সংবাদদাতা, তারাপীঠ : তারাপীঠে তারামাকে (Maa Tara) কালী রূপে পুজো করেন নাটোরের রাজ পুরোহিত। তার পরের দিন তারা সাধনায় মন্ত্র সিদ্ধিলাভের উদ্দেশ্যে তারা মায়ের সকল সেবায়েত উদয়পুরে সমবেত হন। কারণ গুপ্ত চিনাচার ক্রম তন্ত্রশাস্ত্র মতে কালীপুজোর দিন কেউ যদি উদয়পুর কালীসাধন ক্ষেত্রে সাধনা করেন, তাঁর মন্ত্রসিদ্ধি লাভ ঘটে। এই বিশ্বাস আজও অটুট তারাপীঠে। উল্লেখ্য, সমস্ত দেবীকে অভেদ কল্পনা করে তারা মাকে (Maa Tara) পুজো করা হয়। সেই হিসেবে তারা মাকে কালীরূপেও পুজো করা হয়। পঞ্জিকা মতে অমাবস্যা তিথি থাকছে আজ, সোমবারও। অমাবস্যা তিথি থাকবে দুপুর ২/২৮/৩০ মিনিট পর্যন্ত।
অমৃত যোগ দিবা ঘ ৬।৫০ গতে ৮।৫৭ মধ্যে ও ১১।৪৮ গতে ২।৩৯ মধ্যে এবং রাত্রি ঘ ৭।২৭ গতে ৯।১৪ মধ্যে ও ১১।৫৩ গতে ১।৪০ মধ্যে ও ২।৩৩ গতে ৫।৫৩ মধ্যে। রবিবার ভোরে মাকে নানাবিধ সুরভি দ্রব্য দিয়ে স্নান করানো হয়। কারণবারি, ফুলমালা দিয়ে শৃঙ্গার করে মাকে রাজবেশে সাজানো হয়। তারপর আরতি করে মাকে শীতলীর ভোগ দেওয়া হয়। এরপর পুণ্যার্থীদের পুজো শুরু হয়। দুপুরে অন্নভোগে আতপান্ন, পলান্ন, পঞ্চব্যঞ্জন, ডাল, বলির মাংস, শোলমাছ পোড়া, চাটনি, পায়েস ও মিষ্টি ইত্যাদি দিয়ে ভোগ নিবেদন করা হয়। সারাদিন পূজার্চনার পর মহিলারা সন্ধ্যায় শশ্মান, জীবিত কুণ্ড ও মায়ের মন্দির চত্বর এবং দ্বারকা নদীতীরে প্রথাগতভাবে প্রদীপ জ্বালিয়ে শুভ শক্তির প্রার্থনা করেন। তারপর মঙ্গলারতি ও শীতলীর পর রাতে মহানিশির বিশেষ পুজো হয়। নাটোরের রাজ পুরোহিত-সহ অন্য সেবায়েত পুরোহিতরা বসেন। পুজো শেষ করে মায়ের বিশেষ ভোগ হয়। রাতে পঞ্চব্যঞ্জন-সহ খিচুড়ি ভোগ হয়। কালীপূজায় তারাপীঠে আরেক কাহিনী লুকিয়ে আছে। তারাপীঠের সেবায়েতরা তারা মায়ের নিশিপুজোর পরের দিন উদয়পুরে যান। সেখানে মা কালীকে বলি নিবেদন করেন। তারপর সেখানে তারা সাধনায় ব্রতী হন। তারা মাতার সেবায়েত প্রবোধ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, গুপ্ত চিনাচার ক্রম তন্ত্রশাস্ত্র মতে কালি পুজোর দিন কেউ যদি উদয়পুর কালীসাধন ক্ষেত্রে তারা মায়ের সাধনা করেন, তাহলে তিনি মন্ত্রসিদ্ধ হন। তারা মা ও উদয়পুরের কালী দুই কিমির মধ্যে মুখোমুখি অধিষ্ঠান করছেন।
আরও পড়ুন- আলোর উৎসবে মাতল বাংলা