প্রতিবেদন : কবি নজরুল ইসলামের লেখা ‘কারার ওই লৌহকপাট’ গানটি ১০০ বছর পেরিয়ে আজও বাঙালির রক্তে ঝড় তোলে। গানটিকে নতুন আঙ্গিকে তুলে ধরতে চেয়েছিলেন এ আর রহমান। আর সেখানেই বিপত্তি। জনপ্রিয় এই গানটিকে এমনভাবে বদলে ফেলার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই কটাক্ষ করেছেন রহমানকে।
আরও পড়ুন-রোহিতদের পরামর্শ বিন্দ্রার
সমাজের বিভিন্ন মহলের মানুষ এই সৃষ্টিকে মানতে নারাজ। অনেকে লিখেছেন, গানটিকে এভাবে বদলে ফেলার কোনও প্রয়োজন ছিল না। অনেকে তো আবার সরাসরি বলেছেন, সংস্কৃতিকে ধ্বংস করছেন এ আর রহমান। ইতিহাস না জেনেই তিনি গানটিকে বিকৃত করেছেন। নজরুলগীতির বিকৃতির জন্য বিখ্যাত সঙ্গীত পরিচালক এ আর রহমানের বিরুদ্ধে একসুরে কড়া ভাষায় নিন্দা করেছেন দুই বাংলার শিল্পী ও বিদ্বজ্জনেরা। রাস্তায় নেমে চলছে প্রতিবাদও।
আরও পড়ুন-লাহিড়ীবাড়ির ৪৫০ বছরের পুজোভোগে আকর্ষণ ইলিশ ও চিংড়ি
নজরুলগীতির বিকৃতি নিয়ে প্রতিবাদী সভাও করেছে হেরিটেজ বেঙ্গল। তার সমর্থনেই এবার মুখ খুললেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। ‘লৌহকপাট’ বিতর্কে সুখেন্দুশেখর রায়ের কড়া মন্তব্য, “ফ্যাসিস্ট শক্তির যখন উত্থান হয়, তখন দেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, পরম্পরার উপর সবথেকে বেশি আঘাত নেমে আসে। যেমন যুদ্ধের সময় নিরীহ সাধারণ মানুষ, বিশেষত মহিলারা সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন। একে বলা হয় সফট টার্গেট। এ আর রহমানের সুর বিকৃতি দেশাত্মবোধক সঙ্গীতের উপর তেমনই পরিকল্পিত আক্রমণের অঙ্গ। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের মতো স্বাধীনতা সংগ্রামীও তাই রেহাই পেলেন না হায়! বাঙালির রক্ত কি শুকিয়ে গিয়েছে?”
আরও পড়ুন-বাংলার শিক্ষায় আরও কাজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলি এক মঞ্চে এলো
নজরুল ইসলামের ‘কারার ওই লৌহকপাট’-এর সুর বিকৃতি করে হিন্দি সিনেমা ‘পিপ্পা’র জন্য যে গান তৈরি করেছেন এ আর রহমান, তার প্রতিবাদে সোমবার দুপুরে দক্ষিণ কলকাতার নজরুল মঞ্চের সামনে হেরিটেজ বেঙ্গল এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে। মঞ্চে বিদ্রোহী কবির মূর্তিতে মাল্যদান করে সভার সূচনা হয়। উপস্থিত ছিলেন ৯৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মৌসুমী দাস, হেরিটেজ বাংলার তরফে হিরণ মজুমদার, সভাপতি পার্থচন্দ্র প্রমুখ। প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও শারীরিক অসুস্থতার কারণে ওই সভায় উপস্থিত থাকতে পারেননি সুখেন্দুশেখর রায়। তাঁর প্রতিবাদবার্তা পড়ে শোনান হয়।
এই গানকে অবিলম্বে ব্যান করতে হবে এবং ছবি থেকে বাদ দিতে হবে। এই প্রতিবাদ মঞ্চ থেকে এই আওয়াজ ওঠে। বাংলার ঐতিহ্য ও বাংলার আবেগকে আঘাত করার অভিযোগও করেন বক্তারা।