পাহাড়ে পৌঁছেই বিরোধীদের একহাত নিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। জানালেন, “কথা দিয়ে কথা রাখি, বিরোধীরা রাখে না”। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরে উচ্ছ্বাস–উদ্দীপনায় ভাসল পাহাড়৷ সোমবার সকালেই কার্শিয়াং পৌঁছন অভিষেক৷ পাহাড়ের মানুষ তাঁকে দেখার জন্য রাস্তার দু’পাশে ভিড় করেছিলেন৷ কয়েক মিটার অন্তর তাঁর কনভয়কে দাঁড়াতে হয় মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সংবর্ধনার জন্য৷ জিটিএ প্রধান অনিত থাপা–সহ পাহাড়বাসী খাদা–মালা পরিয়ে স্বাগত জানান অভিষেককে৷ তিনিও পাল্টা অভিবাদন ফিরিয়ে দেন পাহাড়বাসীকে৷ রোহিণী বাজারে বিরসা মুণ্ডার মূর্তিতে মালা পরিয়ে তাঁকে শ্রদ্ধা জানান৷ এবং আধিবাসীদের জন্য তাঁর লড়াইকে কুর্নিশ করেন৷
এদিন তিনি (Abhishek Banerjee) জানান, মানুষের উপরে আস্থা রেখে যে যেখানে শক্তিশালী তাঁকে সেখানে লড়াই করার সুযোগ দেওয়া উচিত। লোকসভা নির্বাচন কে সামনে রেখে বিজেপি বিরোধী সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলিকে বার্তা দিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বাগডোগড়া বিমান বন্দরে নেমে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে দেখা করেন অভিষেক। এর পরে বাইরে বেরিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, সবাই মিলে বিজেপির স্বৈরাচারিতার বিরুদ্ধে লড়াই করছে। সময় অত্যন্ত কম। তাই যত দ্রুত সম্ভব নিজেদের ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে মানুষের সাথে সমস্ত ইগো রাগ দূরে রেখে যে যেখানে শক্তিশালী তাকে সেখানে লড়াই করার সুযোগ দেওয়া উচিত। এতে মানুষের লাভ হবে। এদিন কংগ্রেসের ফল খারাপ হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, কংগ্রেসের উপরে ভরসা রাখা আর না রাখার আমি কেউ না। লোকতন্ত্রে মানুষ শেষ কথা বলে। কংগ্রেসে যারা চায় সবাই এক সাথে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করবে তারা দ্রুত সবাইকে নিয়ে এক করার যে প্রয়াস করুক। ইডি সিবিআই বিষয়ে এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিজেপির ডবল ইঞ্জিন ইডি আর সিবিআই। তারা তো আছেই। এ নতুন কিছু নয়। ইডি সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে লড়াই করে বেশিদিন পক্ষে থাকতে পারবেন না। রাজস্থান নির্বাচনের ফল দেখলে দেখা যাবে খুব অল্প মার্জিনে কংগ্রেস হেরেছে। এখানে রাজনৈতিক মত পার্থক্য যা আছে। প্রথম থেকে সঠিক ভাবে রেক্টিফাই করে প্রস্তুতি নিলে এই ফল হতো না। ২ শতাংশের কম ভোটে বিজেপি জিতেছে আর কংগ্রেস হেরেছে। এই প্রয়াস যদি আরো আগে থেকে সবাইকে সাথে নিয়ে সঠিক ভাবে করলে। নির্বাচনের ফল ভালো হতো। লোকসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কে মুখ হবে? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কে মুখ হবে সে বলতে পারবো না। আমি খুব সামান্য একজন। এগুলো পার্টির কার্য কর্তারা ঠিক করবে। বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেসের ফল ভালো হবে। এখন কয়েকদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাজ চাককুঠিরেই থাকবেন।
আরও পড়ুন- বাংলাকে ‘অর্থনৈতিকভাবে অবরুদ্ধ’ করতে চাইছে কেন্দ্র, লোকসভায় অভিযোগ সুদীপের
কলকাতা থেকে রওনা হওয়ার আগে এদিন সকালে বিমানবন্দরে ৪ রাজ্যের নির্বাচনী ফলাফল নিয়ে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন৷ তিনি বলেন ‘একলা চলো’ নীতির জন্যই ৩ রাজ্যে ভরাডুবি হয়েছে কংগ্রেসের। এমনটাই মনে করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। একা কংগ্রেসের পক্ষে বিজেপিকে যে হারানো যাবে না, এদিন সেকথাও স্মরণ করিয়ে দেন। চার রাজ্যের নির্বাচনের ফল নিয়ে অভিষেক বলেন, জয়ীদের শুভেচ্ছা। পরাজিতদের প্রতি বার্তা, ভুল সংশোধন করে ভবিষ্যতে শক্তিশালী হয়ে লড়াইয়ে নামতে হবে। অন্যদিকে, দলের প্রবীণ-নবীন সদস্যদের নিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, দলে প্রবীণদের অবশ্যই দরকার। তবে ঊর্ধ্বসীমা থাকাও জরুরি। কারণ, বয়স হলে মানুষের কাজের ক্ষমতা কমে যায়। যে পরিশ্রম একজন পঞ্চাশ বছরের মানুষ বা চল্লিশ বছরের মানুষ করতে পারেন, সেটা বয়স বেড়ে গেলে সম্ভব নয়। একই সঙ্গে ফের মহুয়া মৈত্র নিয়ে অভিষেক জানান, নিজের লড়াই নিজেই লড়তে পারবেন মহুয়া। দল পাশে আছে।