প্রতিবেদন: ফের একবার সামনে এল বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশের মানুষের চরম দারিদ্র্যের ছবি। দু’দিন আগে দীপাবলি উপলক্ষে অযোধ্যায় ১২ লক্ষ প্রদীপ জ্বালিয়ে ছিল যোগী সরকার। আলোকোজ্জ্বল অযোধ্যাকে দেখে পঞ্চমুখে প্রশংসা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কথায় বলে প্রদীপের নিচেই অন্ধকার। অযোধ্যায় প্রদীপের আলো নিভে যেতেই এক চরম দারিদ্রের ছবি সামনে এল।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, ওই ১২ লক্ষ প্রদীপ নিভে যাওয়ার পর প্রদীপের অবশিষ্ট তেল সংগ্রহ করতে শুরু করেছে বহু মহিলা ও শিশু। বাড়িতে রান্নার জন্যই তারা ওই তেল সংগ্রহ করছে বলে জানিয়েছে।
আরও পড়ুন : রামপ্রসাদের গান: বাঙালির নিজস্ব ঘরের গান
সূর্য প্রতাপ সিং নামে উত্তর প্রদেশের এক অবসরপ্রাপ্ত পদস্থ সরকারি কর্তা ওই ভিডিয়োটি টুইট করেছেন। তিনি বলেছেন, ১২ লক্ষ প্রদীপ জ্বালিয়ে গরিব মানুষের সঙ্গে তামাশা করেছে যোগী সরকার। ১২ লক্ষ প্রদীপ জ্বালাতে যোগী সরকার ৩৬ হাজার লিটার সরষের তেল পুড়িয়েছে। অথচ এই রাজ্যের ৩০ শতাংশ মানুষ দু’বেলা পেটপুরে খেতে পান না। অস্বাভাবিক দামের কারণে তেল কিনতে না পেরে রাজ্যের বহু পরিবার রান্না করতে পারছে না। অথচ যোগী সরকার সেই মহার্ঘ তেল পুড়িয়ে প্রদীপ জ্বালিয়ে মানুষের সঙ্গে রসিকতা করছে। ভিডিয়োটিতে দেখা গিয়েছে, সরযু নদীর তীরে বহু মহিলা ও শিশু দলবেঁধে নিভে যাওয়া প্রদীপ থেকে তেল সংগ্রহ করে বোতলে ভরছে। সূর্যপ্রতাপ বলেছেন, এই তেল নিম্নমানের ভেজাল যুক্ত হতে পারে। তাই মানুষকে তিনি অনুরোধ করছেন, তাঁরা যেন ওই তেল ব্যবহার না করেন। এই বিপুল পরিমাণ তেলের পিছনে বড়সড় কোন ভেজাল চক্র থাকতে পারে বলেও এই প্রাক্তন আমলার আশঙ্কা। সূর্যপ্রতাপ অভিযোগ করেছেন, উত্তরপ্রদেশের অর্ধেক শিশু দুধ খেতে পায় না। ৩০ শতাংশ মানুষ দু’বেলা পেটপুরে রুটি পায় না।
সূর্যপ্রতাপের ওই টুইটি প্রকাশ্যে আসতেই নেটিজেনরা অনেকেই যোগী সরকারকে কটাক্ষ করেছেন। একজন বলেছেন, যোগী আদিত্যনাথ যদি দিওয়ালিতে প্রত্যেক দরিদ্র পরিবারকে হাফ লিটার তেল দিতেন তবে তাঁরা সেই তেল দিয়ে উৎসবের মরসুমে একটু ভালমন্দ রান্না করে খেতে পারতেন। শুধু গিনেস বুকে নাম তোলার জন্য না ছুটে, যোগী যদি মানুষকে একটুখ সাহায্য করতেন তাহলে নিশ্চিতভাবেই ঈশ্বরের আশীর্বাদ পেতেন।