প্রতিবেদন : গীতাপাঠের মতো পবিত্র বিষয় নিয়ে বাংলাকে অপমান করল বিজেপি, অপমান করল স্বামী বিবেকানন্দকে। গীতা নিয়ে যেভাবে রাজনীতি করতে নেমেছে বিজেপি, এদিন তার তীব্র নিন্দা করে তৃণমূল কংগ্রেস। রবিবার সাংবাদিক বৈঠক করে বিজেপিকে সপাট জবাব দেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, শিল্পমন্ত্রী ডাঃ শশী পাঁজা, তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তাঁদের সাফ কথা, গীতাপাঠের বিরোধী নয় তৃণমূল। কিন্তু বিজেপি যেভাবে গীতাপাঠ নিয়ে রাজনীতি করছে তৃণমূল তার বিরোধী। বিজেপি এদিন গীতাপাঠের আসর বসিয়ে কুৎসিত ভাষায় অপমান করেছে স্বামী বিবেকানন্দকে। অপমান করেছে বাংলার। স্বামী বিবেকানন্দের বিখ্যাত উক্তি গীতাপাঠের থেকে ফুটবল খেলা শ্রেয়, সেই উক্তিকে বামপন্থীদের অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্করীর উক্তি বলে আখ্যায়িত করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। তিনি স্বামী বিবেকানন্দকে কার্যত বামপন্থীদের দলে পাঠিয়ে ছেড়েছেন। তাঁর এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছে তৃণমূল। সুকান্তকে ধিক্কার জানিয়ে অবিলম্বে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছেন ব্রাত্য বসু, শশী পাঁজা, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, পার্থ ভৌমিক ও কুণাল ঘোষ-রা।
আরও পড়ুন-হার রাম-বাম জোটের, তমলুকে তৃণমূল জিতল সমবায়ে
বিজেপির লক্ষকণ্ঠে গীতাপাঠে এদিন মাঠের অর্ধেকও ভরেনি, সাকুল্যে ১০ হাজার লোক হবে কি না সন্দেহ। এদিন সেই গীতপাঠের সপক্ষে বলতে গিয়ে স্বামী বিবেকানন্দকে ‘বামপন্থী প্রোডাক্ট’ বানিয়ে ছেড়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। তৃণমূল তাঁকে তুলোধনা করে বলে, নিজেকে ডক্টরেট বলে দাবি-করা অধ্যাপক সুকান্ত মজুমদার কি জানেন, এটা স্বামী বিবেকানন্দের বিখ্যাত বাণী? শুধু ধর্মগ্রন্থ পাঠ নয়, শরীরচর্চা, দলবদ্ধ খেলার মাধ্যমে জীবন গঠন করার কথা বলেছেন স্বামীজি। অথচ তাঁর বাণী মেনে চলাকে বামপন্থী প্রোডাক্ট বলার অর্থ কি বিবেকানন্দকেই বামপন্থী বলা নয়! তাঁর বাণীতে রাজনৈতিক রং লাগিয়ে অপমান নয়! প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ব্রিগেডে গীতাপাঠ হতে পারে না। এটা অনেকটা অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টসে জলসা হওয়ার মতো। রাজনৈতিক জায়গায় ধর্মের জিনিস মেনে নেওয়া যায় না। সোনার পাথরবাটির মতো বিষয়টা। সমস্ত ধর্ম-জাতপাতকে সম্মান জানাতে চাই আমরা। বিজেপি শুধু মুখে বলে সবকা সাথ সবকা বিকাশ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেটা করে দেখান।
মন্ত্রী ডাঃ শশী পাঁজা ও চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য়ের কথায়, সুকান্ত মজুমদারের মতো বিজেপি নেতারা বাংলার মনীষীদের অপমান করেন। এর আগে রবীন্দ্রনাথ, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সবার সম্পর্কে উল্টোপাল্টা মন্তব্য করে ইতিহাসের বিকৃতি ঘটিয়েছেন। সুকান্তকে এই মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে।
আরও পড়ুন-অসম্মানিত হতে পারেন, উপাচার্যরা অবিলম্বে ইস্তফা দিন : ব্রাত্য বসু
তৃণমূল মুখপাত্র তথা রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের কথায়, স্বামী বিবেকনন্দকে অপমান করেছেন সুকান্ত মজুমদার। অপমান করেছেন বাংলার। গীতার সারমর্ম বোঝার ক্ষমতা সুকান্তদের মতো নেতাদের নেই। মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক বলেন, ইতিহাসের অ-আ, ক-খ জানেন না বিজেপির নেতারা। এইরকম অশিক্ষিতরা রাজনীতির আঙিনায় এসে এই ধরনের উক্তি করে প্রকৃত হিন্দু ধর্মের প্রচারক স্বামী বিবেকানন্দকে অসম্মান করেছেন। রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের ‘যত মত তত পথ’কে অপমান করেছেন। বাংলার মানুষে এর জবাব দেবেন। যুবনেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য বলেন, বিজেপি স্বামীজিকে বামপন্থী এবং অশিক্ষিত বলেছে ঘুরপথে। এটা বাংলা ও বাঙালির লজ্জা।