প্রতিবেদন : টানা দু’বছর ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধের মধ্যেই শুক্রবার থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন (Russia Vote) শুরু হচ্ছে রাশিয়ায়। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ভ্লাদিমির পুতিন। তাঁর ফের ক্ষমতায় আসা কার্যত নিশ্চিত। ফলে ২০৩০ সাল পর্যন্ত ক্রেমলিনের মসনদে দেখা যাবে একনায়ক পুতিনকেই। এবছরই প্রথম রাশিয়ায় ভোট চলবে তিনদিন ধরে। নির্বাচনী সংস্কারের পর এবার থেকে নতুন নিয়ম কার্যকর হচ্ছে। ফলে শুক্রবার থেকে শুরু হয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন চলবে চলবে রবিবার পর্যন্ত। যদিও তার আগেও সমালোচনা পিছু ছাড়ছে না রুশ প্রেসিডেন্টের। পুতিনের কট্টর সমালোচক ও রাশিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় বিরোধী নেতা আলেক্সি নাভালনির কারাগারে রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় উত্তাল বিশ্ব। এই হত্যাকাণ্ডের জন্য পুতিনকেই দায়ী করেছেন বিশ্বের একাধিক রাষ্ট্রনেতা। ভোটের আগে পথের কাঁটা সরিয়ে আমৃত্যু নিজের গদি পাকাপোক্ত করতে চলেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। নির্বাচনের কয়েক ঘণ্টা আগেও ফের আমেরিকাকে পরমাণু যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিয়ে বিতর্ক তৈরি করেছেন পুতিন। তিনি হুঁশিয়ারি দেন, অবিলম্বে যদি আমেরিকা ইউক্রেনে সেনা পাঠানো বন্ধ না করে, সেক্ষেত্রে যুদ্ধের গতি আরও বাড়বে। পাশাপাশি রাশিয়া যে পরমাণু যুদ্ধের জন্যও প্রস্তুত সেকথাও সাফ জানিয়েছেন পুতিন। রুশ প্রেসিডেন্টের এমন হুঁশিয়ারির পর নির্বাচনের আগেই নতুন করে অশান্ত হয়ে উঠতে পারে বিশ্ব রাজনীতি, এমনটাই আশঙ্কা করছে বিশেষজ্ঞ মহল। যদিও পুতিন আরও জানিয়েছেন, ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ চলাকালীন পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের প্রয়োজন এখনও পড়েনি। তবে সময় হলে বা তেমন পরিস্থিতি এলে একেবারেই পিছপা হবে না রাশিয়া। আসন্ন নির্বাচনে রুশ সংবাদমাধ্যমের পূর্বাভাস, ‘অল রাশিয়া পিপলস ফ্রন্ট’-এর প্রার্থী তথা বর্তমান প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে মূলত হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে চলেছে রুশ কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী নিকোলাই খারিতনভের। অন্যদিকে, লিবারেল ডেমোক্র্যাট পার্টির লিওনিদ স্লুৎস্কি এবং ইউনিয়ন অফ প্রোগ্রেসিভ পলিটিক্যাল ফোর্সেস-এর প্রার্থী ভ্লাদিস্কভ ডাভানকোভও পুতিনকে কড়া চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে প্রস্তুত। তবে রুশ সংবাদমাধ্যমের দাবি, পুতিনের জয় শুধু সময়ের অপেক্ষা। আর চলতি বছর মস্কোর মসনদে বসতে পারলে ক্রেমলিনে ক্ষমতায় থাকা জোসেফ স্তালিন এবং লিওনিদ ব্রেজনেভের রেকর্ড স্পর্শ করবেন পুতিন। টানা ২৪ বছর তাঁরা দু’জন সেই পদের দায়িত্ব সামলেছেন। এবার পুতিন জিতলেও তাঁর সামনে যে সেই রাস্তাটা খুলে যাবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। অথচ ২০১৮ সালে রাশিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় পুতিন প্রেসিডেন্ট পদে না থাকার কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীকালে সেই সিদ্ধান্ত বদলেছেন তিনি। গত ২৩ বছর ধরে রাশিয়ার মসনদে রয়েছেন পুতিন। ২০০০ সালের মে মাস থেকে ২০০৮ সালের মে পর্যন্ত টানা ৮ বছর নির্বাচনে জিতে সে দেশের প্রেসিডেন্ট পদে ছিলেন।
এরপর ২০১২ সালে দ্বিতীয় দফায় নির্বাচনে (Russia Vote) জিতে ছ’বছরের জন্য প্রেসিডেন্ট হন পুতিন। তারপর ২০১৮ সালে তিনি পুনর্নির্বাচিত হন। তবে চলতি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হলে ২০৩০ পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবেন পুতিন। আর সেই সম্ভাবনার মাঝেই পরমাণু হামলা নিয়ে হুমকি রুশ প্রেসিডেন্টের মুখে।
যুদ্ধের মধ্যেই আজ ভোট শুরু রাশিয়ায়
২০৩০ পর্যন্ত প্রেসিডেন্টের ক্ষমতায় স্বৈরাচারী পুতিনই?