প্রতিবেদন : কোথাও জলের অভাব, কোথাও জমি অনুর্বর থাকায় এতদিন অনাবাদি পড়ে ছিল অনেক জমি। কৃষি দফতরের মাটির সৃষ্টি প্রকল্পে বীরভূমে এক বছরে প্রায় ২৭০ হেক্টর অনুর্বর, বন্ধ্যা জমিকে চাষযোগ্য করে তোলা হয়েছে। কোথাও একফসলি জমি হয়েছে দু’ফসলি। এই সব জমিতে বাদাম, ভুট্টা, লেবুকে বিকল্প চাষ হিসেবে বেছে নিয়েছেন কৃষকেরা। একে সাফল্য মনে করে কৃষি দফতরের দাবি, অনুর্বর জমিতে প্রযুক্তি ও বিকল্প পথে চাষ করে অর্থনৈতিক লাভবান হচ্ছেন চাষিরা।
আরও পড়ুন-সর্বভারতীয় ইউপিএসসি ১৪ স্থান পেয়ে নজির জঙ্গলমহলের ছেলের
জেলা কৃষি উপ অধিকর্তা শিবনাথ ঘোষের কথায়, আমরা ক্লাস্টার তৈরি করে চাষিদের সঙ্গে আলোচনা করি কীভাবে অনুর্বর জমিকে চাষের জমিতে রূপান্তরিত করা যায়। পরীক্ষানিরীক্ষা চালিয়ে সাফল্য মিলেছে। বিকল্প চাষ করে চাষিরা লাভবান হচ্ছেন। উদাহরণ, রাজনগরের সিশেল ফার্মের বিপুল এলাকা জুড়ে ভুট্টা চাষ। এর পর বৃহত্তর এলাকা জুড়ে মাটির সৃষ্টি প্রকল্পে এমন কাজের পরিকল্পনা আছে। কৃষি দফতর সূত্রে আরও খবর, প্রথম ধাপে ১৬টি ব্লকে ৩৮টি ক্লাস্টার তৈরি হয়। পরে তা বেড়ে হয় ১৮টি ব্লক। কোথাও ৪০, কোথাও ৫০ হেক্টর জমির ক্লাস্টার গড়ে চাষ হয়েছে। বিশেষত কলাই ও বাদাম চাষের উপযোগী জমিতে এই প্রকল্প হয়েছে। খরাপ্রবণ রাজনগর ব্লকে ধানের বিকল্প হিসাবে ভুট্টা, অড়হর, বাদাম চাষ হয়েছে। সিশেল ফার্মের শুষ্ক জমিতে ব্যাপক ভুট্টা ফলেছে। যা ৬৮ হাজার ১৫৫ টাকায় বিক্রি করেছেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। এই সব জমিতে চাষ হবে কখনও ভাবা যায়নি। লাভপুরে নদীর ধারে নাগপুরের কমলালেবুর পাশাপাশি মুসাম্বি, পেয়ারা, কলা, বেদানার চাষ হচ্ছে অন্যত্র। ফলে দীর্ঘদিনের শুষ্ক জমিকে সবুজ করার পাশাপাশি বিকল্প চাষে উপার্জনের রাস্তা খুলে দিয়েছে মাটির সৃষ্টি প্রকল্প। রাজ্যের বিভিন্ন দফতর একযোগে কাজ করছে জল থেকে যন্ত্রপাতি ও বীজের জোগান দিয়ে। গত এক বছরে ১৩ হাজার চাষিকে ডালশস্যের বীজ বিলি করা হয়েছে। এছাড়াও ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ভর্তুকিতে কৃষি যন্ত্রপাতি দেওয়াও হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে প্রায় ১৫০০ চাষি উপকৃত হয়েছেন। ফলে রাজ্যের মাটির সৃষ্টি প্রকল্প বিকল্প চাষে উৎসাহ জুগিয়ে গ্রামীণ অর্থনীতিতে বেশ বড়সড় ভূমিকা নিয়েছে।