প্রতিবেদন : অসম্পূর্ণ রামমন্দির (Ram Mandir) ভোটের আগে তড়িঘড়ি উদ্বোধনের জন্য মোদি সরকারের সমালোচনা করায় এবার শঙ্করাচার্যদের অপমান করলেন বিজেপির মন্ত্রী। অযোধ্যার রামমন্দির উদ্বোধনে যাচ্ছেন না দেশের চার শঙ্করাচার্য। এই উদ্বোধন অশাস্ত্রীয় বলে মত তাঁদের। অভিযোগ উঠেছে, মন্দির উদ্বোধনের নামে রাম নামের অপমান করা হচ্ছে এবং হিন্দু ধর্মকে সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। সনাতন ধর্মের অবমাননা করা হচ্ছে অভিযোগ তুলে যখন দেশের শঙ্করাচার্যরা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার আমন্ত্রণ গ্রহণ করেননি তখন তাঁদের বিরুদ্ধে কুৎসা- অপপ্রচারের রাজনীতি শুরু করে দিল বিজেপি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নারায়ণ রানে সরাসরি হিন্দু ধর্মের জন্য শঙ্করাচার্যদের অবদান নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন। গোটা বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরই সমাজতাত্ত্বিক ও হিন্দু ধর্মের বিশ্লেষকরা বলছেন, অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধন নিয়ে ক্রমাগত মোদি সরকারের দম্ভ ও অসহিষ্ণুতার ছবিটাই ফুটে উঠছে।
আরও পড়ুন-মকর সংক্রান্তিতে শুভেচ্ছাবার্তা অভিষেকের
লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করতে শুরু করেছে গেরুয়া শিবির। রামকে সামনে রেখে ক্ষমতা ধরে রাখাই তাদের ছক। হিন্দুত্বের ধ্বজা ধরে ভোট বৈতরণী পার হওয়ার চেষ্টায় আগামী ২২ জানুয়ারি তড়িঘড়ি অসম্পূর্ণ রামমন্দির (Ram Mandir) উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। আর এতেই সনাতন ধর্মের নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলছেন শঙ্করাচার্যরা। উত্তরাখণ্ডের জ্যোতিষপীঠের শঙ্করাচার্য স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী জানিয়েছেন, চার শঙ্করাচার্য সেদিন উপস্থিত থাকবেন না। কারণ সনাতন ধর্মের নিয়ম এই অনুষ্ঠানে মানা হচ্ছে না। মন্দির পুরোপুরি তৈরি না করেই রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা সম্পূর্ণ শাস্ত্রবিরুদ্ধ। পুরীর শঙ্করাচার্য স্বামী নিশ্চলানন্দ সরস্বতীর দাবি, মোদি সরকারের এই প্রচেষ্টা আসলে কোনও পবিত্র মন্দির নয়, এক সমাধিকে ঘিরে। আর মূর্তিতে প্রাণপ্রতিষ্ঠা পুরোহিত বা সেবায়েতের কাজ, ওটা প্রধানমন্ত্রীর কাজ নয়। হিন্দু ধর্মের শীর্ষ ধর্মগুরুরা মনে করছেন, মোদিই থাকবেন অনুষ্ঠানের কেন্দ্রে। তা নিয়েই রাজনৈতিক প্রচার চলবে। এর ফলে সনাতন শাস্ত্রের দিকটি অবহেলিত হবে। কেন্দ্রের পদক্ষেপের সমালোচনা করতেই পাল্টা শঙ্করাচার্যদের তোপ দেগে আসরে নামেন পদ্ম শিবিরের নেতারা। মহারাষ্ট্রের পালঘরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নারায়ণ রানে বলেন, ওঁদের মন্দিরকে আশীর্বাদ করা উচিত নাকি সমালোচনা করা উচিত? এর মানে হল শঙ্করাচার্যরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখেন। এই মন্দির রাজনীতির ভিত্তিতে নয়, ধর্মের ভিত্তিতে তৈরি। রাম আমাদের
ভগবান। এরপরই রানের কটাক্ষ, এই শঙ্করাচার্যরা বলুন হিন্দুধর্মের জন্য ওঁদের অবদান কী? বিজেপি মন্ত্রীর এই উদ্ধত মন্তব্যে নিন্দার ঝড় উঠেছে সর্বত্র।