প্রতিবেদন : সোমবার শুরু হচ্ছে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন। তার আগে শনিবার সর্বদল বৈঠক (All Party Meeting) ডেকেছে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রক। সেই বৈঠকে যোগ দেবেন তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন।
এবারের সর্বদল বৈঠক (All Party Meeting) উত্তপ্ত হতে চলেছে ভারতীয় দণ্ডসংহিতা ইস্যুতে। ইতিমধ্যেই বিলটি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই সূত্র ধরেই সর্বদল বৈঠকে সরব হবেন তৃণমূলের সাংসদরা । ভারতীয় দণ্ডসংহিতা, স্বাস্থ্য মিশনের মতো প্রকল্পগুলি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন। যদিও সেসব চিঠির কোনও জবাব পাওয়া যায়নি। সেই বিষয়টি সর্বদল বৈঠকে তুলে ধরার পরিকল্পনা করেছে তৃণমূল। মনরেগার কাজের বকেয়া টাকা নিয়ে ইতিমধ্যেই দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে দিল্লিতে আন্দোলন করেছে তৃণমূল। সেই ইস্যুতেও সরকারকে চেপে ধরার কৌশল নিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলিকে আর্থিকভাবে অবরোধ করে প্রতিহিংসার রাজনীতি চরিতার্থ করছে মোদি সরকার। মোদি জমানায় যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর ওপর বারবার আঘাত করা হচ্ছে বিভিন্নভাবে। সেই অভিযোগ তুলে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সরব হতে চলেছেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ডেরেক ও’ব্রায়েন। বিরোধীদের আপত্তি থাকা সত্ত্বেও লোকসভার বুলেটিন অনুযায়ী, সোমবার থেকে শুরু হতে চলা সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে পেশ হতে চলেছে দণ্ডসংহিতা বিষয়ক ফৌজদারি এবং দেওয়ানি বিলগুলি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কলকাতা সফরের সময় এই স্পর্শকাতর বিলগুলি নিয়ে সরব হয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অমিত শাহকে সরাসরি চিঠি লিখে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, বর্তমান ১৭তম লোকসভার মেয়াদ প্রায় শেষ হওয়ার মুখে। এই আবহে অত্যন্ত স্পর্শকাতর এই বিলগুলির পরিবর্তন সংক্রান্ত বিষয়টি নতুন সরকার এবং নতুন লোকসভার উপরেই ছাড়া উচিত। কেন এই বিলগুলি নিয়ে এত তাড়াহুড়ো সরকারের, সে নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, বিরোধীদের সব আর্জি নাকচ করে আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনে দণ্ডসংহিতা বিল পাশ করতে মরিয়া কেন্দ্র।
এদিকে লোকসভার সচিবালয় সূত্রে জারি করা বুলেটিনে দেখা যাচ্ছে, আসন্ন অধিবেশনে ১৮টি বিল পেশ করা হবে৷ বিতর্কিত দণ্ডসংহিতা তার অন্যতম।
এর পাশাপাশি জম্মু-কাশ্মীর বিল নিয়েও বাড়ছে উত্তেজনার পারদ। শীতকালীন অধিবেশনে আর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিল হতে চলেছে কাশ্মীর বিধানসভার পুনর্গঠন বিল। কাশ্মীর বিধানসভার আসন সংখ্যা ১০৭ থেকে বাড়িয়ে ১১৪ করতে চাইছে কেন্দ্র। ইতিমধ্যেই বিধানসভাভিত্তিক এলাকা পুনর্বিন্যাসের কাজ শেষ হয়েছে। সেটাকেই বিল আকারে সংসদে পেশ করা হবে। জম্মু ও কাশ্মীরে যে সাতটি আসন বাড়তে চলেছে তার অধিকাংশই হিন্দুপ্রধান। এর পাশাপাশি তেলেঙ্গানায় সেন্ট্রাল ট্রাইবাল ইউনিভার্সিটি গঠন, জম্মু-কাশ্মীর সহ পণ্ডিচেরি বিধানসভায় মহিলা সংরক্ষণ বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিল, মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ সংক্রান্ত বিল ও রাজ্যসভায় বকেয়া থাকা পোস্টঅফিস বিলও এবারের অধিবেশনে আনতে চলেছে সরকারপক্ষ।
আজ সর্বদল বৈঠক, থাকবে তৃণমূলও
দণ্ডসংহিতা বিল আনার প্রতিবাদ