সেঞ্চুরিয়ন, ২৬ ডিসেম্বর : বৃষ্টিবিঘ্নিত বক্সিং ডে টেস্টের প্রথম দিনে উজ্জ্বল কে এল রাহুল। কাগিসো রাবাডার আগুনে স্পেলে ভারতীয় টপ অর্ডার যখন ধরাশায়ী, তখন ১০৫ বলে ঝকঝকে ৭০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে দলকে লড়াইয়ে রাখলেন ডানহাতি কর্নাটকি। মেরেছেন ১০টি বাউন্ডারি ও ২টি ওভার বাউন্ডারি।
যা দেখে মুগ্ধ সুনীল গাভাসকরের মতো ক্রিকেট ব্যক্তিত্ব। তিনি স্পষ্ট বলছেন, ‘‘রাহুলের এই ইনিংস সেঞ্চুরির সমান দামি। কঠিন পিচে প্রবল চাপ মাথায় নিয়ে যে ব্যাটিং করল, তা অবিশ্বাস্য।’’ ভারতীয় দলের ব্যাটিং কোচ বিক্রম রাঠোর আবার মিডিয়ার মুখোমুখি হয়ে বলে গেলেন, ‘‘রাহুল আমাদের ক্রাইসিস ম্যান। চাপের মুখেই ওর সেরাটা বেরিয়ে আসে।’’ সত্যিই অসাধারণ ব্যাট করলেন রাহুল। দক্ষিণ আফ্রিকার বাঁ হাতি পেসার মার্কো জেনসেনকে কভারের উপর দিয়ে যে ছয়টা রাহুল মেরেছেন, তা এক কথায় অনবদ্য। খারাপ আলোর জন্য দিনের খেলা যখন বন্ধ হয়, তখন ভারতের রান ৮ উইকেটে ২০৮। ক্রিজে রাহুলের সঙ্গে রয়েছেন টেলএন্ডার মহম্মদ সিরাজ (অপরাজিত ০)।
স্বস্তিতে নেই দক্ষিণ আফ্রিকাও (India vs South africa)। এদিন ফিল্ডিং করার সময় বাঁ পায়ের হ্যামস্ট্রিংয়ে লেগেছে টেম্বা বাভুমার। তাঁর স্ক্যান হয়েছে। প্রোটিয়া অধিনায়ক এই টেস্টে মাঠে নামতে পারবেন কি না, তা পরিষ্কার হবে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে। বৃষ্টির জন্য খেলা শুরু হয়েছিল নির্ধারিত সময়ের আধ ঘণ্টা পর। আর যখন বন্ধ হল, তখনও দিনের খেলা বাকি ছিল ৩১ ওভার।
এদিন মাত্র ৫ রান করে রাবাডার পাতা ফাঁদে ধরা পড়লেন রোহিত শর্মা। পুল মারতে গিয়ে ডিপ ফাইন লেগে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরলেন ভারত অধিনায়ক। যশস্বী জয়সওয়াল (১৭) নাদ্রে বার্গারের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা মেরে উইকেটের পিছনে ধরা পড়েন। তিন নম্বরে ব্যাট করতে নামা শুভমন গিলও (২) বার্গারের শিকার।
২৪ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল টিম ইন্ডিয়া (India vs South africa)। ওই পরিস্থিতিতে খেলাটা ধরেন বিরাট কোহলি ও শ্রেয়স আইয়ার। তবে শুরুতেই বিরাট ও শ্রেয়সের সহজ ক্যাচ মিস হয়। নইলে চাপ আরও বাড়ত। জীবনদান পেয়ে অবশ্য ভালই ব্যাট করছিলেন দু’জনে। কিন্তু লাঞ্চের পর প্রথমে শ্রেয়স এবং পরে বিরাটকে আউট করে জোড়া ধাক্কা দেন রাবাডা। তাঁর ইন সুইঙ্গার শ্রেয়সের (৩১ রান) ব্যাট-প্যাডের ফাঁক দিয়ে গলে উইকেট ভেঙে দেয়। বিরাট আবার ৩৮ রান করে অফ স্টাম্পের বলে খোঁচা মেরে প্যাভিলিয়নে ফেরেন। এরপর রবিচন্দ্রন অশ্বিনও মাত্র ৮ রান করে রাবাডার শিকার হন।
ভারতকে লড়াইয়ে ফিরিয়ে আনেন রাহুল ও শার্দূল ঠাকুর। ক্রিজে এসেই ইতিবাচক ব্যাটিং করেছেন শার্দূল। একবার বল তাঁর হেলমেটে লাগে। আরেকবার রাবাডার বলে হাতে চোট পান। পরের বলেই রাবাডাকে চার মারতে গিয়ে কভারে ডিন এলগারের হাতে ধরা পড়েন শার্দূল (২৪ রান)। এরপর জসপ্রীত বুমরাকে (১) ফেরান জেনসেন। রাবাডা ৪৪ রানে ৫ উইকেট দখল করেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পাঁচশো উইকেটের মাইলস্টোন এদিনই ছুঁয়ে ফেললেন তিনি।
আরও পড়ুন- পাকিস্তানের বিরুদ্ধে না খেলার শাস্তি! অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ছাড়পত্র পেলেন না নাগাল