প্রতিবেদন : প্রথমে জার্মানি, তারপর দু’দফায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবাদ। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে গ্রেফতারের পর লোকসভা ভোটের মুখে ভারতের গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি নিয়ে পশ্চিম দুনিয়া সংশয় প্রকাশ করেছে ইতিমধ্যেই। তাৎপর্যপূর্ণভাবে এবার আসরে নামল রাষ্ট্রসংঘ। বৃহস্পতিবার রাতে রাষ্ট্রসংঘের (United Nations) সেক্রেটারি জেনারেল অ্যান্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিকও জানান, তাঁদের আশা, ভোটের সময় অন্য দেশের মতো ভারতেও রাজনৈতিক ও নাগরিক সমাজের প্রত্যেকের অধিকার এমনভাবে সুরক্ষিত থাকবে, যাতে সবাই সুষ্ঠুভাবে এবং মুক্তমনে ভোট দিতে পারেন। কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার এবং তাঁকে হেফাজতে রাখা নিয়ে আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় যে প্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে, দিল্লিকে তা বিব্রত করছে নিঃসন্দেহে। তবে কূটনৈতিক পর্যায়ে তার জবাবও দেওয়া হচ্ছে। বিদেশমন্ত্রক দিল্লিতে নিযুক্ত জার্মানি ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের শীর্ষ কূটনীতিকদের ডেকে এ ধরনের মন্তব্যে তীব্র আপত্তি জানিয়েছে। তবুও থেমে থাকেনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দ্বিতীয়বারও তারা এ বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে। সঙ্গে মন্তব্যও। তাদের সঙ্গে এবার যুক্ত হল রাষ্ট্রসংঘও। রাষ্ট্রসংঘের (United Nations) সদর দফতরে সাংবাদিক বৈঠকে স্টিফেন ডুজারিককে কেজরিওয়ালের গ্রেফতারের বিষয়ে প্রশ্ন করার পাশাপাশি কংগ্রেসের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট জব্দ করার বিষয়টিও উত্থাপন করা হয়। বলা হয়, ভোটের ঠিক আগে কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার করা হয়েছে, কংগ্রেসের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই নাগরিক অধিকার আন্দোলনকর্মীরা মনে করছেন, এভাবে বিরোধীদের দমন করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতি জাতিসংঘ কীভাবে দেখছে? স্টিফেন ডুজারিক প্রশ্নটির উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যেতে পারতেন। এটি একটি দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে মন্তব্য করতে পারতেন। এ-বিষয়ে কোনও বিদেশির মন্তব্য ভারতের কাছে যে ‘অনভিপ্রেত ও অবাঞ্ছিত’, তা বুঝে প্রশ্নটি তিনি অগ্রাহ্য করতে পারতেন। কিন্তু তা না করে তিনি মুক্তমনে ভোট দেওয়া এবং রাজনৈতিক ও নাগরিক সমাজের অধিকার সুরক্ষিত রাখার পক্ষে কার্যত সওয়াল করলেন। আশাপ্রকাশও করলেন। ভারতের পক্ষে তা নিঃসন্দেহে গভীর অস্বস্তির কারণ। এবং গেরুয়া শিবিরকে বিব্রত করার পক্ষেও যথেষ্ট।