প্রতিবেদন : উৎসবের মরশুমে পেঁয়াজের দাম লাগাতার বাড়তে থাকায় এবার রফতানির ক্ষেত্রে রাশ টানল কেন্দ্র। ডিসেম্বর পর্যন্ত পেঁয়াজ রফতানির ক্ষেত্রে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বেঁধে দেওয়া হয়েছে। রবিবার থেকে এই নিয়ম লাগু করা হয়। আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রতি মেট্রিক টন পেঁয়াজের রপ্তানি মূল্য ৮০০ ডলার বা ৬৭ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। দেশের বাজারে জোগান এবং চাহিদার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা এবং পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়াতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। প্রতি টন পেঁয়াজের দাম ৮০০ ডলার হলে কেজি প্রতি এর রপ্তানি মূল্য পড়বে আনুমানিক ৬৪ থেকে ৬৭ হাজার টাকার মধ্যে। উল্লেখ্য, রবিবার রাজধানী-সহ বিভিন্ন বাজারে পেঁয়াজের দাম গৃহস্থের চোখে রীতিমতো জল এনে দিয়েছে। এদিন পেঁয়াজের মূল্য ছিল প্রতি কেজি ১০০ টাকার কাছাকাছি।
আরও পড়ুন-গতি ও ঘূর্ণিই আজ অস্ত্র রোহিতদের
ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ ফরেন ট্রেড (ডিজিএফটি) শনিবার জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, বিদেশে রপ্তানি করা পেঁয়াজের নূন্যতম সহায়ক মূল্য ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৮০০ ডলার প্রতি মেট্রিক টন ধার্য করা হয়েছে। কেন্দ্রের দাবি, সরকারের এই পদক্ষেপে পেঁয়াজের রপ্তানি কমবে এবং দেশে এর সরবরাহ মসৃণ হবে, যা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হবে। এছাড়াও সরকার বাফার স্টকের জন্য অতিরিক্ত ২ লাখ টন পেঁয়াজ কিনবে। জানা গিয়েছে, বেঙ্গালুরু রোজ ও কৃষ্ণপুরাম জাতের পেঁয়াজ ছাড়া সব ধরনের পেঁয়াজ রপ্তানির ক্ষেত্রে এই ন্যূনতম মূল্য প্রযোজ্য হবে। আস্ত পেঁয়াজ, কাঁটা পেঁয়াজ, ভাঙা ও গুঁড়ো— সব ধরনের পেঁয়াজ রপ্তানিতেই এই ন্যূনতম মূল্য প্রযোজ্য হবে। সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্বের যেকোনও দেশেই যেকোনও পরিমাণে পেঁয়াজ রপ্তানি করা যাবে। এ বিষয়ে বাধা নেই।
আরও পড়ুন-ক্ষমতায় এলেই কৃষকদের ঋণ মকুব হবে, ছত্তিশগড়ে প্রতিশ্রুতি রাহুলের
তবে রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রতি টন পেঁয়াজে ন্যূনতম ৮০০ ডলার নিতে হবে, এর নিচে নয়। জাহাজে পরিবহণ ও বিমার খরচ এই দামের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হবে না। এর আগে কেন্দ্রীয় সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল। তখন এ নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। এমনকী তাঁরা ধর্মঘটও করেন। এর মধ্যে আবার রপ্তানির ন্যূনতম দাম বেঁধে দেওয়া হল। কেন্দ্রের বক্তব্য, বর্তমানে পেঁয়াজের মজুত স্বাভাবিকের চেয়ে কম। বছরের শুরুর দিকে অসময়ে বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টির কারণে মজুতের প্রায় ৪০ শতাংশ পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। সামগ্রিকভাবে এবার পেঁয়াজের উৎপাদনও কমে গিয়েছে। ভারতে গত বছর ২ দশমিক ৫৩ লাখ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়েছে। অথচ এ বছর পেঁয়াজ চাষের জমি কমে ২ দশমিক ৩১ লাখ হেক্টর হয়েছে।