অনুরাধা রায়: রেলযাত্রা হয়ে উঠেছে দুঃস্বপ্ন। ৯ ঘণ্টার পথ ১২ ঘণ্টায়! কামরায় যত্রতত্র ঘুরে-বেড়াচ্ছে আরশোলা। এসি প্রায় কাজ করে না বললেই চলে। জল নেই। শৌচাগারের অবস্থা এতটাই শোচনীয় যে যাত্রীরা যাওয়ার সাহস করেন না! চারিদিকে ছড়িয়ে আবর্জনা। এমন ভয়ঙ্কর ঘটনার সাক্ষী থাকলেন পুরী-শালিমার ধৌলি এক্সপ্রেসের যাত্রীরা। এই ট্রেনের যেন এটাই বৈশিষ্ট্য হয়ে উঠেছে। সকাল ১০-২০-তে ধৌলি এক্সপ্রেস পুরী থেকে ছাড়ে। শিডিউল অনুযায়ী শালিমার স্টেশনে ঢোকার কথা সন্ধে ৭-২০-তে। কিন্তু এক মাসেরও বেশি সময় ধরে এই দেরি চলছে। এখানেই শেষ নয়, রেলের হেল্পলাইন ১৩৯ নম্বরে ফোন করেও হতাশ যাত্রীরা। কোনও রকম পরিষেবা মেলে না বলে অভিযোগ তাঁদের। আপনার সমস্যা এক্ষুনি নথিভুক্ত করা হচ্ছে বলে ফোনের ওপার থেকে বলা হলেও আসলে কাজের কাজ কিছু হয় না।
আরও পড়ুন-যখন মানুষের সঙ্গে মনের মিল, ভাষা আর বাধা নয়, বহিরাগত নিয়ে পাল্টা ইউসুফের
বৃহস্পতিবার পুরী থেকে ফেরার পথে নাকাল যাত্রীরা একের পর ক্ষোভ উগরে দিলেন রেলের বিরুদ্ধে। প্রশ্ন উঠল, এটাই কি তবে অচ্ছে দিনের নমুনা? এরপরও কি বিজেপি-র সরকারে থাকা উচিত? সপরিবারে পুরি থেকে ফিরছিলেন নীলিমা সরকার। সাঁতরাগাছিতে তাঁরা নামবেন। মাঝখানে ট্রেন দাঁড়িয়ে গেল। ১ ঘণ্টা পার। ট্রেন ছাড়ার নাম নেই। নীলিমাদেবীর কোলে তাঁর দেড় বছরের নাতি। অস্থির হয়ে শিশুটি কান্নাকাটি শুরু করেছে। কর্মস্থল ভদ্রক থেকে ফিরছিলেন বিবেক হালদার। সময় পেরিয়ে যাচ্ছে দেখে তাঁর বাড়ি থেকে একের পর এক ফোন। ৮টা বাজলেও ট্রেন ছাড়ার নাম নেই। এরপর কোনওক্রমে সাঁতারাগাছি পৌঁছলেও শালিমার ঢোকার মুখে একেবারে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য দাঁড়িয়ে পড়ে ধৌলি এক্সপ্রেস। শালিমার পৌঁছয় রাত সাড়ে দশটায়। সবমিলিয়ে ৩ ঘণ্টা দেরিতে। ট্রেন থেকে নামার সময় কটক থেকে ওঠা বিষ্ণু সরকার বলেন, শুধু ধৌলি এক্সপ্রেসে নয়, বেশিরভাগ দূরপাল্লার ট্রেনেই একই সমস্যা। বন্দে ভারত নিয়ে গলাবাজি করলেও অন্যান্য ট্রেনের হাল বেহাল। তবে কি ভাল পরিষেবা পেতে দামি ট্রেনেই সফর করতে হবে? প্রশ্ন তুলছেন যাত্রীরা।