সংবাদদাতা, তমলুক : তমলুকের মাটিতে একটা এইমস দরকার, বুধবার প্রচারে এসে নিমতৌড়ি স্মৃতি সৌধের সাংবাদিক সম্মেলনে বললেন তমলুকের তৃণমূল প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্য। তিনি মানুষকে আশ্বস্ত করে বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে সন্তানের মতো স্নেহ করেন। সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ভাইয়ের মতো ভালবাসেন। তাই আমাকে ভোট দিলে তমলুকের জন্য সহজেই দাবি পূরণ করতে পারি।
আরও পড়ুন-কমিশনার নিয়োগ মামলা সুপ্রিম কোর্টে
এর আগে নিমতৌড়িতে দলের জেলা নেতৃত্ব-সহ কর্মীদের নিয়ে সভা করে তিনি কর্মীদের মনে করিয়ে দেন, আরও কয়েক বছর আমরা পূর্ব মেদিনীপুরে জেলা পরিষদের ক্ষমতায় থাকব। তমলুকের এমএলএ তৃণমূলের। এবার যদি এমপি সিট চলে আসে, তবে তিনটে স্তরে তৃণমূল আরও সুচারুভাবে উন্নয়ন করতে পারবে। সাধারণ মানুষের কাছে একথা আপনারা তুলে ধরুন। নিমতৌড়ির কর্মসূচিতে মহিষাদলের বিধায়ক তিলক চক্রবর্তী বলেন, ঢাক আর ঢাকি বিসর্জন দেওয়ার কথা যিনি বলেছিলেন, তাঁকেই বিসর্জন দিতে হবে। এর জন্য প্রতিটি শাখা সংগঠনের নেতৃত্ব একেবারে বুথস্তরে নেমে প্রচার ও জনমত গড়ে তুলুন। এছাড়াও ছিলেন জেলা সভাপতি অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়, চেয়ারম্যান চিত্ত মাইতি, প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতির্ময় কর, বিধায়ক সুকুমার দে, জেলা মহিলা তৃণমূল সভানেত্রী শিবানী দে কুণ্ড, তমলুক টাউন তৃণমূল সভাপতি চঞ্চল খাড়া, সম্পাদক বিশ্বজিৎ মাইতি প্রমুখ। নিমতৌড়ির সাংবাদিক সম্মেলনে দেরিতে পৌঁছন কাঁথির তৃণমূল প্রার্থী উত্তম বারিক। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমার ছেলের অন্নপ্রাশনের সময় শুনতাম অধিকারীগড় শব্দটা। এখন সেই গড় বলে কিছু নেই। মাথা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর হাত সরে যেতেই গদ্দার হয়ে গিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। এরপর সেটুকুও ধুয়েমুছে সাফ হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন-তুরায় তৃণমূল প্রার্থী ভূমিপুত্র জেনিথ সাংমা
বুধবার সকালে তমলুকের বর্গভীমা মন্দিরে পুজো দিয়ে প্রাচীন এই শহরে প্রচার শুরু করেন তৃণমূল মুখপাত্র দেবাংশু। কদিন আগেই এই মন্দিরে পুজো দিতে এসেছিলেন বিজেপির অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁকে স্বাগত জানাতে এসে গদ্দার অধিকারী দেবাংশুকে নর্দমার সঙ্গে তুলনা করেন। সেখানেই পুজো দিয়ে গদ্দারের কুকথার জবাব দেন দেবাংশু। বলেন, উনি বয়সে বড়। যদি আমাকে নর্দমা বলে আনন্দ পান, আমি তাঁকে শুভেচ্ছা জানাই। মায়ের মন্দিরে পুজো দেওয়ার পর আমাকে নর্দমা বলেছেন, কত ভক্তি চিন্তা করুন।’ সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীও পূর্ব মেদিনীপুরে এসে দেবাংশুকে ‘দু পয়সার ছেলে’ বলে মন্তব্য করেছিলেন। দুজনের মন্তব্য প্রসঙ্গেই দেবাংশু বলেন, ‘মায়ের কাছে প্রার্থনা করি, মা ওদের সুবুদ্ধি দাও। সব বিচার মা বর্গভীমা করবেন।’ এর পরই তমলুকবাসীদের সতর্ক করে দেবাংশুর দাবি, ‘একজন ৬১ বছরের ব্যক্তি দুদিন আগে বিচারপতি ছিলেন। মুড চেঞ্জ হতেই তিনি রাজনীতির ময়দানে এসেছেন। আবার কোনদিন মুড চেঞ্জ হবে। তিনি বলবেন, আর রাজনীতি করব না। মানুষ যদি ওঁকে ভোট দেন, কপাল চাপড়াতে হবে। আমি ২৮ বছরের যুবক। ছুটতে পারব। কেন্দ্র ও রাজ্য থেকে তমলুকের জন্য বরাদ্দ টাকা আনতে পারব। এই আত্মবিশ্বাস আমার আছে।’
আরও পড়ুন-হিংসাত্মক ঘটনার মামলার স্টেটাস রিপোর্ট তলব
তমলুকের মানুষের কাছে দেবাংশুর আরও দাবি, ‘প্রাক্তন বিচারপতি এর আগে তমলুকে এসেছেন কিনা জানি না। তবে একুশের নির্বাচনের আগে তমলুকের বিভিন্ন বিধানসভা এলাকায় আমি প্রায় ৬০-৭০টি সভা করেছি। এখানকার বহু নেতা ও মানুষকে চিনি। আমি রাজনীতির লোক। ফ্যান্সি দুনিয়া থেকে রাজনীতির ময়দানে আসিনি।’