প্রতিবেদন : এ রাজ্যে তাঁতের কাজে যন্ত্র ব্যবহারকারী সাড়ে ৬ লক্ষ তাঁতশিল্পীকে স্বনির্ভর করে তুলতে উদ্যোগী সরকার। বাংলার বালুচরি শাড়ির নকশার আভিজাত্য সারা বিশ্বে কদর পেয়ে আসছে। রামায়ণ-মহাভারতের পর এবার সেই নকশায় ফুটে উঠবে গ্রিসের মহাকাব্য ইলিয়াড, ওডিসির কাহিনি। পাশাপাশি টাঙ্গাইল, গরদ, কড়িয়াল, তসর, শান্তিপুরি, বেগমপুরি শাড়িতেও বোনা হবে নতুন নকশা। পরিবেশবান্ধব রং আর নকশা ব্যবহার করে বাংলার তাঁতশিল্পের প্রসার ঘটাতে এই উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন-প্রতিযোগিতার দৌড়ে তাঁতশিল্প সামনের সারিতে
বাংলার তাঁতের শাড়ির কদর ও চাহিদা রয়েছে বিশ্বের সর্বত্র। সুতো, রং ও আধুনিক ডিজাইনকে প্রাধান্য দিয়ে এর উন্নতিতে বেশ কিছু পদক্ষেপ করছে সরকার। তাঁতশিল্পীদের স্বনির্ভর করা এবং তাঁদের পণ্যের বাজার বাড়াতে রাজ্যের ১৯টি জায়গায় তাঁতশিল্পীদের নিয়ে দু’দফায় ১০ দিনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছে সরকার। রং ও ডিজাইনের ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে প্রতিদিন ২০ জন শিল্পীকে। গুরুত্ব দেওয়া হবে পরিবেশবান্ধব রং ব্যবহারে। ফলে শাড়ির গুণগত মান বাড়ার পাশাপাশি আর্থিক সুরাহা হবে তাঁতশিল্পীদের। তাঁরা কোথায় পরিবেশবান্ধব রং পাবেন, কীভাবে তার মিশ্রণ ঘটাবেন, লভ্যাংশের পরিমাণ কত হবে, এ সব বিষয়েই তাঁতশিল্পীদের সবিস্তার প্রশিক্ষণ দেওয়া চলছে। প্রশিক্ষণে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে আধুনিক ডিজাইনকেও। মানুষের পরিধানের পছন্দ-বদলের কথা মাথায় রেখেই এই শিবিরগুলিতে শিল্পীদের শেখানো হচ্ছে শাড়ির আঁচলে পৌরাণিক কাহিনি ও অন্যান্য আকর্ষণীয় নকশা বোনার কাজ। সেইমতোই বালুচরি শাড়ির বুননে তুলে আনার পরিকল্পনা হচ্ছে গ্রিক মহাকাব্য ওডিসি-ইলিয়াডের খণ্ডচিত্র। শিবিরে রঙের বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন অধ্যাপক দেবাশিস দাস, ডিজাইনের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন অধ্যাপক দিব্যেন্দুবিকাশ দত্ত। রাজ্যের টেক্সটাইলের ডিরেক্টর রাজীবকুমার ঘোষ শিবিরের পর্যবেক্ষণে আছেন। জানা গিয়েছে রাজ্য সরকার চাইছে আধুনিকতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাংলার হ্যান্ডলুমের উন্নয়ন ও প্রসার ঘটাতে।