প্রতিবেদন : উচ্চশিক্ষার ইতিবাচক দিকটাই মূলত চোখে পড়ে মানুষের। কিন্তু এর সামান্য একটা নেতিবাচক দিকও আছে। পেশা বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক উচ্চশিক্ষিত মানুষই একটু খুঁতখুঁতে হন। মানে, যে কোনও পেশাকেই তাঁরা ঠিক আপন করে নিতে পারেন না। বাছবিচারটা একটু বেশি করেন। এই মানসিক বাধাকে জয় করেই এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন বছর ছাব্বিশের যুবতী টুকটুকি দাস। বাড়ি হাবড়ায়। ৬১ শতাংশ নম্বর পেয়ে ইংরেজিতে এমএ। হাবড়া স্টেশনেই খুলে বসেছেন চায়ের দোকান। নাম দিয়েছেন ‘এমএ ইংলিশ চায়েওয়ালি’। চোখে একরাশ স্বপ্ন, একদিন প্রসারিত হবে এই দোকানের পরিধি। তৈরি হবে ব্র্যান্ড ভ্যালু। না, মনের মতো চাকরি না পেয়ে অবসাদের অন্ধকারে হারিয়ে না গিয়ে আশার হাত ধরে নিজের মতো করে এভাবেই বাঁচতে চাইছেন টুকটুকি। তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরেই সাধারণ মানুষের জন্য মুখ্যমন্ত্রী খুলে দিয়েছেন উচ্চশিক্ষার অজস্র দরজা। একই সঙ্গে মানুষকে যেটা বারবার বোঝাতে চেয়েছেন, কোনও কাজই ছোট নয়। সততার সঙ্গে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে সম্মানের সঙ্গে সমাজে বেঁচে থাকাটাই আসল কথা। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথাবার্তায় তিনি কাউন্সেলিংও করেছেন এব্যাপারে। বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে বাড়িয়ে দিয়েছেন আন্তরিক সহযোগিতার হাত। রবীন্দ্রভারতী মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স টুকটুকির জীবন-দর্শনে, জীবন-কাহিনিতে যেন তারই প্রতিফলন ঘটছে।
আরও পড়ুন : শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা বিজেপির, মুখোশ খুলে তোপ সৌগতর
বাবা এক ছোট মুদির দোকান চালান। সংসার চালানোর উপায় খুঁজে বের করতে ইউটিউব ঘাঁটতে ঘাঁটতে টুকটুকির চোখে পড়ে, মুম্বইয়ে এক উচ্চশিক্ষিত যুবক চায়ের দোকান খুলে এইভাবেই নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতাকে জুড়ে দিয়েছেন দোকানের নামের সঙ্গে। এবং ব্র্যান্ড-ভ্যালুও পাচ্ছেন। এখান থেকেই আইডিয়া নিয়ে প্রিয়জনদের বুঝিয়েশুনিয়ে স্টেশনে চায়ের দোকানই খুলে বসলেন টুকটুকি। পরিবার থেকে আপত্তি আসেনি যে তা নয়। দৃঢ় পদক্ষেপে স্বপ্নের পথে তিনি হেঁটে চলেছেন রীতিমতো আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই। লাজুক হাসিতে জানান দিলেন নিজেই।