সংবাদদাতা, শান্তিনিকেতন : বিশ্বভারতীতে উপচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বুধবারই ছিল কর্মজীবনের শেষ দিন। কলাভবনের অধ্যাপক সঞ্জয়কুমার মল্লিক বর্তমানে বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য। যদিও এখনও পর্যন্ত বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিক এর সত্যতা স্বীকার করেননি। তবে গোপন সূত্র থেকে এই খবর প্রকাশ্যে আসায় শান্তিনিকেতন এখন উৎসবমুখর। সবাই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ছেন। অবসর গ্রহণের দিনে সহকর্মী ও ছাত্রদের কাছ থেকে অশ্রুসজল চোখে বিদায় গ্রহণই হল প্রথা।
আরও পড়ুন-
কিন্তু এমন বিদায় সচরাচর ঘটে না। কারণ অন্তিম দিনের আগের দিন মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে অসম্মানজনক চিঠি জনসমক্ষে প্রকাশ করে মানুষের নিন্দা, ক্ষোভ, বিরক্তি কুড়িয়েছেন বিতর্কিত বিদ্যুৎ। বোলপুরের বাসিন্দা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান প্রলয় নায়েক তাঁর বিরুদ্ধে শান্তিনিকেতন থানায় এ নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন মঙ্গলবারই। এর ভিত্তিতে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে ১৪ নভেম্বর শান্তিনিকেতন থানায় ডাকা হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। প্রথম দিন থেকে শেষ দিন পর্যন্ত বিতর্ক পিছু ছাড়েনি বিদ্যুতের। তাই তাঁর অপসারণের দাবিতে সবাই সোচ্চার ছিল। অনেকের অভিমত, হাঁফ ছেড়ে বাঁচল শান্তিনিকেতন। ইউনেস্কোর ফলকে রবীন্দ্রনাথের নাম বাদ দেওয়া নিয়ে বিজেপিকে বেকায়দায় ফেলেন বিদ্যুৎ। তাই লোকসভার আগে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে তাড়াতে বিজেপির একাংশই সক্রিয় হয়।
আরও পড়ুন-
১৯১৮ সালে বিশ্বভারতীর স্থায়ী উপাচার্য হিসেবে কাজে যোগ দেন বিদ্যুৎ। এরপর পাঁচিল বিতর্ক থেকে, অমর্ত্য সেনের পৈতৃক ভিটে কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা, পৌষমেলা ও বসন্ত উৎসব বন্ধ করা থেকে সহকর্মী অধ্যাপকদের সাসপেন্ড করা-সহ একাধিক মামলায় জড়ানো, জোর করে মুচলেকা লিখিয়ে নেওয়া-সহ সার্নের লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডার প্রকল্পে যুক্ত বিজ্ঞানী মানস মাইতির বিরুদ্ধে কেন্দ্রের ডিপার্টমেন্ট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি মন্ত্রকে চিঠি দিয়ে অধ্যাপকের কেরিয়ার নষ্ট করা, ছাত্রছাত্রীদের সাসপেন্ড করে তাদের ভর্তি, পরীক্ষা এবং পিএইচডি আঁটকানো এমন অসংখ্য অভিযোগ ছিল বিদায়ী উপাচার্যের বিরুদ্ধে। তাই বিদায়বেলায় বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর পাশে নেই কোনও শুভানুধ্যায়ী।