প্রতিবেদন : এক-আধ কোটি নয়, ৭ কোটি টাকার বেশি দুর্নীতি। শুভেন্দু পরিবহণমন্ত্রী থাকাকালীন এই বিরাট দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে। ঘটনা নজরে আসার পরেই দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার এমডি দুর্গাপুরের কোকওভেন থানায় এফআইআর করেছেন। সংস্থার বক্তব্য, প্রাথমিকভাবে ৭ কোটি টাকার দুর্নীতি ধরা পড়লেও এই দুর্নীতি বিশাল অঙ্কের।
আরও পড়ুন-ভারত সেবাশ্রম সংঘের অতিথি নিবাসের ঘরের মেঝেতে মহিলার মৃতদেহ উদ্ধার
দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার টিকিট বিক্রিতেই দুর্নীতি হয়েছে। সংস্থার ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ডকে কাজে লাগিয়ে প্রায় ৮ কোটি টাকা তোলা হয়, যা দফতরে জমা পড়েনি। ২০০৭ সালে দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের নিউ ইউরেকা ক্লাব দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার বুকিং এজেন্টের বরাত পায়। এরপর ২০১৪ সালে ওয়েবেলের সঙ্গে পরিবহণ সংস্থা ইন্টিগ্রেটেড ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট পদ্ধতি চালু করে। এই ওয়েববেসড প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমেই টিকিট বিক্রি চালু হয়। পরিবহণ সংস্থার এমডি ময়ূরী ভাসু জানাচ্ছেন, নিগমের প্রিন্সিপাল টিকিট বুকিং এজেন্ট হিসেবে বরাত পায় দুর্গাপুরের ওই নিউ ইউরেকা ট্রাভেলস ক্লাব।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
এই সেন্টার থেকে পশ্চিম বর্ধমান, বহরমপুর, মালদহ, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, কলকাতা, হাওড়া, আসানসোল ও সিউড়ির টিকিট বিক্রি করে অভিযুক্ত। টানা ২০২০ সাল পর্যন্ত সংস্থার ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে ৭ কোটি ১৯ লক্ষ ১০ হাজার ৬৪৬ টাকা তুলে নেয়। জমা পড়েনি সংস্থার ঘরে। পুরোটাই আত্মসাৎ করা হয়। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত টাকা তোলে। এই সময়ে পরিবহণমন্ত্রী ছিলেন বর্তমান বিজেপির বিরোধী দলনেতা। এত বিরাট অঙ্কের তছরুপ নিশ্চিতভাবে পরিবহণমন্ত্রী গোচরে আনা হয়েছিল, নাকি সব জেনে-শুনেও নির্দিষ্ট কোনও স্বার্থে চেপে গিয়েছিলেন। এই প্রিপেইড পদ্ধতিতে ১ লক্ষ টাকা জমা করলে তবেই ১ লক্ষ টাকার টিকিট বিক্রি করা যায়। এজেন্সির সফটওয়্যারে কারচুপি করে অতিরিক্ত টিকিট বিক্রি করেছে এবং অতিরিক্ত টাকা জমা দেয়নি। অভ্যন্তরীণ অডিট ও তদন্তের পর আর্থিক গরমিল দেখা দিলে হিসেব চাওয়া হয়। কিন্তু এজেন্সি পুরোপুরি উপেক্ষা করে। এরপরই সংস্থার এমডি ময়ূরী ভাসু এফআইআর করেন।
আরও পড়ুন-মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে নয়াদিল্লিতে রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী, তাজপুর প্রসঙ্গে স্পষ্ট করলেন অবস্থান
বর্তমান বিরোধী দলনেতা যখন পরিবহণমন্ত্রী ছিলেন তখন এই দুর্নীতির শুরু। নিগমের তৎকালীন চেয়ারম্যান ছিলেন দীপ্তাংশু চৌধুরি। দু’জনেই এরপর পিঠ বাঁচাতে বিজেপিতে চলে যান। ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, বর্তমান বিরোধী দলনেতা পরিবহণমন্ত্রী থাকাকালীনই এই ঘটনা ঘটেছে। যোগসাজশ খতিয়ে দেখতে এফআইআর করা হয়েছে। নিঃসন্দেহে এটি বিরাট দুর্নীতি।