প্রতিবেদন : নেই-এর তালিকা বেশ লম্বা। সাহাল আব্দুল সামাদ, লিস্টন কোলাসো-সহ সাত ফুটবলার জাতীয় দলে। এর বাইরে আনোয়ার আলি, আশিক কুরুনিয়ন চোটের কারণে আগে থেকেই নেই। দলের সেরা ন’জন ফুটবলারকে ছাড়া মরশুমের তৃতীয় ডার্বি খেলতে নামছে মোহনবাগান। আইএসএলে হারের হ্যাটট্রিকের ধাক্কা সামলে সুপার কাপে (Super Cup Derby) গ্রুপের প্রথম দুই ম্যাচ জিতলেও সবুজ-মেরুন রক্ষণের দুর্বলতা প্রকট। ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা বলছেন, মোহনবাগানকে হারানোর এটাই সেরা সুযোগ। সব দেখেশুনে সতর্ক লাল-হলুদ শিবির। তবে কান্নাকাটি করতে রাজি নন মোহনবাগানের সহকারী কোচ ক্লিফোর্ড মিরান্ডা। সব মিলিয়ে ভুবনেশ্বরে বড় ম্যাচের উত্তাপ চড়ছে। কলকাতা থেকে দুই প্রধানের সমর্থকদের ঢল নেমেছে মহানদীর তীরে।
টিডি থেকে ফের সবুজ-মেরুন কোচের হটসিটে বসা অ্যান্তোনিও লোপেজ হাবাস ডার্বিতে ডাগ-আউটে থাকতে পারছেন না। ফলে দুই স্প্যানিশ কোচের সরাসরি দ্বৈরথ দেখা যাবে না। হাবাস গ্যালারি থেকেই কোচিং করাবেন। কারণ, ফেডারেশন থেকে তাঁর প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র এসে পৌঁছয়নি। ভারতীয় দলের প্রাক্তন মিডিও ক্লিফোর্ডই গত দুই ম্যাচের মতো বড় ম্যাচেও দায়িত্ব সামলাবেন। তবে টিমের স্ট্র্যাটেজি থেকে দলগঠন সবটাই করবেন হাবাস। কোচ হিসেবে ক্লিফোর্ডের জীবনে প্রথম ডার্বি (Super Cup Derby)। কোনও অজুহাতের রাস্তায় না হেঁটে ইস্টবেঙ্গলকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন প্রাক্তন গোয়ান ফুটবলার। সাংবাদিক সম্মেলনে এসে কার্যত হুঁশিয়ারির সুরে ক্লিফোর্ড বললেন, ‘‘অনেকে অনেক কথা বলছে ঠিকই, আমার কিন্তু ডিফেন্স নিয়ে চিন্তা নেই। শুধু ডিফেন্স নিয়ে ভাবতে যাব কেন? ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে খেলার জন্য নিজেদের পুরোপুরি গুছিয়ে নামতে হবে। ডিফেন্স তার একটা অঙ্গ। আমি কিন্তু দলের ডিফেন্স নিয়ে সন্তুষ্ট। আমাদের ৮-৯ জন নেই। যারা আছে তারা যদি নিজেদের ১০০ শতাংশ দেয়, তাহলেই আমরা জিতব। ডার্বি নিয়ে অতিরিক্ত চাপ নিতে চাই না। কে, কত ভাল দল, সেটা মাঠেই দেখা যাবে।’’
আরও পড়ুন- মাদক আর কালাশনিকভেই শেষ হচ্ছে দেশ, মন্তব্য পাক প্রধান বিচারপতির
শুক্রবারের ম্যাচের উপর নির্ভর করছে, গ্রুপ সেরা হয়ে কোন দল সেমিফাইনালে যাবে। পয়েন্ট ও গোল পার্থক্য সমান হলেও অঙ্ক বলছে, ডার্বি ড্র করলেই শেষ চারে যাবে ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু মোহনবাগানকে জিততেই হবে। সতর্ক ইস্টবেঙ্গল কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর উদ্দেশে পাল্টা জবাব দিয়ে বলেছেন, ‘‘আমাদের দলের কি কেউ নেই জাতীয় দলে? আমাদেরও তো দু’জন নেই। হরমনজ্যোৎ খাবরা, মন্দার রাওয়ের চোট। অতীতে অনেক ম্যাচে দেখা গিয়েছে, ড্রয়ের জন্য খেলতে নেমে হারতে হয়েছে। তাই আমরা জিতেই সেমিফাইনাল খেলতে চাই। মরশুমের প্রথম ডার্বির আগে অনেকেই বলেছিল, আমরা পাঁচ গোলে হারব। কিন্তু আমরা জিতে মাঠ ছেড়েছিলাম। ওদের দিমিত্রি, হুগোর মতো ম্যাচ উইনার থাকলে আমাদেরও ক্লেটন রয়েছে। ছেলেরা আত্মবিশ্বাসী এবং ফোকাসড। ডার্বিতে সমর্থকদেরও বড় ভূমিকা থাকে। আমরা তৈরি।’’ তবে রেফারিং নিয়ে উদ্বেগ গোপন করেননি ইস্টবেঙ্গল কোচ।
তেতে আছেন দু’দলের ফুটবলাররাও। ডার্বিতে এখনও গোল না পাওয়া লাল-হলুদের ক্লেটন সিলভা বলেছেন, ‘‘গোল করতে চাই, তবে আমার গোলের থেকে দলের জয়টাই আসল।’’ পাল্টা মোহনবাগানের অস্ট্রেলীয় ডিফেন্ডার ব্রেন্ডন হ্যামিল বলেন, ‘‘বিপক্ষের আক্রমণ থামিয়ে দিতে প্রস্তুত আমরা।’’