প্রতিবেদন : ঢাকঢোল পিটিয়ে ধর্মতলায় বিজেপির সভা। মঞ্চে দাঁড়িয়ে চেনা অঙ্কে তৃণমূলকে (TMC) একের পর এক আক্রমণ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। শাহের সভায় স্পষ্ট ছবি, রাম-বাম কংগ্রেসের আঁতাঁত, অনুপ্রবেশ নিয়ে দ্বিচারিতা। শুধু তাই নয়, সিবিআইয়ের এফআইআরে নাম থাকা নারদায় টাকা নেওয়া ‘রেজিস্টার্ড চোর’ শুভেন্দু অধিকারীকে পাশে নিয়ে শাসকদলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা অমিত শাহকে তোপ দাগল তৃণমূল (TMC)। দলের তরফে রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ ও দুই মন্ত্রী শশী পাঁজা এবং পার্থ ভৌমিক বিজেপির এই সভাকে পুরোপুরি ফ্লপ শো বলে কটাক্ষ করে একের পর এক প্রশ্নবাণে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিঁধলেন। মঞ্চ প্রস্তুত হলেও লোক কই? ২১ জুলাইয়ের মঞ্চকে চ্যালেঞ্জ করে ডাহা ফ্লপ বিজেপি। সর্বোপরি বুধবার বিজেপির সভা ছিল সুপার ফ্লপ। তৃণমূলের বক্তব্য, ওটা সভা ছিল নাকি পথসভা? মঞ্চের সামনে, পাশে, পিছনে, চওড়া রাস্তায় জমায়েত নেই। জায়গা ছোট করা হয়েছে ভিড় দেখাতে। সামনে চেয়ার দিয়ে জায়গা নষ্ট করা হয়েছে পরিকল্পিতভাবে। ছাড় ছাড় লোক দাঁড় করিয়ে ভিড় দেখানোর অপচেষ্টা। ড্রোন ক্যামেরা দিয়েও জমায়েত দেখানো যায়নি। কোনও স্বতঃস্ফূর্ততা নেই। গরম গরম ভাষণ দিলেও সামনে থাকা ভিড়ের থেকে কোনও প্রতুত্তর এল না। অতঃপর নোট দেখে ভাষণ শেষ করে মঞ্চ ছাড়লেন হতাশ শাহ। বহিরাগতদের এনে ভিড় দেখানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ। ২১ জুলাই তৃণমূলের মঞ্চের পিছনে যে লোক থাকে, বিজেপির সামগ্রিক জমায়েতেও সেটুকু নেই।
জুমলার ডালি নিয়ে ভাষণ দিতে এলেও বাংলার রাজনীতির কোনও ইতিহাস-ভূগোল জানেন না কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের শহিদ মঞ্চকে চ্যালেঞ্জ করে ধর্মতলার মঞ্চে সভা করলেও শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তাঁর ভাষণে একবারও জ্যোতি বসুর পুলিশের গুলিতে শহিদদের কথা একবারও মুখে আনলেন না শাহ। শহিদ তর্পণও করলেন না। যা সিপিএম জমানায় শহিদদের অপমান। বাংলার মানুষের কাছে অবিলম্বে ক্ষমা চাওয়া উচিত শাহের।
অনুপ্রবেশ নিয়েও দ্বিচারিতা করেন শাহ। এ-প্রসঙ্গে তৃণমূলের বক্তব্য, সীমান্তের দায়িত্বে থাকে বিএসএফ। যা অমিত শাহের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের আওতাধীন। অর্থাৎ বিএসএফ তাঁর নিয়ন্ত্রণে। তাহলে অনুপ্রবেশ যদি হয়েই থাকে, সেটা তো তাহলে অমিত শাহর দফতরেরই ব্যর্থতা।
দুর্নীতির প্রশ্নে শাহকে তোপ দেগে তৃণমূল বলে, সিবিআইয়ের এফআইআরে নাম থাকা গদ্দার অধিকারীর মতো রেজিস্টার্ড চোর, ঘুষখোর, তোলাবাজকে পাশে নিয়ে দুর্নীতি বিরোধিতার নাটক করছেন শাহ। বিজেপি দুর্নীতি বিরোধী হলে শুভেন্দুকে সাসপেন্ড কেন করেনি? ওকে গ্রেফতার না করে দুর্নীতি নিয়ে কোন মুখে কথা বলেন অমিত শাহ? আসল চোর তো শুভেন্দু। বিজেপি ওকে চোর বলেছিল।
অন্যদিকে, ধর্মতলায় বিজেপির সভায় বিজেপি-সিপিএমের সঙ্গে সরাসরি আঁতাঁতের অভিযোগ তোলা হল তৃণমূলের তরফে। শাহের ভাষণে একবারের জন্যও সিপিএম ও কংগ্রেসের বিরোধিতা করতে দেখা গেল না। তৃণমূলের তোপ, বিজেপির দুই দালাল, এ-রাজ্যের সিপিএম, কংগ্রেসের বিরোধিতা নেই অমিত শাহর মুখে। কারণ, এখানে তিনটে দল সমান। এই সভায় রাম-বাম ও কংগ্রেসের আঁতাঁত স্পষ্ট। সভাতে বাম-কংগ্রেসের লোকও ছিল। কিন্তু তাতেও বিজেপির জমায়েত পুরোপুরি ফ্লপ। ফলে সভার নামে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটানোর যে কৌশল নিয়েছিলেন, সেই কাজেও একশো শতাংশ ব্যর্থ শাহ।
আরও পড়ুন-বহিরাগতদের এনে ভিড় দেখানোর চেষ্টা, ব্যর্থ বঙ্গ বিজেপি! শাহের ফ্লপ শো ধর্মতলায়