দিলে মেয়ের সঙ্গে তাঁর দাসী ও সখীদেরও পাঠানো হত। গিরিরাজকন্যা উমার যখন শিবের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়, তখন দেবীর সঙ্গে তাঁর অষ্টসখীও গিয়েছিলেন উমার শ্বশুরবাড়িতে। আটজনের মধ্যে জয়া ও বিজয়া ছিলেন উমার সবচেয়ে প্রিয় সখী। তাই উমা যখন বাপের বাড়ি আসেন, সঙ্গে এই দুই সখীও আসেন। এই বিশ্বাস থেকেই পুরুলিয়ার কাশীপুরে পঞ্চকোট রাজ পরিবারের দেবী প্রতিমার মূর্তির সঙ্গে জয়া-বিজয়াও থাকেন।
আরও পড়ুন-বেনারসি পরিয়ে দেবীকে বসানো হয় পঞ্চমুন্ডির আসনে
রাজ পরিবারের পাশাপাশি এই এলাকার বিভিন্ন গ্রামের পুজোতেও থাকেন জয়া ও বিজয়া। রাজ পরিবারের বর্তমান উত্তরাধিকারী বি পি সিংহ দেও বলেন, মন্ত্রে বলা হয়, অষ্টসখী-সহ দেবীভ্যো নমঃ। পঞ্চকোটের রাজারা তৎকালীন জঙ্গলমহলে এসেছিলেন ৮০ খ্রিস্টাব্দে। সঙ্গে নিয়ে আসেন কুলদেবী অষ্টভুজা রাজরাজেশ্বরীকে। সেই রাজরাজেশ্বরীর পুজো আজও হয় কাশীপুরে। সেই সঙ্গে পূজিতা হন দশভুজা দুর্গা। নিয়মমতো জিতাষ্টমী থেকেই পুজোর সূচনা হয়। চলে বিজয়া অবধি। বি পি সিংহ দেও বলেন, এখানে দেবীর পুজো হয় শাক্তমতে। বলিও হয়। রাজ পরিবারের পুরোহিত গৌতম চক্রবর্তী বলেন, শুধু পঞ্চকোট রাজ পরিবারের নয়, এখানে রাজ পরিবারের সঙ্গে ধারানগর থেকে আগত সমস্ত কান্যকুব্জ ব্রাহ্মণ অধ্যুষিত গ্রামেই প্রতিমার সঙ্গে থাকেন জয়া-বিজয়া। তাঁরাও পুজো পান। হাজার বছরের বেশি সময় ধরে এভাবেই চলছে পুজো।