মঙ্গলবার মোট ৫৪২ কোটি টাকার প্রকল্প উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর-১ ব্লকে বেশ কয়েকয়টি প্রকল্পের উদ্বোধন, শিলান্যাস এবং সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে তিনি জয়নগরের পরিস্থিতি সম্পর্কে বলেন, ‘এখানে ঝড় জলে রাস্তা ভেঙে গেছে জানি। ২০২৩-২৪ এ আরও ১২ হাজার গ্রামীণ রাস্তা করছি। মোট ৪ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। জরুরি জায়গা বেছে নিয়ে আগে কাজ হবে। ৩১ জানুয়ারির মধ্যে সব সবুজ সাথী সাইকেল নবম শ্রেণীর পড়ুয়াদের দিয়ে দিতে হবে। দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ট্যাবও দিয়ে দিতে হবে। ওরা টাকা না দিলেও কাজ হবে। ৮.৫ লাখ লোক কাজ পাবেন এই আগামী দিনের পথশ্রী প্রকল্পে। আমরা একা ৪০ শতাংশ ১০০ দিনের কাজ দিয়েছি। ভাঙড়, বজবজ, মেটিয়াবুরুজ আমার পরিচিত। এই জায়গাগুলোতে কিছু ভাড়াটিয়া গুণ্ডা দিয়ে কিছু দিন আগে কিছু মানুষকে মেরে ফেলা হয়েছে। প্রশাসনকে বলব কড়া হতে। এত টাকা পায় কোথা থেকে? মানুষ খেতে না পেলে একটা টাকা দেয় না। আর মানুষ মারতে ১৫লক্ষ টাকা খরচ করে গুন্ডা আমদানি করবে এটা হবে না। বাংলা শান্তির জায়গা।’
আরও পড়ুন-ইডিকর্তার বিরুদ্ধে এফআইআর, কেন্দ্রকে তোপ দেবাংশুর
সংখ্যালঘুদের জন্য এদিন তিনি বলেন, ‘মেটিয়াবুরুজে বড় টেক্সটাইল হাব তৈরি করেছি। তারা দর্জির কাজ ভাল করে। পড়াশোনায় উন্নত হচ্ছে। আমার সেল্ফ হেল্ফ গ্রুপের মেয়েরা আছে। সব থেকে বেশি সেল্ফ হেল্ফ গ্রুপ বাংলায় আছে। দেশের মধ্যে সংখ্যালঘু উন্নয়নে বাংলা প্রথম। এখানে কবরস্থান, তীর্থস্থান, শশ্মান সব উন্নত হচ্ছে।’
আরও পড়ুন-‘আড়াই কোটি টাকা দিয়ে জয়নগরে মোয়া হাব হবে’ প্রতিশ্রুতি মুখ্যমন্ত্রীর
বিরোধীদের অপবাদের প্রতিবাদ করে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ কেউ বলছে আমি গুণ্ডাদের নেতা। সারা জীবন করে এলাম মানুষের কাজ। আমি নেতা নই। কর্মী। মানুষের পাহাড়াদার। কোনও মানুষ বিপদে পড়লে আমরা ছুটে যাই। আমি নবান্নে যাব। রশিদ আলি অসুস্থ রয়েছে। আমায় সবটাই দেখতে হবে। কিছু টিভি চ্যানেল আছে সারাদিন দেখায় ওই রাস্তা খারাপ, জল নেই। আমি বলি তোমাদের অনেক টাকা আছে। যেটা কেন্দ্র দিচ্ছে না তোমরা দিয়ে দাও। আমরা সব করে দেব। বিজেপি উল্টো পাল্টা ভিডিয়ো ছাড়ে। এটা বিশ্বাস করবেন না। থানায় ডায়রি করুন।’
আরও পড়ুন-‘ধর্ম যার যার ঈশ্বর সবার’ বার্তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
রামমন্দির প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, ‘কালকে আমায় জিজ্ঞাসা করছিল রাম মন্দির নিয়ে কী বক্তব্য। আমার যেন আর কোনও কাজ নেই। এই একটাই কাজ। আপনারা করুন ভোটের আগে গিমিক শো। আমি বলেছি, ‘ধর্ম যার যার ঈশ্বর সবার’। আমাদের লোকের উপর অনেক অত্যাচার চলছে। ইন্ডিয়া চলছে একটা এজেন্সি দিয়ে। বিলকিস বানু মামলায় অভিযুক্তদের ছেড়ে দেওয়া হল। সেখানে আমাদের সাংসদ মহুয়া মৈত্র ছিলেন। তাঁকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সেও পার্টি ছিল। এটা কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের জয়। কুম্ভমেলার সময় টাকা দেয়। আর গঙ্গা সাগরের সময় কচুকলা? ৩৪ বছরে সিপিএম মানুষের মুণ্ডু নিয়ে খেলেছে। ওদের সঙ্গে আপোশ করব না। আজ টিভির পর্দায় বসে বড় বড় কথা বলে। কী করছিল ৩৪ বছরে? নাপিত-ধোপা-স্কুল-কলেজ বয়কট, কৃষিজমি দখল করেছে। এখন মানুষ কত ভাতা পাচ্ছে। ইঁদুর-চামচিকিরা যেভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে আপনার অর্জিত পয়সা লুঠ করে নিয়ে যাবে। সিজার লিস্টও পাবেন না। মুখ্যসচিবকে জানতে তাইব, বগটুইতে যে জিনিসপত্র নিয়েছিল সিবিআই সেগুলি কি ফেরত পাওয়া গিয়েছে?’