প্রতিবেদন : মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে অশালীন মন্তব্যের প্রতিবাদ-বিক্ষোভে উত্তাল হল দিল্লি থেকে কলকাতা। তৃণমূল (TMC Protest) বিধায়করা তুমুল প্রতিবাদে সোচ্চার হলেন রাজ্য বিধানসভাতেও। বৃহস্পতিবার দিল্লিতে সংসদের বাইরে গিরিরাজ সিংয়ের পদত্যাগ দাবি করে সোচ্চার হলেন তৃণমূলের মহিলা সাংসদরা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অবমাননাকর মন্তব্যের প্রতিবাদে সংসদে গান্ধীমূর্তির নিচে সকাল ১০.৩০ থেকে ধরনায় বসেন তৃণমূল মহিলা সাংসদরা।
কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী গিরিরাজ সিংকে তাঁর মন্তব্যের জেরে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি করে তৃণমূল। হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে এদিন ধরনায় ছিলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র, মালা রায়, শতাব্দী রায়, প্রতিমা মণ্ডল, মৌসম বেনজির নুর, অপরূপা পোদ্দার। সাংসদ মালা রায় বলেন, গিরিরাজ সিংহের মন্তব্য অত্যন্ত অসম্মানজনক। গিরিরাজ সিং গোটা মহিলা সমাজকে অসম্মানিত করেছেন। সাংসদ মহুয়া মৈত্র বলেছেন, নির্লজ্জ গিরিরাজ সিং এবং বিজেপি নারীদের ক্ষমতায়ন এবং কর্তৃত্ব মেনে নিতে পারেন না। তিনি এখন সরাসরি মিথ্যা বলছেন, তিনি বলছেন এরকম কথা তিনি কখনও বলেননি। মহুয়ার কটাক্ষ— শাণ্ডিল্যজি, যে পাপির কোনও গুণ নেই, গোত্রকে ভালবাসে, বুঝে নিন তিনিই আমাদের মেরেছেন। তৃণমূলের গোয়া ইউনিটও সকাল সাড়ে ১১টায় গিরিরাজ সিংয়ের বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে।
আরও পড়ুন- বিবিসির চেয়ারম্যান পদে ভারতীয় বংশোদ্ভূত সমীর
বৃহস্পতিবার হাজরা মোড়ে পথে নেমে ধিক্কার জানিয়েছে মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস (TMC Protest)। গিরিরাজ সিংকে ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে এদিন হাজরা মোড়ে অভিনব প্রতিবাদ করল তৃণমূল। বাংলার কৃষ্টি-সংস্কৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে গানের সুরে সুরে নাচের মাধ্যমেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর অশালীন মন্তব্যের প্রতিবাদ জানান রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শশী পাঁজা, চৈতালী চট্টোপাধ্যায়, মৌসুমী দাস-সহ তৃণমূল মহিলা কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা। প্রত্যেকের কপালে ছিল কালো কালিতে ধিক্কার লেখা ছোট পোস্টার। মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা একজন মহিলার প্রতি উনি যে ধরনের ভাষা ব্যবহার করেছেন, এই অপসংস্কৃতি দেশের সঙ্গে খাপ খায় না। তারই প্রতিবাদে এই অভিনব বিক্ষোভ। দেখি মন্ত্রীর ঘুম ভাঙে কি না, ক্ষমা চান কি না। না হলে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ করব। মন্ত্রী শশী পাঁজার কথায়, নারীরা নরম মনের, তাই সকলে নারীদের আক্রমণ করতে চায়। কিন্তু সময় বদলেছে। বাংলা এই অপসংস্কৃতি বরদাস্ত করবে না। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে নিজের কুমন্তব্যের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।
এই ইস্যুতেই সকালে উত্তাল হয়েছে বিধানসভা অধিবেশনও। চরম ‘নারী বিদ্বেষী’ মন্তব্যের প্রতিবাদে এখানেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিংকে তীব্র আক্রমণ শানান শশী পাঁজা। পয়েন্ট অফ অর্ডার তুলে শশী পাঁজা বলেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে যে বক্তব্য রেখেছেন তা নারী-বিদ্বেষী। সমস্ত মহিলার জন্যই সেটা লজ্জার। অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় সকলকে শান্ত হওয়ার আবেদন জানিয়ে বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্কে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যে-মন্তব্য করেছেন তা বাঞ্ছনীয় নয়।