প্রতিবেদন : টার্গেট ৪২-এ ৪২। বিজেপিকে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়া হবে না। সব বঞ্চনার জবাব দেব লোকসভা নির্বাচনে সব আসন জিতে। রবিবার রেড রোডের ধরনা মঞ্চ থেকে শপথ নিল যুবরা। যুব সভানেত্রী সায়নী ঘোষের নেতৃত্বে রবিবার সকাল থেকে ধরনা মঞ্চ ছিল বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে উত্তাল। এই মঞ্চ থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে সর্বাত্মক লড়াইয়ের যে ডাক নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিয়েছেন, সেই লড়াইয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়বে তৃণমূল যুব। এদিন মঞ্চে বক্তৃতা করতে গিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ, শান্তনু সেন সহ যুব নেতৃত্ব বাম, বিজেপি, সিপিএম ও কংগ্রেসকে তুলোধোনা করেন। সকলেই বুঝিয়ে দেন আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস সর্বাত্মকভাবে বাংলায় প্রতিটি আসনে জোরদার লড়াই করবে ও জয় ছিনিয়ে আনবে।
আরও পড়ুন-বামেদের পাপের দায় কেন নেবে তৃণমূল? ক্যাগের মিথ্যাচার নিয়ে তোপ নেতৃত্বের
এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ তাঁর ঝাঁঝালো বক্তৃতায় বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তো পরের ব্যাপার। আগে দলবদলু গদ্দাররা তৃণমূলের ছাত্র-যুবদের সঙ্গে লড়ে দেখাক! তারপর না হয় ওদের সঙ্গে লড়বে। কুণাল বলেন, এটা বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই। লড়ছে একমাত্র তৃণমূল কংগ্রেস। যুবদের একটা বাড়তি দায়িত্ব রয়েছে। এই কথা প্রসঙ্গেই তিনি কার্যত লোকসভায় ৪২-এ ৪২-এর টার্গেটের কথা বলেন। সমস্বরে যুবরা জানিয়ে দেয়, এবার ৪২-এ ৪২-ই হবে। সাম্প্রদায়িক বিজেপি ও ৩৪ বছর বাংলায় অত্যাচার করা বামেদের একটা আসনও নয়। আর কংগ্রেসের কথা যত কম বলা হয় ততই ভাল। কারণ অত্যাচারী সিপিএমের লেজুড় হয়েছে। কুণাল যুবদের দলের জন্মলগ্নের ইতিহাস মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, যাঁরা দলে এসেছেন তাঁদেরকে এটুকু মনে রাখতে হবে, সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াই করবেন বলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেস তৈরি করেছেন। একই সঙ্গে তিনি বলেন, আমরা আমাদের সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করি। কিন্তু রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যেন ভুলে না যাই। বাংলার উত্তর থেকে দক্ষিণ যত রেল প্রকল্প হয়েছে, সব দিয়েছেন তিনি। তাঁর সংযোজন বাংলায় এখন চাকরি নিয়ে সিপিএম একতরফা সমালোচনা-কুৎসা করছে। কিন্তু ওদেরকে মনে করিয়ে দিতে হবে আটের দশকে ওদের নেতা জ্যোতিবাবুদের সিদ্ধান্তের কারণেই বাংলা পিছিয়ে পড়েছিল। এরাই বাংলায় কম্পিউটার ঢুকতে দেয়নি। পরে সেক্টর ফাইভ হয়েছে। বাকি যেটুকু কাজ করেছেন সেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন-বাংলার নেত্রীর পথেই বকেয়া চেয়ে ধরনায় কেরল মুখ্যমন্ত্রী
সিপিএম এতটাই ঘৃণ্য একটি দল যে এরা শুধুমাত্র রাজনীতি করতে গিয়ে এসএলএসটি প্রার্থীদের হয়ে যাওয়া চাকরি আটকাতে বিকাশ ভট্টাচার্য একজন ফেল করা প্রার্থীকে দিয়ে কোর্টে মামলা করিয়েছে। অথচ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন, তোপ কুণালের। ফলে এখনকার নতুন সিপিএম নেতা-নেত্রীদের তাদের দলের অতীত ইতিহাস অর্থাৎ সাঁইবাড়ি থেকে কেশপুর, সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম, বিজন সেতুতে সন্ন্যাসীদের হত্যা, নেতাই গণহত্যা-সহ খুন-ধর্ষণের অতীত ইতিহাসটা মনে করিয়ে দিতে হবে। সেই সঙ্গে এমনভাবে নির্বাচনের লড়াই করতে হবে যাতে কেন্দ্রের যে বিকল্প সরকার হবে তার নিয়ন্ত্রক হবেন আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রতিটি বুথেই ১০০-য় ১০০ করতে হবে। এদিনের ধরনা মঞ্চে সায়নী ঘোষ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি, জয়প্রকাশ মজুমদার, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, ইন্দ্রনীল সেন, দেবাশিস কুমার, মানস ভুঁইয়া, ডাঃ শান্তনু সেন, কাকলি সেন, বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়, সুপ্রকাশ গিরি, শান্তি কুণ্ডু, ঋজু দত্ত, সার্থক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বাংলার প্রতিটি জেলার তৃণমূল জেলা সভাপতিরা। মঞ্চ সঞ্চালনা করেন প্রিয়দর্শিনী।