প্রতিবেদন : ১৯৫৯-এর ৬ ডিসেম্বর থেকে ২০২৩-এর ১৮ নভেম্বর। এক অভিশাপ বয়ে বেড়িয়েছেন বুধনি মেঝান। শুক্রবার তাঁর মৃত্যুর সঙ্গে ঘুচে গেল সেই অপবাদ। আসলে সত্যিই কি মুছল? বোধ হয় না। ‘নেহরুর বউ’ এই অপবাদ-কটাক্ষ বইতে হবে তাঁর পরিবারের আগামী প্রজন্মকে। ১৯৫৯ সালে ডিভিসির পাঞ্চেত জলাধারের উদ্বোধনে এসেছিলেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু।
আরও পড়ুন-ওপেনএআই-র সিইও পদ থেকে অপসারিত চ্যাটজিপিটি-স্রষ্টা অল্টম্যান
সেদিন আদিবাসীদের প্রতিনিধি হিসেবে বুধনি মেঝান ছিলেন সামনের সারিতে। তাঁর হাত ধরেই প্রধানমন্ত্রী পাঞ্চেত ড্যামের উদ্বোধন করেছিলেন। অনুষ্ঠানমঞ্চে নেহরুকে মালা পরিয়েছিলেন বুধনি। সৌজন্যবশত বুধনিকেও মালা পরিয়ে দেন নেহরু। এরপরেই বদলে যায় বুধনি মেঝানের জীবন। শুরু হয় এক অসহনীয় পরিস্থিতির। বুধনিকে পরিত্যাগ করে আদিবাসী সমাজ। গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করা হয় তাঁকে। ‘নেহরুর বউ’ বলে শুরু তীব্র কটাক্ষ। এরপর একপ্রকার হারিয়েই যান তিনি। পরবর্তীতে ডিভিসি কর্তৃপক্ষ তাঁকে খুঁজে বের করেন। তাঁর হারানো চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এক সময় কাজ থেকে অবসর বুধনি মেঝান। থাকতেন ডিভিসির আবাসনেই। তবে কখনওই গ্রামে ফিরে যেতে পারেননি তিনি। শনিবার পাঞ্চেত শ্মশানেই তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
আরও পড়ুন-আজ ছটপুজোয় ঘাটে মুখ্যমন্ত্রী
দীর্ঘদিন বার্ধক্যজনিত কারণে ভুগছিলেন তিনি। শেষকৃত্যের আগে ডিভিসির পক্ষ থেকে সম্মান জানানো হয় তাঁকে। সম্মান জানায় স্থানীয় পঞ্চায়েতও। শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু তাঁকে সম্মান জানিয়ে মালা পরিয়েছিলেন বলে আজীবন যে কুৎসিৎ অপবাদ, অবজ্ঞা, অবহেলা ও অপমান বুধনিকে বয়ে বেড়াতে হয়েছে, সেই অভিশপ্ত জীবন থেকে অবশেষে মুক্তি পেলেন তিনি।