বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপাল আনন্দ বোসের (Cv Ananda bose) স্বেচ্ছাচারিতাকে বেআইনি বলে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের কোনও অধিকার নেই রাজ্যপালের। যদি রাজ্যপাল কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করেন সেক্ষেত্রে সেই উপাচার্য কোনওরকম সরকারি সুযোগ সুবিধা পাবেন না। অর্থাৎ রাজ্যপাল যে ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করেছেন তাঁরা কোনও সুযোগ সুবিধা পাবেন না! সবমিলিয়ে উপাচার্য নিয়োগকে কেন্দ্র করে এতদিন ধরে রাজভবন ও শিক্ষা দফতরের যে সংঘাত চলছিল তাতে দাড়ি টানল দেশের শীর্ষ আদালত। এই বিষয়ে আদালতের তরফে নোটিশও পাঠানো হয়েছে রাজ্যপালকে।
বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত ও বিচারপতি সূর্য কান্তের ডিভিশন বেঞ্চ পশ্চিমবঙ্গের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল। সেই শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট প্রশ্ন তোলে, বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত মামলা বিচারাধীন। তারমধ্যে কীভাবে ১২ জনকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য পদে নিয়োগ করলেন রাজ্যপাল? আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যপালকে এই প্রশ্নের জবাব রিপোর্ট আকারে সুপ্রিম কোর্টে জানাতে হবে। শুক্রবার এই মামলার শুনানিতে রাজ্যপালের আইনজীবীকে বিচারপতি বলেন, রাজ্যের দুই সাংবিধানিক প্রধানের মধ্যে যেকোনও সময় আলোচনা হতে পারে। যদি না হয় তবে সেটাই দুর্ভাগ্যজনক। সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত রাজ্যপাল আর কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করতে পারবেন না। এবং এখনও পর্যন্ত যাঁদের অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করা হয়েছে তাঁরা কোনও সুযোগ সুবিধা পাবেন না।
উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে রাজ্যপালের (Cv Ananda bose) সংঘাত চরম আকার নিয়েছে। শিক্ষা দফতরের অভিযোগ, রাজ্যের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই রাজ্যপাল একের পর এক বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করে চলেছেন। উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যের কোনও কথাই শুনছেন না আনন্দ বোস, এমনও অভিযোগ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। রাজ্যপালের একতরফা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিল রাজ্য। সেই মামলায় শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল, রাজ্যপাল আচার্য হিসাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যদের নিয়োগ কর্তা। কিন্তু রাজ্যপাল উপাচার্যদের নির্বাচন কর্তা নন। এ ব্যাপারে তাঁর কোনও পারদর্শিতা নেই। তাছাড়া রাজ্যপালের কাছে কোনও সিলেকশন কমিটিও নেই। পশ্চিমবঙ্গের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগের জন্য সার্চ কমিটি গঠন করে দেবে শীর্ষ আদালত, এমন জানিয়েছিল ডিভিশন বেঞ্চ। সার্চ কমিটিতে কাদের সদস্য করা হবে সে ব্যাপারে যেন রাজ্য সরকার, রাজ্যপাল এবং ইউজিসি ৩ থেকে ৫ জনের নাম পাঠায়, সেটাও বলেছিল সুপ্রিম কোর্ট। সূত্রের খবর, সব পক্ষই সার্চ কমিটির জন্য নাম পাঠিয়েছে। কিন্তু উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে এখনও চূড়ান্ত সার্চ কমিটি তৈরি হয়নি। তার মধ্যেই দিন কয়েক আগেই ৬ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করেছিলেন রাজ্যপাল। তা নিয়ে নতুন করে রাজ্য রাজ্যপাল দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছিল। এবার উপাচার্য নিয়োগ মামলার শীর্ষ আদালতে মুখ পুড়ল রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের।