প্রতিবেদন : সন্দেশখালি নিয়ে একতরফা মিথ্যাচারের পাল্টা জবাব দিল তৃণমূল কংগ্রেস। শনিবার দলের তরফে রীতিমতো অতীতের উদাহরণ তুলে ধরে সামনে আনা হল বিজেপি-সিপিএমের কুকীর্তি। লাগাতার কুৎসা ও প্ররোচনামূলক বক্তব্যের পাল্টা বক্তব্য রেখে তৃণমূল নেতৃত্ব বুঝিয়ে দিল লোকসভা নির্বাচনের আগে বাংলার বদনাম করার জন্য পরিকল্পিত চিত্রনাট্য তৈরি করে এজেন্সিকে মাঠে নামিয়েছে বিজেপি।
আরও পড়ুন-কল্যাণে বিদ্ধ অভিজিৎ
অতীতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে একাধিকবার হামলার ঘটনা ঘটলেও কেন্দ্রীয় সরকার কোনও পদক্ষেপই করেনি। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ শনিবার একের পর এক উদাহরণ তুলে ধরেন। তাঁর কথায় নয়ডা, ঢেঙ্কানল, তিরুবনন্তপুরম-সহ একাধিক জায়গায় অভিযান চালাতে গিয়ে বিজেপি-সহ অন্যান্য দলের লোকেদের কাছে কখনও বন্দি, কখনও-বা মারধর খেতে হয়েছে ইডি-সিবিআই অফিসারদের। একাধিক ঘটনা ঘটলেও একটির বিরুদ্ধেও কেন্দ্রীয় সরকার কোনও পদক্ষেপ করতে পারেনি। তার কারণ, বেশিরভাগ ঘটনাই ঘটেছে বিজেপি-শাসনকালে ও বিজেপি-শাসিত রাজ্যে। শুক্রবার সন্দেশখালির ঘটনায় বাংলায় যাঁরা বিপ্লবী সাজছেন, রাজ্যের বদনাম করছেন, তাঁদের একাধিক উদাহরণ দিয়ে স্মরণ করে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
দলের সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছেন, তৃণমূলের সাফ কথা, তারা কোনও তদন্ত আটকাতে চায় না। দুর্নীতি সমর্থনও করে না। কিন্তু ক্রমশ বিজেপির নির্দেশে তৃণমূল নেতাদের বাড়িতে যাবে, রেড করবে— ফলে সেই সময়ে পরিচিত মুখদের থেকে স্বাভাবিক ভাবে একটা প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। সে-কারণে আমজনতাকে আমরা বলছি ওদের পাতা ফাঁদে পা দেবেন না। কুণাল বলেন, ইডি শুধু তৃণমূলের বাড়ি যাবে, বিজেপির বাড়ি যাবে না, যা খুশি তাই করবে— এসব নিয়ে প্রশ্ন করলে বিজেপি-সিপিএম-কংগ্রেস, এক শ্রেণির মিডিয়া রে-রে করে তেড়ে আসবে তা তো হতে পারে না! এজেন্সি বা তদন্তকারী দলের উপর হামলা কাম্য নয়। দিল্লির কাছে গ্রেটার নয়ডার সোনাপুরাতে যমুনা এক্সেপ্রেসে ১২৬ কোটি টাকার কেলেঙ্কারির তদন্ত করতে গেলে ইডির টিমকে আটকে রাখা হয়। তখন কেন্দ্রীয় সরকার কী করছিল! কেরলের তিরুবনন্তপুরমের সিপিএম নেতা বালকৃষ্ণনের বাড়িতে সিবিআই গেলে তাদের আটকে রাখা হয়।
আরও পড়ুন-অভিষেক আজ পৈলানে, শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ প্রবীণদের
২০১৫ সালে সিবিআইকে আক্রমণ করে আয়কর দফতরের কর্মীরা। কিছুদিন আগে উত্তরপ্রদেশে একজন গ্যাংস্টারকে ধরতে গিয়ে ৭-৮ জন পুলিশকর্মী নিহত হয়। আমরা এগুলোকে সমর্থন করছি না। কিন্তু বাংলাকে একটা চক্রান্তের আবহে এনে পরিকল্পিত চিত্রনাট্য অনুযায়ী সবটা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আর সিপিএমের তো নিজেদের অতীত মনে করে মুখ খোলাই উচিত নয়। মনে পড়ে কমরেড ডিসি পোর্ট বিনোদ মেহেতাকে কি নৃসংশভাবে কুপিয়ে-পুড়িয়ে খুন করা হয়েছিল! তিনি তো দুষ্কৃতী ধরতে গিয়েছিলেন। ওসি তিলজলাকে খুনের ঘটনা এখনও বাংলার মানুষ ভোলেননি। ফলে বিজেপি-সিপিএমকে মনে রাখতে হবে তাদের অতীত ভুলে গলার শিরা ফুলিয়ে টিভিতে ভাষণ দিলেই অতীতটা বদলে যায় না।