প্রতিবেদন : আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ— নাকি অধিকারীদের আশ্চর্য প্রদীপ! তা না হলে একজন সাংসদের এক বছরে ১০ কোটি টাকার সম্পত্তি হয় কী করে? তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে জেতা দলবদলু গদ্দার অধিকারীর বাবা শিশির অধিকারীর ক্ষেত্রে তাই ঘটেছে।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া তাঁরই তথ্য এ-কথা বলছে। আবার তাঁরই দেওয়া কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার মন্ত্রীদের সম্পদ তালিকায় শিশিরের মোট সম্পদের পরিমাণ বলছে এক বছরে ১০ কোটি টাকা বেড়েছে। কোন জাদুমন্ত্রে এ জিনিস হতে পারে? এই অসঙ্গতি পুরোদস্তুর নিয়ম ভেঙেই হয়েছে। কোথা থেকে এই টাকা এসেছে? এই প্রশ্ন তুলে গোটা বিষয়টির সিবিআই ও ইডি তদন্ত চাইল তৃণমূল কংগ্রেস। শনিবার তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এই চূড়ান্ত আর্থিক অসঙ্গতি ও বেনিয়ম নিয়ে ধুইয়ে দিয়েছেন। কুণালের তোপ, শিশির অধিকারী তাঁর আয়ের পুরো হিসেব দেননি। তাঁর ছেলে দলবদলু গদ্দার অন্যের দিকে আঙুল তোলে, এবার নিজের বাবার আয়ের হিসেবের জবাব দিক। না হলে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ আনা হবে।
আরও পড়ুন-মুখ্যমন্ত্রীকে ইডেনে আমন্ত্রণ জানাল সিএবি
শনিবার সকালে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে শিশির অধিকারীর সম্পত্তির বৃদ্ধি ও হ্রাস নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন তোলেন কুণাল ঘোষ। শিশির অধিকারীর সম্পত্তির বিবরণ-সংক্রান্ত বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য তুলে ধরে কুণাল জানতে চেয়েছেন, পরিসংখ্যান সত্য নাকি ভুল? ১০ লাখ কীভাবে ১০ কোটি টাকা হল? কীভাবে ১০ কোটি কমে ৩ কোটিতে এল? এটা কি জাদু?
আরও পড়ুন-বায়ুদূষণ শুধু স্বাস্থ্য নয়, অর্থনীতিরও বারোটা বাজায়
শিশিরবাবুর সম্পত্তির খতিয়ান তুলে ধরার জন্য কুণাল ঘোষ জাতীয় নির্বাচন কমিশন এবং ভারত সরকারকে দেওয়া কাঁথির সাংসদের বেশ কিছু তথ্য তুলে ধরেছেন। যেখানে দেখা যাচ্ছে, ২০০৯ সালে সাংসদ শিশির অধিকারী যখন লোকসভা ভোটে প্রার্থী হয়েছিলেন, তখন তিনি হলফনামায় নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছিলেন, তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ১০ লাখ টাকার কিছু বেশি। আবার তার তিন বছরের মধ্যে ২০১২ সালে তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থাকাকালীন ভারত সরকারকে জমা দেওয়া তথ্যে দেখা যাচ্ছে শিশিরবাবুর সম্পত্তির পরিমাণ ১০ কোটির কিছু বেশি। তার আগের বছর ২০১১ সালে যা ছিল ১৫ লক্ষ ৯৬ হাজার ৩০৬ টাকা। মানে এক বছরেই ১০ কোটি আয় বেড়েছে। কোন জাদুবলে সম্ভব এটা? কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ার পর মাত্র ৩ বছরে শিশির অধিকারীর সম্পত্তি বৃদ্ধির পরিমাণ ১০ লাখ থেকে বেড়ে হয়েছিল ১০ কোটি! আবার ২০১৯ সালে লোকসভার সময় কমিশনকে জমা দেওয়া শিশিরবাবুর তথ্য অনুযায়ী অদ্ভুতভাবে তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ৩ কোটির কিছু বেশি! সোশ্যাল মিডিয়ায় কুণাল ঘোষের দেওয়া এই তথ্য মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায়। যা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে।