৩৫০ বছরের দালান মা পুজো নেন পঞ্চমুণ্ডির আসনে বসে

Must read

সুনীতা সিং, বর্ধমান: বর্ধমানের(Bardhaman- Durga Puja) তালিত গ্রামের ভট্টাচার্য পরিবারের দালান মা জয়দুর্গা মন্দিরের পঞ্চমুণ্ডি আসনের বসে পুজো নেন। তাঁকে ঘিরে রয়েছে অনেক গল্পকথা। পরিবারের সদস্য ও পুজোর পুরোহিত অবনীপ্রসাদ ভট্টাচার্য জানান, নয় নয় করেও প্রায় ৩৫০ বছরের পুরনো এই পুজোর শুরু পূর্বপুরুষ কালীপ্রসন্ন ভট্টাচার্যের হাত দিয়ে। তালিত গ্রামেই রয়েছে দেবী সিদ্ধেশ্বরী। কথিত, এই মন্দিরে এসেছিলেন সাধক কমলাকান্ত এবং সারদামণি দেবী। কমলাকান্ত সেই মন্দিরে বসেই সাধনাও করেন বলে লোকমুখে প্রচলিত। পরিবারের এক সদস্যের নাম দুর্গাপ্রসন্ন বলে দেবীকে এখানে দালান মা নামে ডাকা হয়। ষষ্ঠীর দিন নবপত্রিকাকে ভট্টাচার্য পুকুরে স্নান করিয়ে দুর্গামন্দিরে নিয়ে আসার পর হলুদ জল দিয়ে তাঁকে ফের স্নান করানো হয়। আগে মোষবলি হলেও করোনার সময় থেকে তা বন্ধ করা হয়। দালান মায়ের পুজোয় চণ্ডীপাঠ, কুমারীপুজো হয় না। যেহেতু মায়ের বেদি পঞ্চমুণ্ডি আসনের ওপর, তাই সম্পূর্ণ তান্ত্রিক মতেই পুজো হয়। দেবীকে (Bardhaman- Durga Puja) বলির মাংস তথা মহাপ্রসাদ দেওয়া হয়। ভোগে আবশ্যিকভাবে থাকে মাগুরমাছ। আগে ভট্টাচার্য পুকুর থেকেই মাগুর ধরা হত, এখন বাজার থেকে কিনে আনা হয়। দালান মায়ের পুজোর নৈবেদ্য কোনও মহিলা নন, পরিবারের পুরুষ সদস্যরাই তৈরি করেন। তবে দেবীর ভোগ প্রস্তুত করেন পরিবারের দীক্ষাপ্রাপ্ত মহিলারা। আগে পুজোয় যাত্রাপালা হত। এখন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। মায়ের ডানদিকে শিবমন্দির। তবে দালান মার পঞ্চমুণ্ডির আসনে কারা সাধনা করেছেন সে ইতিহাস জানা যায় না। কেবলমাত্র পুর্বপুরুষদের নির্দেশ অনুযায়ীই ওই বেদিতে কেউ ওঠেন না। পরিবারের আরেক সদস্য প্রসূন ভট্টাচার্য জানান, বছর দশেক আগে দেবীর পাটাতনকে ১৬ জন মিলে সরানোর চেষ্টা করেও পারেনি। কিন্তু পরের দিন ৬ জন মিলেই সরানো সম্ভব হয়। পূর্বসূরিদের কাছ থেকে এই সব অলৌকিক গল্প শুনেছি। দালান মায়ের পুজোয় ইলতুতমিসের আমলের (১২১১-১২৩৬ থ্রিস্টাব্দ) একটি রুপোর কয়েন কনকাঞ্জলির সময় এখনও ব্যবহার করা হয়। এই দেবী অত্যন্ত জাগ্রতা বলেই আমরা সবাই মানি।

আরও পড়ুন- বিশ্বভারতীতে বসল পড়ুয়াদের নিজস্ব আনন্দবাজার

Latest article