প্রতিবেদন : সুপ্রিম কোর্টে নির্বাচনী বন্ড বাতিল হওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন (Amartya Sen)। পাশাপাশি বিজেপি সরকারের চালু করা এই ব্যবস্থার পিছনে দুর্নীতির ভূমিকা রয়েছে বলে ইঙ্গিত তাঁর। নির্বাচনী বন্ড ইস্যুতে লোকসভা ভোটের মুখে সুপ্রিম কোর্টে বিরাট ধাক্কা খেয়েছে মোদি সরকার। সম্প্রতি নির্বাচনী বন্ডকে অসাংবিধানিক ও অবৈধ আখ্যা দিয়ে তা বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। রাজনৈতিক দলগুলিকে বিশেষ অনুদান দেওয়ার প্রকল্প বাতিলের এই নির্দেশে খুশি নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ। মোদি সরকারের এই নির্বাচনী বন্ডকে এক মস্ত কেলেঙ্কারি বলেও মন্তব্য করেছেন অমর্ত্য সেন। সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অমর্ত্য সেন বলেছেন, নির্বাচনী বন্ড একটি কেলেঙ্কারি ছিল। তা বাতিল হওয়ায় আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আশা করি, নির্বাচনের সময় মানুষের পারস্পরিক সমর্থনে আরও বেশি স্বচ্ছতা আসবে।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনী বন্ড মামলার শুনানিতে গোটা বিষয়টিকে ‘অসাংবিধানিক এবং বাতিল’ বলে ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ। স্বচ্ছতার লক্ষ্যে পদক্ষেপ নেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয় এসবিআই ও নির্বাচন কমিশনকে। ২৩২ পাতার রায়ে বলা হয়েছে, এসবিআই আর কোনও নির্বাচনী বন্ড বিক্রি করতে পারবে না। ২০১৯ সালের ১২ এপ্রিল থেকে এখনও পর্যন্ত বিক্রি হওয়া নির্বাচনী বন্ড সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আগামী ৬ মার্চের মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে জমা দিতে হবে। এই প্রসঙ্গে অমর্ত্য সেন জানান, ভারতের রাজনৈতিক ব্যবস্থা দলীয় রাজনীতির দ্বারা প্রভাবিত। এর ফলে সাধারণ মানুষ কী চাইছেন, তা বোঝা কঠিন হয়ে পড়ছে। বিরোধী দলগুলির প্রতি সরকার কী ধরনের মনোভাব পোষণ করে, তার মধ্যে দিয়েও দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা প্রভাবিত হয়। বিরোধীদের প্রতি সরকারের নিয়ন্ত্রণ আরোপের চেষ্টা নিঃসন্দেহে নির্বাচন ব্যবস্থার উপর প্রভাব ফেলে। অমর্ত্য সেন (Amartya Sen) বলেছেন, আমরা নাগরিকদের মতামত ও কাজের স্বাধীনতার পাশাপাশি যতটা সম্ভব অবাধ নির্বাচনী ব্যবস্থা চাই। ভারতীয় সংবিধান সমস্ত নাগরিকদের সার্বিক রাজনৈতিক স্বাধীনতার পরিসর দিতে চেয়েছে। কোনও একটি বিশেষ গোষ্ঠী বা দলের বিশেষ সুবিধা থাকুক, তা কখনওই চাওয়া হয়নি। ঠিক এই কথাটাই উল্লেখ করেছে বিরোধী দলগুলিও। বন্ডের গোপনীয়তার আড়ালে বিপুল কর্পোরেট অনুদান নিয়ে কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার আদানিদের মতো কর্পোরেট গোষ্ঠীগুলিকে অবৈধ সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে বলে সমালোচনা নানা মহলে।
আরও পড়ুন-নতুন নির্দেশ জারি করল রাজ্যের অর্থ দফতর, আরও দ্রুত মিলবে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার