আজ শান্তিপুর গিয়ে প্রশাসনিক সভা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এখানে জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রীর। লোকসভা নির্বাচনের আগে শান্তিপুরের সভা থেকে একাধিক প্রকল্পের কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন মঞ্চ থেকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। শুধু তাই নয়, এনআরসি ও সিএএ নিয়ে কেন্দ্রকে নিশানা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন-‘বড়মার কাছে গিয়ে বঙ্গভিভূষণ নিজে তুলে দিয়ে এসেছিলাম’ মতুয়া প্রসঙ্গ তুলে বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর
আজ, মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী হস্তশিল্পের কারিগরদের তুলে বলেন, ‘যাঁরা হাতে মূর্তি তৈরি করেন, হাতের কাজ করেন, যাঁরা সিল্ক তৈরি করে, তাঁত, ডোকরা বানান, অন্তত সবাইকে উৎপাদনের সব সামগ্রী বিশ্ব বাংলা, বাংলার শাড়ি, তন্তুজ, মঞ্জুসায় জায়গা করে দিন।’ কৃষ্ণনগর ও রানাঘাটে দুটি বিগ বাজার তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আমি ক্ষমতায় এসে দেখলাম, মাত্র ৬ জন মসলিন তাঁতি বেঁচে রয়েছেন। সেই ৬ জনকে আমরা ৬০ জনের ট্রেনিং দিলাম। তারপর মসলিন তীর্থ তৈরি করলাম। আর এখন সেই মসলিন তীর্থ আপনাদের সবার নাম কেড়েছে। আমি গর্বিত নদিয়ার তাঁতশিল্পীদের জন্য। আমি যত শাড়ি পরি সব নদিয়ার। আমি নিজের হাতে এঁকে ডিজাইন করে দিই। কিন্তু যে তাঁতিরা আমাকে শাড়িগুলো বুনে দেয়। কখনও ধনেখালি, কখনও নদিয়া। এর কোনও তুলনা আছে, তুলনা নেই। এত সামাজিক সংস্কার কেউ কখনও করেছে? আগে বাবা-মা ভাবত মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দিই। কোথায় কী করবে! এখন মেয়েরা নিজের পায়ে দাঁড়াচ্ছে।’
আরও পড়ুন-বিশ্বগুরুর দালাল চক্র
কেন্দ্রের সরকারকে নিশানা করে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মনে রাখবেন, নির্বাচনে জেতার জন্য সবাইকে জেলে পুরে দিচ্ছেন। আমাদের সবাই চোর, আর আপনারা সাধু? চোরেদের জমিদার। আজ ক্ষমতায় আছে, তাই এজেন্সি নিয়ে ঘুরছে। কাল ক্ষমতা থাকবে না, সব চলে যাবে। বসন্তের কোকিলের মতো কুহু কুহু করে ডাকে! সিপিএম কংগ্রেসের জোট হয়েছে, বিজেপিকে সাহায্য করবার জন্য। আমি জোট করি না, আমি মা মাটি মানুষ। তোমরা মহুয়াকে যতই তাড়িয়ে দাও, কিন্তু মানুষের ভোটে মহুয়া জিতবে। রানাঘাটে আপনারা একজনকে জিতিয়েছিলেন, আমার কিছু বলার নেই। মা বোনেরা ভালো করে জানেন তিনি কী, কী করে বেড়াচ্ছেন। এবার কিন্তু রানাঘাটে দয়া করে আমাদের সমর্থন করবেন। NRC হতে দেব না। CAA নামে মিথ্যা কথা বলছে। আমরা সবাই নাগরিক। মতুয়ারা নাগরিক নন? এগুলো ওদের রাজনৈতিক চাল।’
আরও পড়ুন-বিজেপি রাজ্যে মা বাবার সামনেই ধ.র্ষিতা নাবালিকা
আবার বিএসএফ প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি ডিএম দের বলবো ইনার লাইন পারমিশন দিতে হলে প্রশাসনিক কর্তারা দেবেন, কিন্তু BSF দেবে না। ওদের বর্ডার পাহারা দেওয়ার কাজ। তুমি বিহার. উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ থেকে গরু পাঠাবে, আর দোষ হবে আমাদের। কয়লা কাদের আন্ডারে? তোমরা চুরি করা বেড়াবে, আর তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ…আমি কারোর কাছ থেকে এক পয়সা নিই না। হাতের পাঁচটা আঙুল সমান নয়। সিপিএমেরও কিছু লোক আমাদের দলে ঢুকেছিল। কেউ দোষ করলে তাড়িয়ে দিন, কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসকে চোর বলবেন না। কোটি কোটি টাকা খরচ করে শুধু প্রণাম করলে হয়ে গেল. বলছে একটাই আইন থাকবে। তাহলে তফসিলিদের বিয়ে, আদিবাসী, মুসলিম, হিন্দুদের বিভিন্ন কাস্টের মানুষ নিজেদের রীতিতে বিয়ে করে। বলছে একটাই করতে হবে, কেন?’
এদিন আত্মবিশ্বাস ধরা পড়ে মুখ্যমন্ত্রীর গলায়। তিনি বলেন, ‘বাংলা এগিয়ে যাবেই। ভারতবর্ষের সবাইকে ভয় দেখিয়ে জেলে পুরে দিলেও কিচ্ছু হবে না। আমাকেও জেলে পুরে দিলে, জেল ফুটো করে বেরিয়ে আসব।’