সুস্মিতা মণ্ডল, গোসাবা : সুন্দরবনের দ্বীপভূমি গোসাবায় ধুয়েমুছে গেল বিজেপি। মাত্র ছ’মাস আগে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী এই কেন্দ্রে পেয়েছিলেন ৮২ হাজার ১৪টি ভোট। কিন্তু আমফান-ইয়াসের মতো একাধিক ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিজেপির প্রার্থী থেকে নেতা-কর্মী কারওরই দেখা পাননি এখানকার মানুষজন। তাঁদের অসহায় অবস্থায় পাশে এসে দাঁড়াননি এই দলের কেউ। করোনার জেরে এখানকার বহু মানুষ কাজ হারিয়ে সংকটে পড়েছেন। সেই সময়েও প্রান্তিক মানুষগুলো পাশে পাননি বিজেপির কাউকে। উল্টোদিকে বিজেপির কোনও নেতা-কর্মীকে পাশে না পেলেও এখানকার গরিব, দুর্গত ও অসহায় মানুষ লকডাউন থেকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ সবসময় পাশে পেয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব ও পঞ্চায়েত কর্তাদের। তাঁরা পৌঁছে গিয়েছেন ত্রাণ ও সাহায্য নিয়ে, শুনেছেন তাঁদের অভাব-অভিযোগের কথা।
আরও পড়ুন : গ্রামেরও ভোট তৃণমূলের পক্ষে
ফলে বিজেপি সম্পর্কে এখানকার মানুষের মোহভঙ্গ হয়েছে। পাশাপাশি তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতি বেড়েছে আস্থা। ক্রমেই এই দ্বীপের বাসিন্দাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বিজেপি। শুধু তা-ই নয়, মানুষের সঙ্গে একের পর এক মিথ্যাচারও করে গিয়েছেন দলের নেতা-কর্মীরা। ফলে দ্রুত পট পরিবর্তন ঘটে গিয়েছে এই অঞ্চলের। ভুয়ো প্রতিশ্রুতি দিয়ে যে ভোট ঝোলায় ভরেছিল বিজেপি, স্বাভাবিকভাবেই তা আর ধরে রাখতে পারেনি। মানুষ তাদের বর্জন করেছে। ফলে উপনির্বাচনে কোনওরকমে মাত্র ১৮ হাজার ভোট পেয়ে এই কেন্দ্রে জমানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে তাদের প্রার্থীর। অন্যদিকে এখানকার মানুষের মন জয় করে লক্ষাধিক ভোটে জিতেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী সুব্রত মণ্ডল। গোসাবার নির্বাচনী ইতিহাসে এর আগে যা কখনও দেখা যায়নি। অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছেন সুব্রত। এমনকী দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাতেও এত বিশাল মার্জিনে কেউ কখনও জয়ী হননি। রেকর্ড মার্জিনে জয়ের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফোন পান গোসাবার নবনির্বাচিত বিধায়ক সুব্রত মণ্ডল। তাঁকে অভিনন্দন জানান মুখ্যমন্ত্রী। সুব্রতকে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন এলাকায় দলের সংগঠনকে মজবুত করে সুশাসন গড়ে তোলার জন্য।