দেবর্ষি মজুমদার, শান্তিনিকেতন: প্রতি বছর মহালয়ার বিকেলে শান্তিনিকেতনে বসে পড়ুয়াদের বিকিকিনির স্টল। পোশাকি নাম ‘আনন্দবাজার’ (Anandabazar)। অভিনব নামের দোকানে পসরার নামও অভিনব। শিঙাড়া খেতে চাইলে যেতে হবে ত্রিসিংহধারিণী স্টলে। কারণ শিঙাড়ার তিনটি শিং। চায়ে মন না ভরলে, কফি খান। তবে চাইবেন সোমরস। রাতে ও সকালের দিকে ঢাক বাজিয়ে দোকানের কাজ চলে। পড়ুয়ারা ঢাকের তালে নাচে! তখন থেকে আনন্দ শুরু! আনন্দবাজার (Anandabazar) কবে শুরু হয় দিনক্ষণ জানা নেই। রবীন্দ্রনাথের জীবদ্দশাতেই প্রচলন। সম্ভবত ১৯১০-১১ সালে। ১৯১৯-এ ছেলেরা করেছে সীতার পদধূলি, রামের ধনুক, চণ্ডীদাসের হস্তাক্ষর— এইসবের মিউজিয়াম। ‘সীতার পদধূলি’ নিয়ে প্রাক্তন উপাচার্য সবুজকলি সেন জানান, রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন প্রবাসী-সম্পাদক। তাঁর কন্যা সীতাদেবী। তাঁর নামেই ‘সীতার পদধূলি’। রবীন্দ্রনাথ তাঁকে বলেছিলেন, ‘‘তোর পদধূলি দেখে এলাম’’। একইভাবে ‘চণ্ডীদাসের হস্তাক্ষর’ বৈষ্ণব কবির নামে নয়। আশ্রমে চণ্ডীদাস নামে এক পাচক কাজ করতেন, তাঁর হাতের লেখা। এখনও সেই পরম্পরা আছে। খাবারের দোকানের নাম ‘খাইবার পাস’। পাঠভবনের সামনে গৌরপ্রাঙ্গণে বসে আনন্দবাজার। পাঠভবনের ক্লাস ফোর থেকে দ্বাদশ শ্রেণি এবং সংগীতভবন ও কলাভবন সব বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা অংশ নেয়। স্টলের সংখ্যা নেহাত কম নয়। সব নিজেদের তৈরি। এ থেকে যে আয় হয়, সেটা চলে যায় বিশ্বভারতীর সেবা বিভাগে। সেই সেবা বিভাগ থেকে আশপাশের গ্রামের দুঃস্থ মানুষের মধ্যে কম্বল, কাপড়জামা বা খাবার বিতরণ করা হয়।
আরও পড়ুন- পাঞ্জাবে বেকায়দায় বিজেপি, কংগ্রেসে যোগ একাধিক নেতার