আজ শনিবার জাতীয় লোক আদালত অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা লিগ্যাল সার্ভিসেস অথরিটি আ্যক্ট অনুযায়ী। বছরে চারবার ওই লোক আদালত অনুষ্ঠিত হয়। কোভিড কালে ছেদ পড়েছিল। National Legal Services Authority (NLSA)-র লোক আদালত ওই একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন-আন্তর্জাতিক বাজারে আরও সস্তা হল অপরিশোধিত তেল, এদেশে কবে দাম কমাবে কেন্দ্র?
ওইদিন হাইকোর্ট-সহ বিভিন্ন আদালতে জমে থাকা কয়েক লক্ষ মামলার নিষ্পত্তি হবে। আমাদের রাজ্যে West Bengal State Legal Services Authority (SLSA)-র অফিস কলকাতার সিটি সিভিল কোর্টের ফার্স্ট ফ্লোরে। আজ শনিবার রাজ্যে (State Legal Services Authority বা SLSA)-সহ জেলা আদালতে (District Legal Services Authority বা DLSA) লোক আদালত অনুষ্ঠিত হবে। ওইদিন হাইকোর্টেও লোক আদালত অনুষ্ঠিত হবে High court Legal Services Committee-র তত্ত্বাবধনে।
আরও পড়ুন-প্রশ্নের মুখে দেশের নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা, এনসিআরবি রিপোর্ট
DLSA-এর চেয়ারম্যান ডিস্ট্রিক জজ।
SLSA-এর বর্তমান কার্যকরী চেয়ারম্যান হাইকোর্টের মাননীয় বিচারপতি আই পি মুখোপাধ্যায়। তাঁর সক্রিয় ভূমিকা, উৎসাহ, উদ্দীপনার ছোঁয়া পাবে রাজ্যের সব লোক আদালতই। পাশে পেয়েছেন স্টেট লিগ্যাল সার্ভিসেস অথরিটির মেম্বার সেক্রেটারি দেবকুমার সুকুল এবং রেজিস্ট্রার কাম ডেপুটি সেক্রেটারি সুকুমার মণ্ডল। সবার লক্ষ্য একটাই, সুষ্ঠুভাবে, সর্বাঙ্গীন সুন্দরভাবে লোক আদালত সম্পন্ন করা।
লোক আদালত কী? এটা এমন একটা সর্বজনীন ফোরাম যেখানে বিকল্প বিবাদ ও মোকাদ্দমা পদ্ধতি অনুযায়ী আইনের বৈধতা প্রাপ্ত হয়ে দ্রুত নিষ্পত্তি হয় আপসের মাধ্যমে। সাধারণত রেল, টেলিফোন, বিমা কোম্পানি-সহ গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃতের ক্ষতি পূরণ, অর্থনৈতিক সংক্রান্ত মামলা, জায়গাজমি সংক্রান্ত এবং অন্যান্য মামলা-সহ ফৌজদারি মামলা (যে মামলাগুলো ক্ষমাযোগ্য অপরাধ বলে গণ্য হয়) যা দীর্ঘদিন ধরে কোর্টে জমে আছে, নিষ্পত্তি হবে ওই দিনে। পেন্ডিং অ্যান্ড প্রিডিসপুট লিটিগেশন উভয় প্রকার মামলার এখানে তাৎক্ষণিক নিষ্পত্তি হয়। সারা রাজ্য জুড়ে কয়েক লক্ষ আবেদনপত্র জমা পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করা হবে এই লোক আদালতের মাধ্যমে আশা করা যায়।
আরও পড়ুন-কল্যাণের যুক্তিতে খেই হারালেন অধ্যক্ষ
লোক আদালত কোর্টের অংশ, তাই এখানে আইনের সিলমোহর থাকে। এখানে বিচারক হিসেবে থাকেন একজন রিটায়ার্ড বা সিটিং জজ-সহ একজন আইনজীবী এবং একজন সমাজকর্মী। বাদী-বিবাদীর আইনজীবীর উপস্থিতিতে উভয় পক্ষের সম্মতির ভিত্তিতে ওই মামলাগুলো নিষ্পত্তি হয়। তবে এখানে আইনজীবীর উপস্থিত অপরিহার্য নয়। উভয় পক্ষের সম্মতির ভিত্তিতে লোক আদালতের বিচারকগণ আদেশ দান করেন। দু’পক্ষের সম্মতিতে হয় বলে উচ্চ আদালতে ওই আদেশের বিরুদ্ধে আর আপিল করা যায় না। লোক আদালতের মাধ্যমে যেমন কোর্টের হয়রানি, মামলা খরচ থেকে বাঁচা যায় তেমনি কোর্টের দীর্ঘসূত্রতা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এখানে লিটিগেন্ট সর্বোচ্চ বেনিফিট পায়। পেইন অ্যান্ড প্লেজারের পরিবর্তে শুধু প্লেজার পাওয়া যায়। এই জাতীয় লোক আদালত শুরু হয় ১৯৮৮ সাল থেকে। এই লোক আদালতের জনক ছিলেন ভারতের প্রাক্তন বিচারপতি পি এন ভগবতী। ১৯৯৮ সালে ২৩ এপ্রিল পশ্চিমবঙ্গে প্রথম লোক আদালত অনুষ্ঠিত হয়। এই আদালত সত্যি সত্যি জনগণের আদালত। জনগণের কাছে এই লোক আদালত নিছক আদালত নয়, বলা যেতে পারে মুক্তির অঙ্গন।