জাঁকিয়ে পড়েছে শীত। তার উপর নিম্নচাপের জেরে বৃষ্টি। সংক্রান্তির শেষে মাঘের শীত এবার আক্ষরিক অর্থেই বাঘের গায়। এহেন অবস্থায় যখন সবাই জবুথবু ঠিক সেই মুহূর্তে গরমাগরম সুস্বাদু ‘কিলার স্যুপ’ নিয়ে হাজির বি টাউনের দুই শক্তিশালী তারকা মনোজ বাজপেয়ী এবং কঙ্কণা সেনশর্মা। ব্ল্যাক কমেডি, ক্রাইম, থ্রিলারধর্মী এই ড্রামার স্ট্রিমিং শুরু হয়ে গেছে বেশ কিছুদিন হল। এরপর থেকেই বেশ চর্চিত এই সিরিজ। আবার এক ভিন্নধর্মী গল্পে এবং চরিত্রে মনোজ বাজপেয়ী। এক অনবদ্য দ্বৈত চরিত্রে এবার দেখা যাচ্ছে তাঁকে। ট্রেলার লঞ্চের দিন থেকেই প্রত্যাশা তৈরি করেছিল দর্শকমহলে। নেটফ্লিক্সে এই সিরিজের তরফে একটা পোস্ট দেওয়া হয়েছিল যেখানে ক্যাপশন দেওয়া ছিল ‘এটা একটা উদ্ভট গল্প৷ না দেখলে বিশ্বাস করবেন না’৷ সত্যিই তাই।
আরও পড়ুন-পুলিশের অনুমতি ছাড়া কোনও মিছিল নয়, নির্দেশিকা নবান্নের
সিরিজের গল্পের নায়িকা স্বাতী শেট্টি। যিনি নামী শেফ হবার স্বপ্ন দেখেন অথচ তা হবার কিছুমাত্র গুণ নেই তাঁর। নিজের স্বামী প্রভাকরের সঙ্গে তাঁর ছলাকলার সম্পর্ক। স্বাতী নিজের আস্তিনে সযত্নে লুকিয়ে রাখেন স্বামী প্রভাকরের প্রতি রাগ এবং বিদ্বেষ। স্বামী প্রভাকর তার আঁচ পান কিছুটা হলেও তবে পুরোপুরি বুঝতে পারেন না। স্বাতী ভালবাসে প্রেমিক উমেশকে। তার সঙ্গে পরিকল্পনা করে স্বামীকে কীভাবে নিজের পথ থেকে সরাবে। কিন্তু বিধি বাম। দৃশ্যপটে হাজির হয় একজন পুলিশ ইন্সপেক্টর। ফলে স্বাতীর প্ল্যান অনুযায়ী আর কিছুই এগোয় না। সিরিজের প্রথম এপিসোডেই স্বাতীর গোপন প্রেম এবং ষড়যন্ত্রের আঁচ পায় দর্শক। যদিও স্বাতী একেবারে বিন্দাস। সেই রাতে হঠাৎই এক প্রাইভেট গোয়েন্দা দুর্ঘটনায় মারা যায়। যার ফোনে স্বাতীর স্বামী প্রভাকরের একাধিক মিসডকল। দুটো গল্প যেন কোথাও মিলেমিশে এক হয়ে যায়। এই সিরিজের পরিচালক ‘উড়তা পাঞ্জাব’ খ্যাত অভিষেক চৌবে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উওরে জানালেন, নেটফ্লিক্সে এই ধরনের ব্যতিক্রমী কাজ আগে কখনও হয়নি। প্রাথমিক ভাবে এই সিরিজের নামকরণ হয়েছিল ‘স্যুপ’, তবে নেটফ্লিক্সের সিরিজ ডিরেক্টর, তনয়া বামি একে ‘কিলার স্যুপ’ নামকরণ করেন। নতুন বছর অন্য রকম ভাললাগার স্বাদে শুরু করতে ‘কিলার স্যুপ’-এর থেকে ভাল কিছু আর হতেই পারে না। অভিষেক চৌবে একাধারে সিরিজটির শো-রানার এবং অন্যতম স্ক্রিপ্ট রাইটার।
আরও পড়ুন-ভিসটেক্স এশিয়ার সিইও সঞ্জয় শাহ ২৫তম বার্ষিকী অনুষ্ঠানে ক্রেন থেকে পড়ে প্রয়াত
এই বছরের শুরুতেই তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন অভিনেতা মনোজ বাজপেয়ী। সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়েছিল তাঁর সিক্স প্যাক অ্যাবস। ২০২৪-এর প্রথম দিনেই তাঁর শার্ট ছাড়া খোলা গায়ের ছবি পোস্ট করে রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছেন অভিনেতা। সেখানে ক্যাপশন দিয়েছিলেন নতুন বছর নতুন আমি! দেখুন স্যুপ খেয়ে কীরকম শরীর তৈরি করেছি। একদম কিলার তাই না! পোস্ট ভাইরাল হতে সময় লাগেনি। তখনই আঁচ পাওয়া গিয়েছিল এই সিরিজের।
সিরিজের জন্য নয় নিজের ডায়েট নিয়ে বরাবরই সিরিয়াস মনোজ। গত ১৩-১৪ বছর ধরে দুপুর এবং বিকেল পর্যন্তই খাবার খান তিনি। রাতটা নির্ভেজাল উপোস করেন। এই নিয়মই মেনে আসছেন। এ কথা শোনার পর অনেকেই আঁতকে উঠেছেন। তবে মনোজ অবশ্য জানিয়েছেন, এই রুটিন মেনে চলে তিনি সুস্থ আছেন। ডায়াবিটিস, কোলেস্টেরল কিংবা অন্য কোনও শারীরিক সমস্যা তাঁর শরীরে এখনও পর্যন্ত বাসা বাঁধেনি। মনোজ যে ধরনের ডায়েট করছেন তাকে পুষ্টিবিদরা বলেন ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং।
আরও পড়ুন-নারীত্বের পক্ষে মেয়েলিপনার বিপক্ষে
এই ক্রাইম থ্রিলারে নিজের চরিত্র প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মনোজ বাজপেয়ী বলেন, ‘আমি আমার কেরিয়ারে প্রথমবারের দ্বৈত চরিত্রে অভিনয় করলাম। যে দুই চরিত্র একে অপরের থেকে আলাদা। পরিচালক হিসাবে অভিষেক চৌবের দক্ষতার উপর আমার বিশ্বাস আছে। এখানে আমার সহযোগীরাও দারুণ। এটা দুর্ঘটনাজনিত অপরাধ থেকে উদ্ভূত এবং ভিন্ন একটা অবাস্তব প্লটে ঘটনাক্রম তৈরি হয়েছে এবং সেভাবেই চরিত্রগুলিকে তৈরি করা হয়েছে৷ কিলার স্যুপ একটা ক্রাইম থ্রিলার যা একাধিক ঘরানার মিশ্রণ। আশা করি প্রত্যেকের ভাল লাগবে।’
এই সিরিজের অপর কেন্দ্রীয় চরিত্রাভিনেত্রী কঙ্কণা সেনশর্মা বলেন, ‘স্বাতী শেট্টির চরিত্রে অভিনয় করা আমার অনন্য অভিজ্ঞতা। এই চরিত্রের অনেক অন্ধকার দিক রয়েছে৷ নেটফ্লিক্স এবং পরিচালক অভিষেকের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতাও দারুণ। এই সিরিজের সব অভিনেতাই দুর্দান্ত৷ আর কিলার স্যুপের ট্রেলারটি একটা বিচিত্র জগতের আভাস দেয়। যেটা আমরা একটা ঘুমন্ত শহরের পটভূমিতে তৈরি করেছি৷ সিরিজের মধ্যে সাসপেন্সের ইঙ্গিত রয়েছে, যা আপনাকে অবাক করে দেবে। এখন আমি অধীর আগ্রহে দর্শকদের প্রতিক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করছি।’
আরও পড়ুন-চল রে চল রে চল
অভিষেক চৌবে পরিচালিত এই সিরিজে মনোজ বাজপেয়ী, কঙ্কণা সেনশর্মা ছাড়াও মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছেন নাসের, সায়াজি শিন্ডে, লাল, অম্বুথাসন, অনুলা নাভলেকার এবং কানি কুশ্রুতি প্রমুখ।
সিরিজটির প্রযোজনার দায়িত্ব সামলেছেন হানি ত্রেহান ও চেতনা কৌশিক।