প্রতিবেদন : উত্তরাখণ্ডের কুমায়ুন উপত্যকার কানাকাটা পাসে ট্রেকিংয়ে গিয়ে প্রবল তুষারধসে মৃত ৫ জন বাঙালি অভিযাত্রীর কফিনবন্দি দেহ বাড়িতে এসে পৌঁছল বৃহস্পতিবার। এদিন সকালে পরপর দু’টি বিমানে দিল্লি থেকে কলকাতায় এসে পৌঁছয় দেহগুলি। এঁদের মধ্যে তিনজনের বাড়ি হাওড়ার বাগনানে। চন্দ্রশেখর দাস (৩৬), সরিৎশেখর দাস(৩৭) ও সাগর দে(৩১) বাগনানের বাসিন্দা। বাকি দু’জন হলেন কলকাতার ঠাকুরপুকুরের সাধন বসাক (৬৩) ও রানাঘাটের ডাক্তারি পড়ুয়া প্রীতম রায় (২৬)। আগে থেকেই দমদম বিমানবন্দরে হাজির ছিলেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু, কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস, জনস্বাস্থ্য কারিগরি মন্ত্রী পুলক রায়। তাঁরা মৃতদের প্রতি সেখানেই শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ছিলেন মৃতদের বাড়ির সদস্য ও এলাকার কিছু মানুষও।
আরও পড়ুন-শোকার্ত প্রিয়জনদের মাঝে রাজ্যের তিন মন্ত্রী
মন্ত্রীরাও মৃতদেহগুলির সঙ্গে তাঁদের বাড়িতে যান। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে দেহগুলি বিমানবন্দরে নিয়ে আসার পর বিশেষ গাড়িতে প্রত্যেকের বাড়িতেও পৌঁছে দেওয়া হয়। বাগনানে কফিনবন্দি দেহগুলি বাড়িতে নিয়ে আসার সময় সেখানেও ছিলেন মন্ত্রী পুলক রায়। দেহগুলি বাড়িতে এসে পৌঁছতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁদের বাড়ির লোকেরা। মৃতদের পরিবারের পাশে থেকে সমবেদনা জানান মন্ত্রী পুলক রায়। বেশ কিছুক্ষণ বাড়ির সামনেই রাখা হয় মরদেহগুলি। স্থানীয় মানুষজন মাল্যদান করেন। এলাকার তৃণমূল নেতৃত্বের পক্ষ থেকেও মরদেহে মাল্যদান করা হয়। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য চন্দ্রশেখরের কফিনবন্দি মরদেহ খালোড় পঞ্চায়েত অফিসেও নিয়ে যাওয়া হয়। সাগর দের মরদেহ কিছুক্ষণের জন্য আমতার উদংয়ে তাঁর গ্রামের বাড়িতেও নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর দুপুরে বাউড়িয়া শ্মশানে তিনজনের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। দমদম বিমানবন্দর থেকে বাগনানের বাড়িতে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া এবং সেখান থেকে বাউড়িয়া শ্মশানে শেষকৃত্যের জন্য নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত সবসময় ছিলেন মন্ত্রী পুলক রায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ঘটনার পর থেকেই উৎকণ্ঠায় ছিলেন।
আরও পড়ুন-হার্দিক বল না করলে সানির পছন্দ ঈশান
সবসময় খোঁজখবর রাখছিলেন। উল্লেখ্য, উত্তরাখণ্ডের কানাকাটা পাসে ট্রেকিংয়ে গিয়ে দেবীকুণ্ডের কাছে প্রবল তুষারধসে তলিয়ে গিয়ে বাগনানের তিনজন-সহ রাজ্যের ৫ জন অভিযাত্রী মারা যান। খারাপ আবহাওয়ার কারণে সেখানে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হয়। অবশেষে মঙ্গলবার উত্তরাখণ্ডের বাগেশ্বরের পুলিশ ও প্রশাসন ৫টি দেহ উদ্ধার করে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে দুর্ঘটনার পরই সবসময় সেখানকার প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছিল। দেহগুলি উদ্ধারের পর রাজ্য সরকারের উদ্যোগেই তাঁদের কফিনবন্দি দেহ বাড়িতে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হয়।