প্রতিবেদন : হুমকি, হামলা, অপহরণ রাতের অন্ধকারে বাড়ি এসে থ্রেট এত কিছুর পরেও ত্রিপুরা পুরভোটের আগে বিজেপির সব চেষ্টাই ব্যর্থ হল। সোমবার ছিল পুরভোটের মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। দিনের শেষে দেখা গেল আগরতলা পুর নিগমের যে ৫১টি ওয়ার্ডে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাঁদের কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। গত কয়েকদিন ধরে বিজেপি আগরতলা-সহ নগর পঞ্চায়েত ও পুর পরিষদ এলাকায় দিনে রাতে টানা সন্ত্রাস চালিয়েছে। প্রার্থীর স্বামীকে অপহরণ করেছে। প্রার্থীদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে। তা সত্ত্বেও পিছু হটেননি তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীরা।
সোমবারও আগরতলায় মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য স্বপ্না মল্লিকের বাড়িতে হামলা করে বিজেপি গুণ্ডারা। ব্যাপক হামলা চালানো হয় স্বপ্নার বাড়িতে। গোটা বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। আগরতলা পুর নিগমের ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সোমা দাসের বাড়িতে কালীপুজোর রাতে বিজেপির গুণ্ডারা হামলা চালায়। ছোট্ট বাচ্চাকে কোলে নিয়ে সোমা জঙ্গলে পালিয়ে যায়। পরে বাড়ি ফিরলে মাঝরাতে ফের হামলা চালানো হয় তাঁর বাড়িতে। এরপর স্বামী সন্তান নিয়ে সারাসারাত জঙ্গলেই কাটে সোমার। এখনও তিনি বাড়ি ছাড়া। পুলিশ সব জেনেও চুপ। এত কিছুর পরেও সোমা বিজেপির কাছে মাথা নোয়াননি। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি সোমা। আসলে ভয় পেয়েছে বিজেপি। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ও দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখানো পথে গত কয়েক মাসে ত্রিপুরায় সাংগঠনিক শক্তি অনেকটাই বাড়িয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
আরও পড়ুন : সুব্রতদাকে মিস করছি, শোকপ্রকাশ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
তৃণমূল নেতা-কর্মীদের উপর হামলা, মামলা, গাড়ি ভাঙচুর কোনও কিছুই বাদ দেয়নি বিজেপির গুণ্ডারা। এতকিছু করেও তৃণমূল কংগ্রেসকে টলানো যায়নি। প্রতিদিনই বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএম ছেড়ে দলে দলে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন নেতা-কর্মীরা। এতেই বিজেপি বুঝতে পেরেছে, তাদের পায়ের তলার মাটি সরছে। তাই তৃণমূল কংগ্রেসকে আটকাতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি।
ত্রিপুরার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে নতুন ত্রিপুরা গড়ার পথে তৃণমূল কংগ্রেস। পুর ভোটের আগে তাই সন্ত্রাসের পথকেই বেছে নিয়েছে রাজ্যের শাসক দল বিজেপি। দলের স্টিয়ারিং কমিটিক আহ্বায়ক সুবল ভৌমিক জানান, গত কয়েক দিন ধরে বিজেপি লাগামহীন সন্ত্রাস চালানোর পরেও তৃণমূল কংগ্রেসের একজন প্রার্থীও লড়াইয়ের ময়দান থেকে সরে দাঁড়ায়নি। কিন্তু সিপিএমের পাঁচজন, কংগ্রেসের একজন ও একজন নির্দল প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। বিজেপি সবরকমভাবে চেষ্টা করেও তৃণমূল কংগ্রেসকে আটকাতে পারেনি। এটা আমাদের নৈতিক জয়। তৃণমূল নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার ত্রিপুরা পৌছেছেন। তিনি জানালেন, দলের প্রার্থীদের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। বিজেপির এই ব্যাপক সন্ত্রাস সত্ত্বেও তাঁদের মনোবল অটুট রয়েছে। কোনও অবস্থাতেই তাঁরা বিজেপির কাছে মাথা নোয়ায়নি। মঙ্গলবার সকাল থেকেই পুরোদমে প্রচারে নামছেন দলীয় প্রার্থীরা। এরই ফাঁকে সুবল ভৌমিক, আশিসলাল সিং, বাপ্টু চক্রবর্তীদের সঙ্গে নিয়ে প্রার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন রাজীববাবু।