প্রতিবেদন : মেডিক্যালে ভর্তি মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ এবং নির্দেশজনিত সমস্ত প্রক্রিয়ার ওপর স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চ শনিবার জানিয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই মামলায় সিবিআই কোনও পদক্ষেপ করতে পারবে না। এই মামলায় রাজ্যের বক্তব্য জানতে চেয়েছে কোর্ট (Supreme Court)। একই সঙ্গে মূল মামলাকারী ঈশিতা সোরেনও চাইলে মামলায় যুক্ত হতে পারবেন। এদিকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী সঞ্জয় বসু হলফনামা দিয়ে যুক্ত হতে চেয়েছেন এই মামলায়। সোমবার এই মামলা শুনবে কোর্ট। এই মামলায় বারবার তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম আসায়, শনিবার তাঁর আইনজীবী বিশেষ বেঞ্চে স্পেশাল লিভ পিটিশন দাখিল করেছেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই মামলায় পার্টি হতে চান, এই আর্জি জানিয়ে। তিনি উল্লেখ করেন, বারবার যেভাবে অভিষেকের নাম টেনে আনা হচ্ছে এই মামলার ক্ষেত্রে সেখানে অভিষেকের বক্তব্যও শোনা হোক।
বিতর্কের শুরু বুধবার। মেডিক্যালে ভর্তির অনিয়ম সংক্রান্ত একটি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এর এক ঘণ্টার মধ্যেই সেই নির্দেশের উপর মৌখিকভাবে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয় বিচারপতি সৌমেন সেন এবং উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ। রাজ্যের পক্ষ থেকে অ্যাডভোকেট জেনারেল ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছিলেন, এই মামলায় রাজ্যের বক্তব্য শোনেনি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চ। সুযোগ দেওয়া হয়নি নথিপত্র পেশেরও। এরই ভিত্তিতে ডিভিশন বেঞ্চের মৌখিক স্থগিতাদেশ। কিন্তু সেই মৌখিক স্থগিতাদেশ অগ্রাহ্য করে সিবিআইকে তদন্ত চালিয়ে যেতে বলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এফআইআর দায়েরের নির্দেশ দেন সিবিআইকে। পরদিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবারই সেই এফআইআর খারিজের নির্দেশ দেয় বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ। শুধু তা-ই নয়, মামলা সংক্রান্ত যাবতীয় নথিপত্র অবিলম্বে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য সিবিআইকে নির্দেশ দেয় বেঞ্চ। এরপরেই মেজাজ হারিয়ে বিচারপতি সৌমেন সেনের বিরুদ্ধে অত্যন্ত আপত্তিকর মন্তব্য করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। লিখে ফেলেন একটি নির্দেশনামাও। একজন বিচারপতির বিরুদ্ধে আর একজন বিচারপতির এই ধরনের মন্তব্য এককথায় অভূতপূর্ব। বিচার এবং রাজনৈতিক মহলে সমালোচনার ঝড় ওঠে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। প্রশ্ন ওঠে তাঁর এক্তিয়ার এবং রাজনৈতিক সংস্রব নিয়েও। অগত্যা, এই বেনজির বিতর্কের প্রেক্ষিতে হস্তক্ষেপ করে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত হয় ৫ বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চ। শনিবার ছুটির দিন হওয়া সত্ত্বেও জরুরি ভিত্তিতে বসে সেই বেঞ্চ।
মেডিক্যাল নিয়োগ মামলায় সুপ্রিম কোর্টের কড়া নির্দেশ
গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ ও নির্দেশজনিত সব প্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ