প্রতিবেদন : ইজরায়েলের হামলা থেকে বাঁচতে গাজার সুড়ঙ্গে লুকিয়ে রয়েছে হামাসের শীর্ষ নেতারা। তাই লাগাতার বোমা হামলার পাশাপাশি ইঁদুরের মতো গর্তে লুকিয়ে থাকা হামাসকে ধ্বংস করতে সুড়ঙ্গে সমুদ্রের জল পাম্প করতে শুরু করল ইজরায়েল (Israel) সেনা। পুরো সুড়ঙ্গ প্লাবিত করতে এক সপ্তাহেরও
বেশি সময় লাগতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এভাবেই হামাসের ভূগর্ভস্থ পরিকাঠামো ধ্বংস করা যাবে বলে মনে করছে ইজরায়েল।
তবে ইজরায়েলের (Israel) এই পদক্ষেপে উদ্বেগ ও আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে। কারণ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর ফলে গাজায় জলবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে। সুড়ঙ্গের এই জল অচিরেই পানীয় জলকে সংক্রমিত করবে।
ইজরায়েলের লাগাতার হামলার মুখে বর্তমানে হামাসের বেঁচে থাকার অন্যতম উপায় হল গাজা জনপদের নিচে মাকড়সার জালের মতো বিস্তৃত এই দীর্ঘ সুড়ঙ্গ জাল। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুড়ঙ্গে সমুদ্রের জল পাম্প করার প্রক্রিয়া এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। ভূমধ্যসাগরের জল পাইপের মাধ্যমে পাম্প করে সুড়ঙ্গগুলি ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ইজরায়েল জানিয়েছে, হামাসের এই সুড়ঙ্গের জাল ছিন্ন করতেই গাজায় তারা স্থলপথে অভিযান চালিয়েছে। অভিযানের মূল উদ্দেশ্যই ছিল সুড়ঙ্গ ধ্বংস করা। হামাস এই সুড়ঙ্গগুলি বিভিন্ন পণ্য পাচার থেকে শুরু করে অস্ত্রভাণ্ডার তৈরি ও ইজরায়েলে হামলা চালানোর মতো বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করে থাকে। ইজরায়েলের মতে, এই সুড়ঙ্গগুলিতেই রকেট এবং অন্যান্য যুদ্ধাস্ত্র লুকিয়ে রেখেছে হামাস। সুড়ঙ্গেই রয়েছে হামাসের কমান্ড সেন্টারও। একবার এই সুড়ঙ্গ ধ্বংস করতে পারলে হামাসের শিড়দাঁড়া ভেঙে যাবে বলে মনে করছে তেল আভিভ।
পাশাপাশি ইজরায়েলের দাবি, পণবন্দিদের এই সুড়ঙ্গে আটকে রেখেছে হামাস। কিন্তু হামাস জঙ্গিদের নিকেশ করার লক্ষ্যে সুড়ঙ্গ ভাসিয়ে দিলে, পণবন্দিদের কী হবে, সেই প্রশ্নটাও সমান্তরালভাবে উঠতে শুরু করেছে। পণবন্দিদের পরিবারের সদস্যরা প্রথম থেকেই পণবন্দিদের মুক্ত করার জন্য বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করছেন। এই ক্ষেত্রেও প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাঁরা সুড়ঙ্গ প্লাবিত না করার আবেদন জানিয়েছেন। সুড়ঙ্গগুলি ভাসিয়ে দিলে তাঁদের প্রিয়জনদেরও মৃত্যু হবে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা। তবে, সুড়ঙ্গ ভাসিয়ে দেব বললেই দিতে পারবে না ইজরায়েল। গাজার নীচে সুড়ঙ্গপথের মোট দৈর্ঘ্য ৪৮০ কিলোমিটারেরও বেশি বলে শোনা যায়। সেই সঙ্গে সুড়ঙ্গগুলি পুরু দরজা দিয়ে সুরক্ষিত, যে দরজাগুলি বিস্ফোরণেও ভাঙবে না। ফলে সুড়ঙ্গ ভাসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হলেও তার সাফল্য নিয়ে সংশয় রয়েছে। সেইসঙ্গে এই কাজের জন্য দীর্ঘ সময় লাগতে পারে ইজরায়েলের।