প্রতিবেদন : অশালীন, দায়িত্বজ্ঞানহীন, কুরুচিকর। সিএএ ইস্যুতে ধর্ম পরীক্ষার জন্য যে নিদান দিয়েছেন বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা, তা শালীনতার সমস্ত সীমা লঙ্ঘন করে গিয়েছে। সোমবার বিজেপি নেতার সেই অশালীন-কুরুচিকর মন্তব্যের প্রতিবাদে গর্জে উঠল তৃণমূল (TMC)। সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরকে পাশে নিয়ে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ তীব্র নিন্দা করলেন বিজেপি নেতা তথাগত রায়ের এই চরম অশালীন মন্তব্যের। সেইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী-সহ বিজেপিকে সাবধান করে দিলেন, রাজনীতির উদ্দেশে এ-ধরনের কুৎসিত শব্দ ব্যবহারে যেভাবে প্রশ্রয় দিচ্ছেন আপনারা, তা বুমেরাং হবে আগামী দিনে। বাংলার মানুষ মেনে নেবে না এই অপমান।
আরও পড়ুন- বন্ড কেলেঙ্কারি ২১ মার্চের মধ্যে সব তথ্য চাই, এসবিআইকে কড়া নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা ধর্ম পরীক্ষার জন্য যে নিদান দিয়েছেন তা সভ্যতার সীমা লঙ্ঘন করে গিয়েছে। তা শুধু অশালীনই নয়, অশান্তিতে প্ররোচনা দিচ্ছে। মানুষে মানুষে ভাগ করছে। মানবতা, সংস্কৃতি বলে কিছু আর অবশিষ্ট থাকছে না। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ করছি। তৃণমূল (TMC) মনে করছে, বিজেপি ধর্মের নামে ভেদাভেদের জন্য সিএএ করেছে। শারীরিক পরীক্ষার নামে যে শব্দ ব্যবহার করেছেন বিজেপি নেতা, তা ধর্মের নামে ভেদাভেদ তৈরি করবে। তাঁর স্পষ্ট কথা— বিজ্ঞান, ধর্ম, সংস্কৃতি নিয়ে মানুষ চলে। রাজনীতির উদ্দেশে সেটা যদি কুৎসিতভাবে ব্যবহার করা হয়, তার তীব্র প্রতিবাদ জানাবে তৃণমূল।
একইসঙ্গে তিনি বলেন, বিজেপি নেতৃত্ব আপনারা সামলান। আপনারা আগুন নিয়ে খেলছেন, ধর্মের নামে যে রাস্তায় নিয়ে যাচ্ছেন রাজনীতিকে, সেটা ঠিক নয়। সিএএ নিয়ে তৃণমূলের স্পষ্ট বক্তব্য, যাঁরা ভোট দিয়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করেছেন, যাঁদের আধার কার্ড আছে, ভোটার কার্ড আছে, তাঁরা সবাই নাগরিক। এখন নাগরিকত্ব দেওয়ার নামে গুচ্ছের নথি চাওয়া হয়েছে। নাগরিকত্বের ক্ষেত্রেও দিদির গ্যারান্টিই আসল গ্যারান্টি, বিজেপি বা মোদির গ্যারান্টি আসল গ্যারান্টি নয়, তা মানুষ বুঝতে পারছে। তিনি আরও জানান, যারা সিএএ ফর্ম ফিলাপ করব বলছে, তাদের জনপ্রতিনিধি হওয়ার কোনও অধিকার নেই। আপনি যদি ভারতের নাগরিকই না হন, আপনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন কী করে! শান্তনু ঠাকুর একবার বলছেন সিএএ ফর্ম ফিলাপ করবেন, আবার বলছেন করবেন না। তিনি যদি ফর্ম ফিলাপ করেন নাগরিকত্বের জন্য, তা হলে তিনি নাগরিক নন। তাহলে তাঁর সাংসদ পদ আগে খারিজ করা হোক। তিনি আবার ভোটে দাঁড়িয়েছেন, তাঁর প্রার্থিপদে মনোনয়নও খারিজ হয়ে যাবে সংবিধান অনুযায়ী। কেননা, প্রার্থী হতে গেলে প্রথম শর্তই হল তাঁকে ভারতীয় নাগরিক হতে হবে। এদিন মমতাবালা ঠাকুর তথাগত রায়ের কুৎসিত মন্তব্যের প্রতিবাদে মুখর হওয়ার পাশাপাশি শান্তনু ঠাকুরের বিরুদ্ধে মতুয়াদের অর্থ নিয়ে পরিচয়পত্র দেওয়ার অভিযোগ আনেন।